• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

দেওয়ানগঞ্জে ভুট্টা চাষে স্বাবলম্বী নিম্ন আয়ের মানুষ

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ২৭ এপ্রিল ২০২২  

ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদী বিধৌত জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা। এখানকার নদী পারের জমিগুলো বেশিরভাগ বালুময়। এসব জমিতে পানিধারণ ক্ষমতা না থাকায় ভুট্টা চাষ হিসেবেই বেছে নিচ্ছেন এ অঞ্চলের চাষীরা। ভুট্টা চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন উপজেলার নিম্ন আয়ের মানুষ। যাদের দু'বেলা আহার জোগাতে হিমশিম খেতে হতো তারা নদী পারের শতশত বিঘা পতিত জমিতে ভুট্টা চাষ করে সারা বছর খাবে এমন টাকা ঘরে তুলছেন বলে জানা যায়। অন্যান্য ফসলের চেয়ে লাভ ও সুবিধাজনক হওয়ায় প্রতিবার বেড়েই চলছে এ খাদ্যশস্যের আবাদ। 


সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার চিকাজানী, পোল্ল্যাকান্দি, বাহাদুরাবাদ, হাতিভাঙ্গা, চর আমখাওয়া ও পার রামরামপুর ইউনিয়নে ভুট্টা মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এবছর সুপার সাইন ২৭৬০, ডন, পালোয়ান, এলিট, কোহিনুর, কাবেরী, এনকে ৪০, মিরাক্কেল, লালতীর, শাহেনশাহ জাতের হাইব্রিড ভুট্টা চাষ করা হয়েছে। 

চর আমখাওয়া ইউনিয়নের ভুট্টা চাষী শাহ সফি জানান, "প্রতিবিঘা জমিতে মাত্র ১০,০০০ টাকা খরচ করে ৪৫,০০০ - ৫০,০০০ টাকা ভুট্টা বিক্রি করে পাওয়া যাচ্ছে। এতে কৃষকের সব ফসলের চেয়ে বেশি লাভ হচ্ছে। তাই আমরা ভুট্টা চাষে বেশি আগ্রহী।" 

চাষী রফিকুল ইসলাম জানান, "আমার চার বিঘা জমির সবটুকুতেই ভুট্টা চাষ করেছি। তিন-চার মাসের মধ্যেই ভুট্টা তোলার উপযোগী হয়। এটা বিক্রি করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতে আসে যা অন্য ফসলের চেয়ে বেশি লাভ। তাই এবছর ধান চাষ বাদ দিয়ে পুরো জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। ভুট্টা মাড়াই করা শেষ। গতবারের চেয়ে এবছর বেশি দামে ভুট্টা বিক্রি করতে পেরে আমি খুবই খুশি। " 


উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পরেশ চন্দ্র দাস বলেন, "গতবছর কৃষকরা ৫০০-৬০০ টাকা মণ ভুট্টা বিক্রি করেছিল। এবছর প্রায় আড়াই থেকে তিনগুণ বেশি দামে ১২০০-১৫০০ টাকা মণ দরে ভুট্টা বিক্রি করছে। আমাদের পরামর্শক্রমে কৃষকরা অধিক ফলনশীল উন্নত জাতের বীজ পেয়েছে। বিশেষ করে আমরা সুপার সাইন ২৭৬০ জাতের যে বীজটা দিয়েছিলাম এ বীজটার ফলন খুবই ভালো হয়েছে। আরো বেশ কিছু জাতের বীজ আছে যেগুলো আমাদের পরামর্শ নিয়ে চাষিরা আবাদ করেছে সেগুলোর ফলনও বেশ ভালো হয়েছে। এবছর ৫৩০০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ করা হয়েছে  যা গতবারের চেয়ে ২০০ হেক্টর বেশি। আগামীতে কোনো পতিত বা অনাবাদি জমি  থাকবে না বলে আমরা আশা করছি।"

ভুট্টার আবাদ পরিবেশ বান্ধবও বটে। এতে পানির ব্যবহার কম। ফলন, পুষ্টিমান এবং বাজারদর বিবেচনায় এটি লাভজনক। পতিত ও অনাবাদি জমিতে ভুট্টার চাষ প্রতিবছর যে হারে বাড়ছে তাতে এ এলাকার নিম্ন আয়ের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হবে বলে প্রত্যাশা সকলের। আগামীতেও ভুট্টার সঠিক মূল্য পাবার আকাঙ্ক্ষা করছেন চাষীরা এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে নানা পরামর্শ ও সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার আশা কৃষকদের।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর