• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

টানাবর্ষণে তলিয়ে গেছে বাঁশখালীর নিম্নাঞ্চল

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ১ জুলাই ২০২১  


চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে টানা ২ দিনের বারী বর্ষণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে উপজেলার নিম্নাঞ্চল। চরম দূর্ভোগের মধ্যে খেটে খাওয়া মানুষগুলো মানবেতর জীবনযাপন করছে। বাঁশখালীতে বিভিন্ন  ইউনিয়নে নিম্নাঞ্চল পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে মাছের ঘের, পুকুর ও বসতঘর, গ্রামীণ সড়কগুলো। জলাবদ্ধতার কবলে পড়ে অনেক এলাকায় পানিবন্দি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
দু'দিনের টানা বৃষ্টিতে উপকূলীয় এলাকা সরল, গন্ডামারা, ছনুয়া, পুইছড়ি, চাম্বল, কাথরিয়া, বাহারছড়া, পুকুরিয়া, খানখানাবাদ এবং শিলকূপ ও বাঁশখালী পৌরসভাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের মানুষ ভয়াবহ বন্যা আতংকে রয়েছে। এতে তলিয়ে গেছে নদী পাড়ের গ্রাম সহ রাস্তাঘাট। উপজেলার উত্তরে সাঙ্গুনদীর ভাঙ্গনে বিলীন হচ্ছে সাধারাণ মানুষের বসতঘর। জোয়ারের পানি ও টানাবর্ষণে দিন দিন ভেঙ্গে যাচ্ছে নদীর পাড়সহ বসতঘর, রাস্তাঘাট, মসজিদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনা। শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হলে সাঙ্গুপারের মানুষের জীবন হবে খুবই দূর্বিসহ।
স্বাভাবিকের চেয়ে ২ থেকে ৩ ফুট পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তলিয়ে গেছে বিভিন্ন ধরণের ফসলি জমি। উপজেলার নিম্নাঞ্চলে বর্ষাকালীন সবজি ক্ষেত ও আউশ ধানের বীজতলা পানিতে ডুবে গেছে। এতে ক্ষেত নষ্ট হয়ে কৃষকদের অপূরণীয় ক্ষতির আশংকা করছে। উপজেলার নিম্নাঞ্চলের গ্রামীন সড়ক গুলো ডুবে যাওয়ায় হাজার হাজার মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়েছে। উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বিভিন্ন অঞ্চলের সাথে। এমনকি উপজেলার পূর্বদিকে পাহাড়ী ঢলের স্রোতে কৃষকের মৌসুমি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে।
শিলকুপ ইউপির এক চাষী মু. কামাল জানান, 'আমাদের শিলকুপে সবুজ সবজিসহ নানা কৃষিপন্য উৎপাদন হয়। কৃষকের জীবন জীবিকার উৎস খ্যাত ফসলী জমীগুলো বাঁশখালী ইকোপাকের বামের ও ডানের ছড়া লেকের পানিতে ভেসে গেছে। দু'দিনের টানাবর্ষণে প্রায় ফসলি জমি ডুবে গেছে। বামের ও ডানের ছড়া লেকের পানি ছেড়ে দেওয়ায় জমে থাকা টোপাপনা ছড়ার কোথাও কোথাও জমাটবদ্ধ হয়ে পানি চলাচলের স্বাভাবিক গতি রোধ হয়ে লোকালয়ে পানি ডুকছে। এভাবে চলতে থাকলে হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়বে আমাদের জনজীবন।'
পৌরসভা থেকে মু. মোরশেদ হোসেন জানিয়েছেন, 'পৌরসভার দক্ষিণ জলদীর দোসারী পাড়ার শত শত মানুষ পানিবন্ধী। শতাধিক বসতঘরে ডুকছে বর্ষার ঢলের পানি। পানি নিষ্কাশনের ¯øুইসগেইট, কালবার্ট মেরামত না করায় এমন দূর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে।'
গন্ডামারা থেকে কলিম উল্লাহ মিজবাহ জানিয়েছেন, 'গন্ডামারা-বড়ঘোনার নিম্নাঅঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেক ফসলী জমি, মাছের ঘের, পুকুর, বসতঘর পানির নীচে। বড়ঘোনার সকাল বাজারে হাঁটু পরিমান পানি যা আগে কখনো দেখিনি।'
পুঁইছড়ি থেকে রোটারিয়ান মুবিনুল হক মুবিন জানিয়েছেন, 'বাঁশখালীর দক্ষিণ পুইঁছড়ির সিকদার পাড়া, হায়দরি পাড়া, সাইয়ারা পাড়া, ডাকাতিয়া ঘোনা, পন্ডিতকাটায় হাজার হাজার মানুষ পানিবন্ধি। শতাধিক বসতঘরে ডুকেছে বর্ষার পানি। পুকুর, রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। গবাদীপশু পানিতেই রাত যাপন করেছে। এলাকার ¯øুইসগেইট, কালবার্টগুলো মেরামত করা হয়নি বিধায় এহেন সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।'
অন্যদিকে পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে নদীতে প্রচন্ড ঢেউ থাকায় আতঙ্কে রয়েছে নদী পাড়ের মানুষগুলো। টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সঙ্খনদের সংযোগ জলজদর খালের পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃষ্টির সাথে পাল্লা দিয়ে সারাদিন বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় দূর্বিসহ হয়ে পড়েছে জনজীবন।
দূর্ভোগ কবলিত স্থানীয়রা জলাবদ্ধতা নিরসণে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন ও উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের আসু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর