• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

আলোকসজ্জা হবে বঙ্গবন্ধু সেতু ও মোক্তারপুর সেতুতেও

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ২১ জুন ২০২২  

পদ্মা সেতুকে নান্দনিক লাইটিংয়ের মাধ্যমে দিনের মতো রাতেও আলোকিত রাখা হবে— চলছে এমন প্রস্তুতি। শুধু পদ্মাই নয়, এর উদ্বোধন উপলক্ষে দেশের অপর দুই বড় সেতু যমুনা নদীতে বঙ্গবন্ধু সেতু এবং মুন্সীগঞ্জে ধলেশ্বরী নদীতে নির্মিত মুক্তারপুর সেতুতেও আলোকসজ্জা করার উদ্যোগ দিয়েছে সরকার। এ জন্য দরপত্র আহবান করেছে সেতু বিভাগ।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।


সূত্র জানায়, আগামী ২৫ জুন (শনিবার) পদ্মা সেতু চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। এ উপলক্ষে ওই দিন বঙ্গবন্ধু সেতু ও মুক্তারপুর সেতুতেও আলোকসজ্জা করা হবে। এর জন্য বাংলাদেশের বেসরকারি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দরপত্র আহবান করেছে সেতু বিভাগ।

সেতু বিভাগের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. ওয়াহিদুজ্জামান সই করা দরপত্রে বলা হয়েছে, বঙ্গবন্ধু সেতু ও মুক্তারপুর সেতুকে আলোসজ্জিত করার জন্য আগ্রহী বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানকে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত প্যাডে দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী আর্থিক প্রস্তাব সাবমিট করতে হবে। কেমন ডিজাইনে সেতু দুটি আলোজসজ্জিত হবে তা সেতু বিভাগের নিজস্ব দফতর থেকে জানতে হবে। সেতু বিভাগের প্রস্তাব মতো নির্দিষ্ট ডিজাইনে বঙ্গবন্ধু সেতু ও মুক্তারপুর সেতু আলোকসজ্জিত করতে হবে ২৪ জুনের মধ্যে। যা ২৫ জুনের পরেও তিনদিন থাকবে। বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাব ২১ জুনের মধ্যে সেতু বিভাগের নির্দিষ্ট ফ্যাক্স ও মেইল পাঠাতে হবে। দেশে প্রচলিত ভ্যাট-ট্যাক্স বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকেই পরিশোধ করতে হবে বলে দরপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।      

এদিকে, পদ্মা সেতুতে করা আলোকসজ্জা শুধু পদ্মাপারের মানুষকেই নয়, আকৃষ্ট করবে পর্যটকদেরও। একইভাবে আকর্ষণীয় করে সাজানো হবে বঙ্গবন্ধু সেতু এবং মুক্তারপুর সেতুকেও। পদ্মা সেতুর নানা বৈচিত্র্যের অন্যতম আকর্ষণ এই আলোকসজ্জা। তবে আর্কিটেকচারাল লাইটিংয়ের কাজ জুনে সড়কপথ উদ্বোধনের পরই শুরু হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে আকর্ষণীয় করতে রাজধানী ঢাকাকেও আলোকসজ্জিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। বিভিন্ন জেলাশহর থেকেও এ সংক্রান্ত খবর আসছে। ইতোমধ্যে রাজধানীর অদূরে ফরিদপুর থেকেও এ বিষয়ক সংবাদ পাওয়া গেছে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এবং ফরিদপুর জেলা প্রশাসন এ বিষয়ে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে। ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। 

এদিকে পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পদ্মা সেতুতে দুবাইয়ের বুর্জ আল খলিফার মতো করে আলোকসজ্জা করা হবে। বিশেষ করে দিনেও আলোক সজ্জায় বিমোহিত করার পরিকল্পনা রয়েছে। রঙ-বেরঙের দ্যুতি ছড়াবে অবকাঠামো বা স্ট্রাকচারগুলোর মধ্য থেকেই। আর্কিটেকচারাল লাইটিং নামে পরিচিত এই লাইটিং সেট করার সব ব্যবস্থা রেখেই পদ্মা সেতুর অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। পুরো সেতুর অবকাঠামো শেষ হবার পরই লাইটগুলো স্থাপন করা হবে।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে,  জাঁকজমকপূর্ণ পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী উৎসব আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। শহরের প্রধান সড়কের বিভিন্নস্থানে স্থাপন করা হয়েছে সুদৃশ্য তোরণ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে স্মরণীয় করে রাখতে ২৫ জুন ও ২৬ জুন পালন করা হবে নানা কর্মসূচি।

সূত্র জানিয়েছে, ওইদিন সকালে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের করা হবে শহরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড় থেকে। বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে র‌্যালিটি ফরিদপুরের শেখ জামাল স্টেডিয়ামে সমবেত হবে। এখানে সকলে মিলে সরাসরি সম্প্রচার করা পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শুনবেন। ফরিদপুরের স্টেডিয়ামে এ জন্য পদ্মা সেতুর একটি বড় রেপ্লিকা তৈরি করা হবে।

এ প্রসঙ্গে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে ফরিদপুরকে বর্ণিলভাবে সাজানো হয়েছে। ফরিদপুরের সরকারি-বেসরকারি স্বায়ত্তশাসিত ও ব্যক্তিমালিকানাধীন ভবনগুলো আলোকসজ্জা করে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। ঐতিহাসিক এই দিনটিকে বরণ করে আমরা স্মরণীয় করে রাখতে চাই।

উল্লেখ্য, আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতু চালু হচ্ছে। ওই দিন সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাওয়ায় উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করবেন এবং সুধী সমাবেশে যোগ দেবেন। এরপর তিনি টোল দিয়ে সেতু পার হবেন। তিনি জাজিরায় আবার ফলক উন্মোচন করবেন। এরপর বিকালে মাদারীপুরের শিবচরে জনসভায় অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর