• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

দেশে সমরাস্ত্র কারখানা বাড়ানোর সুপারিশ

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ১৩ মে ২০২২  

দেশের সশস্ত্র বাহিনীর চাহিদা বাড়ায় একাধিক সমরাস্ত্র কারখানা (বিওএফ) স্থাপন প্রয়োজন। বিদ্যমান কারখানায় নতুন উৎপাদন-লাইন স্থাপন করা সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে অবিলম্বে অন্তত আরেকটি সমরাস্ত্র কারখানা প্রতিষ্ঠা করা অতি জরুরি। বহিঃশক্তি আক্রমণের ক্ষেত্রে মাত্র একটি সমরাস্ত্র কারখানা ধ্বংসের ঝুঁকি এবং একই স্থানে বিভিন্ন ধরনের বিস্ফোরক ও গোলাবারুদ কারখানা-গোডাউন থাকায় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

গত বুধবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উপস্থাপিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। বৈঠকে বাংলাদেশ সমরাস্ত্র কারখানার সার্বিক কার্যক্রম সম্পর্কে আলোচনা হয়।


 
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ সুবিদ আলী ভূঁইয়া বলেন, বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এটি নিয়ে পরিকল্পনা প্রয়োজন, বাস্তবায়নও সময় সাপেক্ষ।

জানা গেছে, ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত দেশের একমাত্র সমরাস্ত্র কারখানায় ১৮ ধরনের অস্ত্র উৎপাদিত হয়। একাধিক বিওএফ স্থাপনের প্রয়োজনীয়তার উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের সশস্ত্র বাহিনীর ক্রমবর্ধমান চাহিদা বাড়ায় বিওএফ-এ নতুন নতুন সমরাস্ত্র উৎপাদন লাইন স্থাপনের প্রয়োজন

হচ্ছে। কিন্তু বিওএফ-এর বর্তমান স্থানটিতে নতুন কোনো সমরাস্ত্র উৎপাদন লাইন স্থাপন সম্ভব হচ্ছে না। কারণ স্থানাভাব, যে কোনো বহিঃঃশক্তি আক্রমণের ক্ষেত্রে একটি মাত্র সমরাস্ত্র কারখানা ধ্বংসের ঝুঁকি বিদ্যমান। এ ছাড়া বিওএফ-এর একই স্থানে বিভিন্ন ধরনের বিস্ফোরক, গোলাবারুদ কারখানা ও গুদাম থাকায় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

প্রতিবেদনে প্রতিবেশী দেশের সমরাস্ত্র কারখানার তথ্য উপস্থাপন করা হয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়, ভারতে ৪১টি, মিয়ানমারে ২২ থেকে ২৫টি এবং পাকিস্তানে ১৪টি সমরাস্ত্র কারখানা রয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশের জন্য একাধিক সমরাস্ত্র উৎপাদন কারখানা প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। বর্তমানে ন্যূনতম আরও একাধিক সমরাস্ত্র উৎপাদন কারখানা অবিলম্বে প্রতিষ্ঠা করা অতীব জরুরি।

এদিকে অস্ত্র রপ্তানির বিষয়ে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বিওএফ উৎপাদিত অস্ত্র ও গোলাবারুদ রপ্তানির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ২০১৪ সালের ২১ জানুয়ারি ও ২০১৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর নীতিগত অনুমোদন প্রদান করা হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ‘রপ্তানি নীতি ২০২২-২০২৪’ আওতাভুক্ত তালিকা থেকে রপ্তানি অযোগ্য আগ্লেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ ও সংশ্লিষ্ট উপকরণ অবলোপনকরতঃ রপ্তানি তালিকায় অস্ত্র ও গোলাবারুদ অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। বিদেশে রপ্তানিলব্ধ অর্থ প্রাপ্তির উদ্দেশ্যে অর্থ মন্ত্রলাণয় কর্তৃক বিওএফ-এর অনুকূলে বাজেট কোড বরাদ্দ করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সহায়তা প্রয়োজন।

জানা গেছে, কৌশলগত দিক বিবেচনায় একটি স্বাধীন ও মর্যাদাপূর্ণ দেশের জন্য দেশীয় প্রতিরক্ষা শিল্পের (ইনডিজিনিয়াস ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রি) বিকাশ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একটি দেশের সংকটকালে/যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে অনেক সময় পরীক্ষিত বন্ধু দেশগুলোও অস্ত্র/গোলাবারুদের জরুরি সাহায্য নিয়ে এগিয়ে আসে না। এ ছাড়া অত্যাধিক আমদানিনির্ভরতা যুদ্ধ/সংকটকালে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এসব বিষয় মাথায় রেখেই নির্দিষ্ট কিছু অতি প্রয়োজনীয় অস্ত্র/গোলাবারুদ সরঞ্জামাদির (মিলিটারি হার্ডওয়্যার) ক্ষেত্রে দেশীয় স্বনির্ভরতা অর্জন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়টি বিবেচনায় রেখে দেশে অন্তত আরও একটি সমরাস্ত্র কারখানা স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা সরকার গুরুত্ব দিয়ে ভাবছে।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর