• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

৪ মাস আগেই চালু কালশী ফ্লাইওভার

কাল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  

নির্ধারিত সময়ের চার মাস আগেই চালু হচ্ছে মিরপুরের কালশী ফ্লাইওভার। ২০১৮ সালের পহেলা জানুয়ারি প্রকল্পটি অনুমোদন করে সরকার। নির্মাণের সময়কাল নির্ধারণ করা হয় ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত। কিন্তু এর আগেই নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ায় আগামীকাল ১৯ ফেব্রুয়ারি ফ্লাইওভারটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওইদিন থেকেই যানবাহন চলাচলের জন্য ফ্লাইওভারটি খুলে দেওয়া হবে বলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) সূত্র জানায়।


এ বিষয়ে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা বলেন, ‘কালশী ফ্লাইওভারটি ১৯ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টায় আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের দিন থেকে যানবাহন চলাচলের জন্য ফ্লাইওভারটি খুলে দেওয়া হবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নির্ধারিত সময় থেকে চার মাস আগে ফ্লাইওভারটি নির্মাণ শেষ করেছে।’ ফ্লাইওভারটি চালু হলে মিরপুর, পল্লবী ও ঢাকা ক্যান্টনমেন্টসহ পুরো এলাকায় সড়ক যোগাযোগ আরও সহজ হবে বলে জানান তিনি।


প্রকল্প সূত্র জানায়, সরকারি অর্থায়নে ফ্লাইওভারটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা। এই প্রকল্পের আওতায় প্রায় দুই কিলোমিটার ফ্লাইওভার (১ দশমিক ৭ কিলোমিটার) নির্মাণের পাশাপাশি সড়ক, ফুটপাত এবং ড্রেনের উন্নয়ন কাজও করা হয়েছে। ৩ দশমিক ৭ কিলোমিটার সড়ক, ফুটপাত প্রশস্তকরণ, সড়ক বিভাজক তৈরি এবং ড্রেন নির্মাণ ও কমিউনিকেশন ডাক্টও তৈরি করা হয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রায় সাড়ে ১৩ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রণালয়ের এই প্রকল্পটির স্বত্বাধিকারী সংস্থা ডিএনসিসি। উদ্বোধনের পর থেকে প্রকল্পের সার্বিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করবে ডিএনসিসি।


ডিএনসিসির সূত্র জানায়, ফ্লাইওভারটি মিরপুরের ইসিবি চত্বর থেকে কালশী মোড়, মিরপুর ডিওএইচএস ও মিরপুর সাড়ে ১১ নম্বর পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নির্মাণ করা হয়েছে। এটি চালু হলে চালু হলে মিরপুর, পল্লবী, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, উত্তরা, মহাখালী ও রামপুরার মধ্যে সড়ক যোগাযোগ সহজ হবে। বাড়বে সড়কে যানবাহনের ধারণক্ষমতা। মিরপুর থেকে ১০ থেকে ১৫ মিনিটে উত্তরার বিমানবন্দর এলাকায় যাতায়াত করা যাবে।


প্রকল্প পরিচালক ও ডিএনসিসির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মাদ আরিফুর রহমান জানান, ফ্লাইওভারটি চালু হলে মিরপুরের বাসিন্দাদের চলাচল অনেকাংশে সহজ হবে। আগের তুলনায় অনেক কম সময়ে চলাচল করতে পারবেন মিরপুরের বাসিন্দারা। ডিএনসিসি এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যৌথ উদ্যোগ নির্মিত এই প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ হয়েছে। তাই চার মাস আগেই ফ্লাইওভারটি খুলে দেওয়া হচ্ছে।


প্রকল্পের সংশ্লিষ্টরা জানান, ফ্লাইওভার প্রকল্পের আওতায় রাজধানীর মিরপুর থেকে বিমানবন্দর, উত্তরা ও টঙ্গী হয়ে উত্তর দিকে যাওয়ার জন্য কালশী হয়ে জিয়া কলোনি পর্যন্ত ৩ দশমিক ৭ কিলোমিটার নতুন সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। এখন প্রায় প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ হাজার যানবাহন এই সড়কে চলাচল করছে। এ ছাড়া ওই এলাকার সড়কের দুই পাশে বিভিন্ন বাণিজ্যিক ও আবাসিক ভবন, হাসপাতাল, ক্লিনিক গড়ে উঠছে। মিরপুর এলাকায় যানবাহনের চাপ কমাতে ক্যান্টনমেন্ট এলাকার ওপর দিয়ে এই ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হয়েছে। এখন ফ্লাইওভারটি চালু হলে মিরপুর, পল্লবী, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, উত্তরা, মহাখালী ও রামপুরার মধ্যে সড়ক যোগাযোগ সহজ হবে।

স্থানীয় বাসিন্দা সাইদুর রহমান বলেন, ‘মিরপুরের কালশী এলাকাটি খুব ব্যস্ত এলাকা। রাস্তা হওয়ার পর এয়ারপোর্ট, বাড্ডা এই এলাকার মানুষের যাতায়াত বাড়ে, কিন্তু কালশীর মোড়টা সরু থাকায় সব সময় জ্যাম লেগেই থাকত। বাসের উচ্চশব্দ, চলাফেরা সব দিক দিয়েই কষ্টকর ছিল। এই ফ্লাইওভার চালু হলে এসব সমস্যা দূর হবে।’

শফিকুল ইসলাম নামের মিরপুরের ডিওএইচএসের এক বাসিন্দা বলেন, ‘কালশী ফ্লাইওভারের কাজ অনেক আগেই শেষ হয়েছে। কিন্তু এখনো চালু করা হয়নি। প্রতিদিন কালশী মোড় যানজটে আটকা থাকতে হয়। ফ্লাইওভারটি চালু হলে উত্তরা বিমানবন্দর ও রামপুরা এলাকায় যাতায়াত করা সহজ হবে।’

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর