• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

সরকারি প্রণোদনায় ছাড়িয়ে গেছে সরিষার লক্ষ্যমাত্রা

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ৪ জানুয়ারি ২০২৩  

ধান চালের জন্য বিখ্যাত উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা নওগাঁয় এ বছর সরিষার আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। লক্ষ্যমাত্রার চায়ে ৩৮ শতাংশ বা ১১ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ বেড়েছে।
দেশের ভোজ্য তেলের সংকট কাটাতে সরকার সরিষা চাষে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। সরিষা চাষের জন্য উৎসাহ যোগাতে কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের ব্যাপক প্রণোদনা দিয়েছে। সরিষা চাষে প্রণোদনা হিসেবে ২৮ হাজার ২০০ জনকে ২৮ হাজার ২০০ বিঘায় বীজ ১ কেজি, ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার দেওয়া হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে প্রাপ্ত তথ্য সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলার ১১টি উপজেলায় ৪৭ হাজার ৮শ’ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। আর এ বছর কৃষি অফিসের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৩৬ হাজার ২৫০ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৮ শতাংশ বা ১১ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ বেশি হয়েছে। হেক্টরপ্রতি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭২ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন উৎপাদন।

উপজেলাভিত্তিক সরিষার আবাদ হয়েছে, নওগাঁ সদর উপজেলায় ২৬২০ হেক্টর, রাণীনগর ৬৬৬৫ হেক্টর, আত্রাই ৩০১০ হেক্টর, মান্দা ৬৩০০ হেক্টর, মহাদেবপুর ২৬৯০ হেক্টর, বদলগাছী ১২৬০হেক্টর নিয়ামতপুর ৫৫৫০ হেক্টর, ধামইরহাট ৩৩৫৫ হেক্টর, পত্নীতলা ৬৩৫০ হেক্টর, সাপাহার ৫৫৯০ হেক্টর এবং পোরশা উপজেলায় ৪৪১০ হেক্টর আবাদ হয়েছে।

আত্রাই উপজেলার বান্দাইখাড়া গ্রামের নাঈম সরদার বলেন, আমি চলতি মৌসুমে প্রায় ৩ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছি। কোনো প্রকার দুর্যোগ ও রোগবালাই না থাকায় এ বছর সরিষার বাম্পার ফলন পাবো বলে আমি আশাবাদী।

সরিষার ফসল একটি উপকারী আবাদ বলে তিনি আরো বলেন, আগে আমন ধান কাটার পরে এই জমিগুলো দুই -তিন মাস পরে থাকতো। গত কয়েক বছর ধরে এই সময় সরিষার আবাদ করছি এতে করে আমরা আলাদা একটি ফসল পাচ্ছি। যা থেকে আমরা অতিরিক্ত কিছু উপার্জনও করতে পারছি। সরিষার আবাদ করে আমাদের সবচেয়ে বড় উপকার হলো, ইরি-বোরো ধানের আবাদের সময় সার খরচ কমে আসে এবং হাল-মই খরচ করতে হয় না।

সদর উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়ানের তাজনগর গ্রামের সরিষা চাষি মিলন বলেন, আমি সরিষার আবাদ করেছি এক বিঘা মাটিতে। এক বিঘা মাটিতে সরিষার আবাদ করতে খরচ আসে। সার, হাল-মই, এবং তিনবার কীটনাশকসহ সব প্রায় ৪ হাজার টাকার মতো। আর সেখানে ভালো ফলন হলে ৫ থেকে ৬ মণের মতো সরিষা পাওয়া যাবে। গত বছর আমি ৩ হাজার থেকে ৩৫শ’ টাকা পর্যন্ত সরিষা বিক্রি করেছি। সরিষা বিক্রির টাকা দিয়ে ইরি-বোরোর আবাদ ঘরে উঠানো যায়।

তিনি আরো বলেন, এখন পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো আছে ভরসা করা যায়। আল্লাহ দিলে এবারও আবাদ ভালো হবে। আশা করা যাচ্ছে এবার সরিষার আবাদ ভালো হবে আর বাজারে সরিষার দামও ভালো পাওয়া যাবে।

নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. আবু হোসেন বলেন, সরিষা আবাদ করার জন্য কৃষকদের শুরু থেকে উৎসাহিত করা হয়েছে। আমরা আশা করছি কৃষকরা অনেক লাভবান হবেন। এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত সরিষার আবাদ হয়েছে। ভবিষ্যতের আমাদের তেল আমদানি নির্ভরতা অনেকাংশে কমে আসবে।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর