• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

জামালপুরের বামুনপাড়ায় আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখতে শান্তি সমাবেশ

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ৩১ জানুয়ারি ২০২৩  

জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় আলমাস উদ্দিন (৬২) নামে এক ব্যক্তি নিহত হবার ঘটনায় জামালপুর পৌরসভার বামুনপাড়া গ্রাম অশান্ত হয়ে উঠে। নানা গুজব আর আতঙ্কময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এলাকায়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে মির্জা আজম এমপি এবং জামালপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য প্রকৌশলী মো. মোজাফফর হোসেনের পরামর্শে এলাকার আপামর মানুষদের নিয়ে সমাবেশের উদ্যোগ নেয়া হয়।

এ প্রেক্ষিতে বিট পুলিশিং কার্যক্রমের আওতায় শান্তি সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামালপুর পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন। মুখ্য আলোচক ছিলেন সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকির হোসেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার নেটওয়ার্কের সভাপতি জাহাঙ্গীর সেলিম।
বামুনপাড়া বিটপুলিশিং ও উদয়ন ক্লাব সংলগ্ন মাঠে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহনেওয়াজ, মামলার বাদী তহুর মন্ডল, নিহতের ভাতিজা রফিকুল ইসলাম, ছেলে আল আমীন, ১৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেজান মাহমুদ শিমুল প্রমুখ।

সভা সূত্র জানায়, গত ২৫ জানুয়ারি মামলার বাদী তহুর মন্ডল ও তার লোকজনদের দখলী জমিতে উঠানো বসত ঘরে অতর্কিত দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে নিহত আলমাস উদ্দিন ও বাড়িতে অবস্থানরত পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের উপর হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এসময় বাড়িঘর ভাংচুর ও কুপিয়ে রক্তাক্ত করা হয় ৯ ব্যক্তিকে। হামলা শেষে স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মুমূর্ষু অবস্থায় আলমাস উদ্দিনকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। তিনদিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

হামলার পর বামুনপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মৃত হাতেম আলী মন্ডলের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩৮)সহ ১৭ জনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা করা হয়। মামলা অন্যান্য আসামিরা হলেন বিদ্যুৎ হোসেন জীবন, আব্দুল মজিদ, মো. ডন, মো. স্বাধীন, মো. আজিজল হক, আব্দুল হালিম, মো. কাউছার, আরাফাত, দোলন, দুদুল, ইকরাম হোসেন আবু, আরিফসহ চারজন নারী এবং অজ্ঞাতনামা ১৫/২০ জন। এরমধ্যে দুইজন নারীসহ ৫ আসামিকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়। অপরদিকে প্রতিপক্ষ সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে তহুর মন্ডল, রফিকুল ইসলামসহ ৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন।

সমাবেশে মেয়র মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন বলেন, হামলা এবং হত্যার সাথে জড়িত সে যে দলেরই হোক দোষী ব্যক্তির পক্ষে কেউ সুপারিশ করবে না। তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। কোন নিরপরাধ ব্যক্তি যাতে হয়রানীর শিকার না হন সে ক্ষেত্রে পুলিশ এবং বাদী পক্ষের প্রতি সচেতন থাকার অনুরোধ জানান।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকির হোসেন বলেন, আইন কেউ নিজের হাতে তুলে নিবেন না। আমরা কোন নিরপরাধ ব্যক্তিকে অথবা অযথা কাউকে আটক বা হয়রানী করবো না। তবে মামলার স্বার্থে অনেককেই জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্য সকল আসামিকে গ্রেপ্তার করবো ইনশা’আল্লাহ। গুজবে কেউ কান দিবেন না।

ওসি শাহনেওয়াজ বলেন, এমন নির্মম ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে সকল আসামিদের আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে এতটুকু গাফেলতি করবো না।

সভাপতির বক্তব্যে জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, অনতিবিলম্বে আসামিদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করেন। তা নাহলে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। তিনি এখন পর্যন্ত পুলিশি তৎপরতায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। বিট পুলিশিং কার্যক্রম আরো গতিশীল করতে পুলিশ প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান। এ এলাকায় পুলিশি টহল বাড়ানোর জন্য অনুরোধ জানান।

শান্তি সমাবেশে বক্তাদের আলোচনা এবং প্রতিশ্রুতিতে এলাকায় স্বস্তি নেমে আসে।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর