এই নদী তুমি
দৈনিক জামালপুর
প্রকাশিত: ৩০ মার্চ ২০২১
খুব ছোটবেলায় একবার আত্মীয়স্বজন সবাই মিলে গ্রামে গিয়েছিলাম আমরা। নিজেদের গ্রামে না। কাছাকাছি একটা গ্রামে। খাবারদাবার সাথে নিয়ে পিকনিকের মতো। সে গ্রামের পাশে একটা নদী ছিল। যদিও সবাই বলছিল ওটা একটা খাল। কিন্তু আমার কাছে ওটা নদীই ছিল। ছোটছোট মাটির ঘর, পাশ দিয়ে একটা নদী৷ ঠিক যেন ছবি আঁকার খাতায় আঁকা একটা গ্রামের দৃশ্য। আমার মনের ভিতর দৃশ্যটা চিরস্থায়ী হয়ে গেল।
নদীর (বা খালের) পাড়ের বাড়িগুলো বেশ উঁচুতে। বাড়ির সামনে ঢালু হয়ে তারপর নদী। একটা বাড়ির উঠানে উঁচু একটা ঢিবির উপর দাঁড়িয়ে আমার এক দুলাভাই গান গাচ্ছিলেন, 'আমার হীরামন পাখি, ও আমার হীরামন পাখি'! আমি তখন বেশ ছোট, স্কুলেও যাই না৷ কিন্তু সেই গান আর গানের সুর এখনও স্পষ্ট মনে করতে পারি।
কি যে উথালপাতাল বাতাস ছিল সেদিন। অথবা হয়তো নদীর পাশে এমন বাতাস সবসময়ই থাকে। রোদে শরীর চিড়বিড় করে ওঠে, আবার পরক্ষণেই শীতল বাতাস এসে শরীর জুড়িয়ে দেয়। সেদিন বিকেলের দিকে ঘুরে ফিরে আমরা বাসায় ফিরে এলাম৷ কিন্তু আমার সাথে সাথে চলে এলো নদীটা। কিছুদিন পরপরই আমার নদী দেখতে ইচ্ছা হয়। দৌড়ে ছাদে চলে যাই আমি, যাতে করে পানি ছুঁয়ে আসা বাতাস এসে স্পর্শ করে আমাকে। কিন্তু শহরের ভিতর নদী কই যে তাকে বাতাস ছোঁবে? নদী আর আমার দেখা হয় না।
আরেকটু বড় হওয়ার পর একটা খুব সাধারণ প্রশ্ন শোনা শুরু করলাম, 'বড় হয়ে কি হবে তুমি?' বন্ধু বান্ধবীরা সবাই বলে ডাক্তার হবে, ইঞ্জিনিয়ার হবে। আমিও সেটাই বলি। কিন্তু আমার মনে তখন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতার পংক্তি ঘোরাফেরা করে,
'মা, যদি হও রাজি
বড় হলে আমি হব খেয়াঘাটের মাঝি'।
আমার এই নদীটার গল্প করতাম আমি আমার বন্ধু বান্ধবীদের সাথেও। ওরা ব্যাপারটা ঠিক বুঝতো না যে পানি আমাকে এত কেন টানে? আমার এক বন্ধুকে যখনই জিজ্ঞেস করতাম, 'বড় হয়ে কি হবি?' সে উত্তর দিতো, 'আমি তোর নদী হবো'।
মন খারাপ হলে কিংবা মন খুব ভালো হলে আমার মনটা সেই নদীর কাছে চলে যায়। এরমাঝে আমি বেশ কিছু নদী দেখেছি, কিন্তু ছোটবেলার নদীটার মত কোনটা না। পানি আমার অসম্ভব ভালো লাগে। কোন ছবিতে নদী বা ঝর্না দেখলে আমি বারবার দেখতেই থাকি। দৃশ্যটা মুখস্থ করে নেই। নিজে ভালো ছবি আঁকতে পারি না। তাই চোখ বন্ধ করে কল্পনা করি। আমার সেই বন্ধুটা খুব ভালো ছবি আঁকে। সে নিয়ম করে আমাকে পানির ছবি এঁকে দেয়।
আমাদের বাড়িটা খুব খোলামেলা। আলো বাতাস ভর্তি। দক্ষিণের ঘরটায় বসলে বাতাস উড়িয়ে নিয়ে যায়। আমি পড়ার টেবিলে পাতিয়ে ওই রুমটায় পড়ালেখা করি। একেকবার বাতাস আসে আমার মনে হয় ওই তো, ওইদিকে একটা নদী আছে। সেই বাতাস। পানির ঘ্রাণ আমি আলাদা করে বুঝতে পারি। আকাশ দেখে বুঝি আজ বৃষ্টি হবে নাকি মেঘগুলো উড়ে চলে যাবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় আমি জীবনে প্রথম সমুদ্র দেখলাম। কোন কিছু এত বিশাল এত সুন্দর এত বিস্ময়কর হতে পারে আমার ধারণা ছিল না। আন্দামানের এই সমুদ্রের অসহ্য সৌন্দর্য দেখে আমার চোখে পানি আসলো। সমুদ্রের পাড়ে বা নদীর পাড়ে থাকার ইচ্ছা এমন প্রবল হলো যা বলার না। ইচ্ছে হলো ছুটি শেষে আর না ফিরি। এখানেই থেকে যাই। জেলে হয়ে বা প্যারাসেইলিং এর ইন্সট্রাক্টর হয়ে। কিন্তু ক্রমেই ছুটি শেষ হলো, আর আমারও ফেরা লাগলো। কিন্তু মনে পড়ে আছে সেই আন্দামান সী-তে। বাড়িতে অনেক কষ্টে অনুমতি আদায় করে একাই গিয়েছিলাম ঘুরতে। তাই প্রিয় কারও সাথে আনন্দ ঠিকমতো ভাগ না করতে পারায় মনের কোণে একটু আফসোস থেকে গেলো।
এরপর অনেক অনেক দিন আমার আর সমুদ্র দেখা হয়নি। নদীও না। লেখাপড়া আর চাকরির মাঝে এত ব্যস্ত হয়ে গেলাম যে নদী আর সমুদ্র থেকে অনেক দূরে সরে এসেছি। তাই মাঝে মাঝে ছোটবেলার সেই নদীটা বের করি স্মৃতি থেকে। কেন যেন আমার অধরাই থেকে গেল আজীবন নদীটা।
একদিন ছাদে দাঁড়িয়ে ছিলাম৷ সেই বন্ধুটাও সাথে ছিল। মেঘ করে এসেছে আকাশের কোণে। পানির গন্ধ পাচ্ছি। মনটা ভালো, বেশ ভালো। বৃষ্টি শুরু হবে যেকোন সময়ে।
চট করে এক ফোটা পানি পড়লো। ঠিক সেই মুহূর্তে আমার বন্ধুটা আমার হাত ধরলো। আমি চমকে উঠলেও কিছু বললাম না। কিছুক্ষণের ভিতর মুষলধারে বৃষ্টি পড়তে লাগলো। আমি ভিজে যাচ্ছি। এতদিনের নদীটা যেন দেখতে পাচ্ছি। এতদিন পর যেন ধরতে পারছি। এতদিনে নদীটা যেন আমার হলো।
লেখক
সোহানা রহমান
২৬/০৫/২০২০
- জামালপুরে ১৭টি মোবাইল সেট উদ্ধার
- রৌমারী উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করছে সিআইডি
- যশোরের খেজুরের গুড়সহ নতুন ১৪ পণ্য পেল জিআই সনদ
- এভিয়েশন শিল্পের উন্নয়নে সহযোগিতা করতে চায় যুক্তরাজ্য
- বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস আজ
- হজযাত্রীদের সহযোগীতার আশ্বাস সৌদির
- ব্যাংক একীভূত হলেও আমানত সুরক্ষিত থাকবে: বাংলাদেশ ব্যাংক
- ডিজিটাল পেমেন্ট বাড়াতে সহায়তা দেবে আইএফসি
- এসএসসি পরীক্ষা হবে ৫ ঘণ্টা, ৫০% লিখিত
- হিট অ্যালার্ট আরো তিনদিন বাড়লো
- দক্ষ বিচার বিভাগ গঠনে বিশ্বমানের জুডিশিয়াল একাডেমি প্রয়োজন
- উপজেলা নির্বাচনে কোন অনিয়ম সহ্য করা হবে না: চট্টগ্রামে ইসি আনিছুর
- উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে ইউজিসি ও ব্রিটিশ কাউন্সিলের মধ্যে সভা
- নবায়নযোগ্য জ্বালানি ৪০ শতাংশে উন্নীতকরণে কাজ করছে সরকার
- চুয়েট শিক্ষার্থীদের সড়কে অবস্থান অব্যাহত, ঘাতক বাসচালক গ্রেপ্তার
- রাঙ্গামাটির সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে ছয়জন নিহত, আহত-৭
- মিয়ানমার থেকে দেশে ফিরেছে ১৭৩ বাংলাদেশি
- র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের নতুন মুখপাত্র কমান্ডার আরাফাত
- শিশু পর্নোগ্রাফির মূলহোতাসহ দু’জন গ্রেফতার
- চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নতুন চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউন
- কুমিল্লায় সূর্যমুখী চাষে কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে
- অবৈধ সম্পদ : এস কে সিনহার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন ২৬ জুন
- গরম থেকে সুরক্ষায় মুন্সীগঞ্জে পানি ও ছাতার বুথ
- লক্ষ্মীপুরে দিনব্যাপী হজ্জযাত্রীদের প্রশিক্ষণ
- গ্যাটকো মামলা : খালেদা জিয়াসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন ২৫ জুন
- আত্মসাতের মামলায় সাইমেক্স লেদারের এমডি ও তার স্ত্রী কারাগারে
- বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে মরিশাসের প্রতি আহ্বান
- চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুফল দিতে সরকার নতুন প্রযুক্তি নিয়ে আসছে
- নির্মাণাধীন ভবনে এডিস মশার লার্ভা পেলে নির্মাণ কাজ বন্ধ করা হবে
- নীলফামারীতে ‘হিটস্ট্রোক’ সচেতনতায় সেমিনার
- ইসলামপুরে গোপনে মাদরাসা ম্যানেজিং কমিটি গঠন
- ফেনী সার্কিট হাউজে উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন
- বকশীগঞ্জে এসএসসি ব্যাচ-২০০২ ফ্রেন্ডস অর্গানাইজেশন এর ইফতার মাহফিল
- ইনফিনিক্স নোট ৪০ সিরিজ: দেশের বাজারে নতুন মাত্রা
- বাড়ির সেফটি ট্যাংকে মিলল শিক্ষার্থীর লাশ
- মেলান্দহ গণহত্যা দিবসে বধ্যভূমিতে মোমবাতি প্রজ্বলন
- দেওয়ানগঞ্জে ব্লাড ফাইটার ফর হিউম্যানিটির কমিটি গঠন
- দূর্গম যমুনার চরাঞ্চলে রাজকীয় বাহন ঘোড়ার গাড়ি
- মাদারগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের মতবিনিময় সভা
- ইসলামপুরে শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
- মাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ায় শিক্ষক ছেলে গ্রেফতার
- হতশ্রী ব্যাটিং নিয়ে যা বললেন জাকির
- সোনার এত দাম অতীতে কোনোদিন হয়নি
- ক্রীড়া সংগঠক ইউসুফ আর নেই
- গোলরক্ষক ইয়ারজানকে পঞ্চগড়ে সংবর্ধনা
- গণহত্যা দিবসের আলোচনা
- জামালপুরে ব্রহ্মপুত্র সাংস্কৃতিক সংস্থার ইফতার অনুষ্ঠিত
- সরিষাবাড়ি স্কুল ছাত্র হত্যা: কিশোর গ্যাং আটক-২
- জামিনের পরও জেল খাটছেন আলভেজ
- ট্রাকের ধাক্কায় প্রাণ গেল ভটভটি চালকের