প্রধানমন্ত্রীর কাছে বীরমুক্তিযোদ্ধা জয়নালের স্ত্রী সন্তানের আকুতি
দৈনিক জামালপুর
প্রকাশিত: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১

২৫শে মার্চ ১৯৭১। রাজারবাগ পুলিশ লাইন।অসহযোগ আন্দোলন চরমে। ডিউটিরত এবং বিশ্রামে যত সিপাহী ছিল তাদের মাঝে একই আলোচনা যে কোন সময় পাক সেনারা বাঙালীদের উপর আক্রমন করতে পারে। শেখ মুজিবের প্রতিটি নির্দেশ সবার নজরে। সব জল্পনার অবসান করে ২৫ মার্চের সেই কালোরাতে পাক সেনারা কোন ঘোষণা ছাড়াই আক্রমন করে রাজারবাগ পিলখানা,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থানে। সিপাহী জয়নাল আবেদীন সেদিন রাজারবাগ পুলিশ লাইনে কর্মরত ছিলেন। তাঁর বিপি নম্বর ৯৫১ ।
দেশপ্রেমী জয়নাল আবেদীন সাথীদের নিয়ে পাক সেনাদের বিরুদ্ধে নেমে পড়েন যুদ্ধে। কিন্তু পাকসেনাদের ভারী অস্ত্রের মুখে সাধারণ রাইফেল দিয়ে প্রতিরোধ দীর্ঘায়িত করতে পারেনি তারা। বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করতে করতেই রাজারবাগ পুলিশ লাইনের অবস্থান ছেড়ে তারা বাইরে এসে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে থাকেন। ওই যুদ্ধে অনেক সিপাহী নিহত হলেও বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন জীবনে বেচেঁ যান। কিন্তু সেদিনের সে যুদ্ধে সাথীদের হারানোর কষ্ট আর পাক সেনাদের বোমার বিকট শব্দ আর নিষ্ঠুরতা তাকে স্তব্দ করে দেয়। ওই রাতে বীরমুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন একটি বাসায় আশ্রয় নেন। পরে তাদের দেয়া লুঙ্গি শার্ট পড়ে আর কিছু টাকা নিয়ে পায়ে হেটে গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার বাসাইল (বর্তমান সখীপুর) থানার যাদবপুর গ্রামে পৌঁছেন। পরিবারের লোকজন হঠাৎ করে এমন পোষাকে জয়নাল আবেদীনকে দেখে সেদিন অবাক হয়েছিল। বিষন্ন জয়নাল চুপচাপ থাকতেন। বাড়ি থেকে বেড় হতেন না। কেন তার এ পরিবর্ত ? কেন তার মধ্যে এমন বিষন্নতা ? অনেক প্রশ্নের মুখে সে সপ্তাহ খানেক পড়ে জানালেন ওই যুদ্ধের রাত্রে ভারী গুলাগুলি আর সাথী হারানোর যন্ত্রনাই তার মানষিকভাবে ভেঙে পরার কারন। এরপর থেকে তিনি মানষিক এবং শারীরিকভাবে ভেঙে পড়তে থাকেন।
সিপাহী জয়নালের পারিবার সূত্রে জানা যায়, টাঙ্গাইল জেলার বাসাইল ( বর্তমান সখীপুর) থানার যাদবপুর গ্রামের নিন্ম মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তান ছিলেন জয়নাল আবেদীন। বাবার নাম মনির উদ্দিন সিকদার। গ্রামের স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে হাইস্কুলে ভর্তি হন। প্রতিদিন যেতে হতো বাড়ি থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার পায়ে হেটে আর বর্ষা মৌসুমে নৌকায়। এসব প্রতিকুলতা আর পরিবারিক অর্থাভাবে লেখাপড়া বেশিদূর এগুতে পারেননি তিনি। গঠনে সুঠামদেহী দীর্ঘ আকৃতির ছিল জয়নাল আবেদীন। একদিন পুলিশে লোক নেওয়ার খরব পেয়ে লাইনে দাড়ান তিনি। তার সুঠামদেহ আর লম্বায় নির্বাচকদের নজরে পড়লে তিনি নির্বাচিত হন। চলে যান সারদার ট্রেনিং সেন্টারে।
সারদার ট্রেনিং শেষে রাজারবাগ পুলিশ লাইনে কর্মরত জয়নাল আর যুদ্ধ ফেরত জয়নালের মাঝে বিরাট পার্থক্য। মানষিক অবসাদ থেকে তার শরীরে একের পর এক অসুখ বাসা বাধে। স্ত্রী সন্তান পিতা-মাতা নিয়ে অভাবের সংসার। সারাদিন বাড়ির সামনে আম গাছের নীচে বসে থাকত আর কি যেন ভাবত। জমিজমা বিক্রি করে তার চিকিৎসা করালেও ফল শুভ হয়নি। বীরমুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন জীবিত থেকেও যেন মৃত প্রায়। নিজের অধিকারের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে সে আরো নিস্ব হয়ে পড়ে।
পরিবারের অনুরোধে ১৯৭২ সালের কোন এক সময় গিয়েছিল সে রাজারবাগ পুলিশ লাইনে চাকুরীতে যোগদান করতে। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস। সেখান থেকে তাকে বলা হয়েছিল জয়নাল আবেদীন যুদ্ধে নিহত হয়েছে। তার ফাইল ক্লোজ (বন্ধ) করা হয়েছে। পূণরায় চাকুরীতে যোগ দেওয়া প্রশ্নই ওঠেনা। হায়রে নিয়তি যে বীরমুক্তিযোদ্ধা দেশ স্বাধীনের জন্য জীবনের সব হারালো সেই স্বাধীন দেশে নিজে জীবিত থেকেও তার মৃত ঘোষণা নিয়ে বিদায় নিতে হল। ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বাড়ি ফিরলেন। অনাহারে অর্ধাহারে আর চিকিৎসার অভাবে এই বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন ২০০০ সালে ২০ অক্টোবর মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। তার মৃত্যুতে সংসারের সকল দায়িত্ব পড়ে স্ত্রীর উপর। জমি বিক্রি আগেই শেষ। সন্তানদের তিন বেলা দুমুঠো খাবার তুলে দিতে না পেরে স্ত্রীও ভেঙে পড়েন। অনাহারে অর্ধাহারে চলে সংসার। কোন উপায়ন্তর না দেখে তার স্ত্রী স্বামীর মৃত্যু সনদ নিয়ে ২০০১ সালে পেনশনের টাকা চাইতে আবারো রাজারবাগ পুলিশ লাইনে যান । সে আনুমানিক ৬ বৎসর পুলিশ বাহিনীতে কর্মরত ছিল। মো. জয়নাল আবেদীন, পুলিশ সদর দপ্তর স্বারকনং কল্যাণ ৪৮-৯৩/১৯২/১৯(১০) তারিখ ০১/০২/৯৩ এবং স্বারক নং কল্যাণ ৪৭-৯৩/১৯১/ ১/(৮) তারিখ ০১/০২/৯৩ প্রাক্তন কং (নিহত) ৯৫১।
স্বামীর কর্মজীবনের স্মৃতি বিজরিত স্থান স্বচক্ষে দেখতে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। কিন্তু সেখানে তাকে শুনতে হয় আরেক নিষ্ঠুর বাক্য। ওই অফিস থেকে জানানো হয় সিপাহী জয়নাল আবেদীনের চাকুরীর সব পাওনা তুলে নেওয়া হয়েছে। কি বিচিত্র এ দেশ। জীবিত জয়নালকে মৃত বলা, আবার তারই পেনশনের টাকা তুলে নেন অন্য কেউ। অনেকটা বাকরুদ্ধ হয়েই বাড়ি ফিরেন স্ত্রী।
এ ব্যাপারে যাদবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম আতিকুর রহমানসহ অনেকে রাজারবাগ পুলিশ লাইনে তদবির করেও এর সুরাহা করতে পারেনি।
বীরমুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী সুফিয়া বেগম বলেন, জীবিত থেকে আমার স্বামী তার অধিকার নিয়ে কথা বলতে পারেননি। তার স্ত্রী সন্তান অর্থাভাবে জীবন যুদ্ধে পরাস্থ, অধিকার বঞ্চিত। বাঙালী জাতীর পিতা বঙবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা এখন দেশের প্রধানমন্ত্রী। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অনেক কিছুই করছেন।
তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার এবং আমার পরিবারের একটাই দাবী বাংলাদেশের জন্য সর্ব প্রথম অস্ত্রহাতে যুদ্ধে যাওয়া সেই সিপাহী জয়নাল আবেদীনকে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তভূক্ত করে তার আত্মার শান্তি দিতে। পরিবার পরিজন নিয়ে সমাজে মাথা উচু করে বাঁচতে।
এ ব্যাপারে ওই গ্রামের আরেক বীরমুক্তিযোদ্ধা আবদুল করিম মিঞা বলেন, “জয়নাল আবেদীন একজন সরল মানুষ ছিলেন। ২৫শে মার্চ পাক সরকারের চাকরীর মায়া ছেড়ে বাংলাদেশের পক্ষ নিয়ে মিলিটারী বাহিনীর সাথে সর্ব প্রথম যুদ্ধ করেছেন জয়নাল। পুলিশে চাকরী করার জন্য পেনশন, রেশন ও অন্যান্য সুযোগ অবশ্যই তার পাওয়া উচিত। মানসিকভাবে বিপর্যয়ের (PTSD) কারনে সে দুনিয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিল। সমাজ, পুলিশ বাহিনী, জাতীয় মুক্তিযোদ্বা কাউন্সিল কেউ তার সাহায্যে এগিয়ে আসেনি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসলে, বীরমুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীনের বন্চিত স্ত্রী সকল সুবিধা পাবে বলে আমার বিশ্বাস। “ জয়নালের স্ত্রীর চোখের পানি শুকিয়ে গেছে। অর্থাভাবে জীবন অচল।অধিকার আদায় করার ক্ষমতা তার নেই। সমাজের , রাস্ট্রের সুবিচার পাবে এটাই একমাত্র ভরসা।

- জামালপুরে পুলিশ সুপার দেলোয়ার হোসেনকে বিদায় সংবর্ধনা
- রৌমারীতে চেয়ারম্যানের মৃত্যু
- গাইবান্ধা জেলা বার এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ্যাড-লাছু
- ঘাটাইল হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অধীর
- সখীপুরে কামারশালায় ছেলের সহযোগী ৭০ বছর বয়সী মা!
- অবহেলিত জামালপুর এখন আধুনিক জামালপুর: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
- বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী
- ৪ লেন হচ্ছে কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহাসড়ক
- ’২২ সালে বাংলাদেশ জাপান নতুন অধ্যায় রচিত হবে :পররাষ্ট্র সচিব
- বাংলাদেশে বেভারেজ পণ্য উৎপাদন করবে শ্রীলঙ্কা ও ডেনমার্ক
- জলবায়ু পরিবর্তনে এক সাথে কাজ করবে বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ড
- দেশের হাইটেক পার্কে আশার ঝলক
- প্রকল্পের সুফলকৃষকের কাছে পৌঁছাতে হবে: কৃষিমন্ত্রী
- সুখবরের অপেক্ষায় বাংলাদেশ, বের হতে পারে এলডিসি থেকে
- বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাচ্ছে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা
- বীমার আওতায় আসছেন দেশের দেড় লাখ শ্রমিক
- দেওয়ানগঞ্জ পৌর নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা
- সিলেটে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৮, আহত অর্ধশতাধিক
- ৭ মার্চ পালন করবে বিএনপি ভাঙবে গণহত্যা দিবসের নীরবতাও
- আগামীকাল প্রথম জাতীয় পরিসংখ্যান দিবস উদযাপন
- কর্মসংস্থান সৃষ্টিই বাংলাদেশ সরকারের লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী
- দেশের রেল খাতে ১২ হাজার লোক নিয়োগ দেয়া হবে: রেলমন্ত্রী
- দেশে করোনার টিকাগ্রহীতার সংখ্যা সাড়ে ২৮ লাখ ছাড়াল
- বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা শান্তিপ্রিয় : প্রধানমন্ত্রী
- ২৬ মার্চ থেকে ঢাকা-জলপাইগুড়ি যাত্রীবাহী ট্রেন চালু
- সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
- সমালোচনা করেও বিএনপির নেতারা করোনার টিকা নিচ্ছেন : তথ্যমন্ত্রী
- ‘বিশ্ব সেরা তিন রাষ্ট্রপ্রধানের একজন শেখ হাসিনা’
- জমে উঠেছে দেওয়ানগঞ্জ পৌর নির্বাচন
- একুশে পদক পাওয়ায় গোপালপুরে ফজলুল রহমান খান ফারুককে গণসংবর্ধনা
- বাংলাদেশ নিয়ে ষড়যন্ত্রকারী ডেভিড বার্গম্যান, যা জানা জরুরি
- স্যার আপনি আমাকে ক্ষমা করবেন: শেখ হাসিনা
- নিউইয়র্কের সিটি কাউন্সিল নির্বাচনে চার বাংলাদেশি
- ইসলামপুরে ফুপুর হাত-পা ভেঙ্গে দেওয়ায়॥ ভাতিজাসহ আটক দুই
- বাংলাদেশের কাছে টিকা চাচ্ছে হাঙ্গেরি-বলিভিয়া
- অ্যান্টিবায়োটিকের যত্রতত্র ব্যবহার বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর ৬প্রস্তাব
- বিভাগীয় শ্রেষ্ঠ জয়িতা সম্মাননা পেলেন সরিষাবাড়ির রেজিয়া রহমান
- যথার্থ যাচাই না হওয়ায় খরচ বৃদ্ধি: ফাইল তলব প্রধানমন্ত্রীর
- ইসলামপুরে ঐতিহ্যবাহী কাশাঁ শিল্পের প্রসারে ই-কমার্স ওয়েবসাইট
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখবে পেঁয়াজের রস, যেভাবে ব্যবহার করবেন!
- দুঃখ প্রকাশ করে শফিকুল ইসলাম শাকিবের চিঠি
- শেখ হাসিনার নির্দেশনায় যুবলীগকে এগিয়ে যেতে হবে: নানক
- প্রধানমন্ত্রীর কূটনৈতিক সফলতা হলো করোনার টিকা : মির্জা আজম
- অবকাঠামো উন্নয়নে পাল্টে গেছে ইসলামপুরের গ্রামীণ চিত্র
- ঘাটাইলে পৌঁছালো ১৩ হাজার ৯১০ ডোজ করোনার টিকা
- আজ শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হকের ৫২ মৃত্যুবার্ষিকী
- জাতিসংঘের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাংলাদেশ সেনা প্রধানের বৈঠক
- করোনার প্রণোদনা পাচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্ত ৪ লাখ ৮৫ হাজার খামারি
- জামালপুরে এসেছে ৭২ হাজার ডোজ করোনার ভ্যাকসিন
- সারাদেশে দৃষ্টিনন্দন ৫৬০ মডেল মসজিদ, বছরে ১৪ হাজার হাফেজ
