• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

মা-মেয়ে খুন : মেয়ের সাবেক স্বামীসহ তিন আসামি গ্রেপ্তার

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ৭ সেপ্টেম্বর ২০২২  

জামালপুরে মা জোসনা বেগম ও মেয়ে কাজলী আক্তারকে খুনের ঘটনায় ছয়জনকে আসামি করে ৬ সেপ্টেম্বর জামালপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। মামলাটির প্রধান আসামি আলম হোসেন ইমরান এবং তার সহযোগী মামুন মিয়া ও শামীম হাসানকে গ্রেপ্তার করেছে সদর থানা পুলিশ।

তাদের মধ্যে মামুন মিয়া ও শামীম হাসানকে ৫ সেপ্টেম্বর রাতে আটক করে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ৬ সেপ্টেম্বর তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ। মামলাটির প্রধান আসামি কাজলী আক্তারের সাবেক স্বামী আলম হোসেন ইমরানকে ৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাকে ৭ সেপ্টেম্বর আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সদর থানার ওসি।

জামালপুর সদর উপজেলার রানাগাছা ইউনিয়নের নান্দিনা নয়াপাড়া গ্রামের বাদাম ব্যবসায়ী মোস্তফা কামালের স্ত্রী জোসনা বেগম ও মেয়ে কাজলী আক্তার ৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা থেকে নিখোঁজ ছিলেন। ৪ সেপ্টেম্বর ও ৫ সেপ্টেম্বর সদর উপজেলার পৃথক স্থান থেকে তাদের দু’জনের লাশ উদ্ধার করে সদর থানা পুলিশ।

পুলিশ সূত্র জানায়, নৃশংস এই খুনের ঘটনায় কাজলী আক্তারের বাবা মোস্তফা কামাল বাদী হয়ে তার মেয়ে ও স্ত্রীকে খুন করে লাশ গুম করার অভিযোগে ৬ সেপ্টেম্বর জামালপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় কাজলী আক্তারের সাবেক স্বামী সদরের বাঁশচড়া ইউনিয়নের পূর্ব বাঁশচড়া গ্রামের মৃত হযরত আলীর ছেলে আলম হোসেন ইমরানকে প্রধান আসামিসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলাটির বাকি পাঁচজন আসামিরা হলেন- কাজলীকে স্থানীয় একটি স্কুলে শিক্ষকতার চাকরির প্রলোভনদাতা একই ইউনিয়নের জামিরা গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে মেহেদী হাসান নিপুল ও আব্দুল হামিদের ছেলে মামুন মিয়া, মধুপুরের শোলাকুড়ি গ্রামের আব্দুস সোবহানের ছেলে শামীম হাসান, মধুপুরের কৃষ্ণপুর গ্রামের আবুল কালামের ছেলে হাসর উদ্দিন ও ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার মহিষতারা গ্রামের আব্দুর রউফের ছেলে রাশেদুল ইসলাম রাসেল। আসামিদের মধ্যে মামুন মিয়া ও শামীম হাসানকে ৫ সেপ্টেম্বর রাতে এবং প্রধান আসামি আলম হোসেন ইমরানকে ৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার করা হয়।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, কাজলী আক্তার স্থানীয় একটি স্কুলে শিক্ষকতার চাকরির বিষয়ে কথা বলতে তার মা জোসনা বেগমকে সাথে নিয়ে ৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় সদর উপজেলার জামিরা এলাকায় মেহেদী হাসান নিপুল নামের এক যুবকের বাড়িতে গিয়েছিলেন। ওই রাত থেকেই তারা নিখোঁজ হয়েছিলেন। ৪ সেপ্টেম্বর সকালে কাজলীর গলাকাটা লাশ পাওয়া যায় বাড়ি থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে মোনাকুর্শা গ্রামের একটি নির্জন বাঁশঝাড়ে। এর পরদিন ৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে তার মা জোসনা বেগমের লাশের সন্ধান মিলে সদরের বাঁশচড়া ইউনিয়নের বড়ইতাইর খালের পানিতে। এ ঘটনার পর থেকে মেহেদী হাসান নিপুল পলাতক রয়েছেন। মেহেদী হাসান নিপুলের চাচা বাঁশচড়া ইউনিয়নের জামিরা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ইউপি সদস্য সাজ মাহমুদ সরকার লালুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ সেপ্টেম্বর রাতে থানায় ডেকে নেয় পুলিশ। পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতেই তাকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।

জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহনেওয়াজ বলেন, মা-মেয়ে খুনের ঘটনায় ছয়জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন নিহত কাজলীর বাবা মোস্তফা কামাল। ৫ সেপ্টেম্বর রাতে আটক মামুন মিয়া ও শামীম হাসানকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে তাদেরকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছেন। গ্রেপ্তার প্রধান আসামি আলম হোসেন ইমরানকে ৭ সেপ্টেম্বর আদালতে হাজির করে তাকেও রিমান্ডে আনার আবেদন করা হবে। মামলাটির অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান চলমান রয়েছে। তিনি আরো জানান, ৫ সেপ্টেম্বর রাতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় ডেকে আনা ইউপি সদস্য সাজ মাহমুদ সরকার লালুকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর