• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

ঘাটাইলে সেতু নির্মাণের অভাবে দুর্ভোগে ১০ গ্রামের ৫০ হাজার মানুষ

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২  

টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ধলাপাড়া ইউনিয়নে সরাসাক ও গাংগাইর গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া বংশাই নদীর উপর একটি ব্রীজের অভাবে চরম দুর্ভোগে আছেন কয়েক গ্রামের বাসিন্দারা। বর্ষা মৌসুমে নৌকা ও সুষ্ক মৌসুমে বাশেঁর সাকোই একমাত্র ভরসা এলাকাবাসীর। এলাকাবাসী দেশ স্বাধীনের পর থেকেই এখানে একটি ব্রীজ নির্মানের দাবী করে আসছেন। কিন্তু দাবী পুরন হচ্ছে না। 

 

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার গত ১৩ বছরে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলায় নির্মান করেছে অনেক রাস্তা ও ব্রীজ।  কিন্তু ঘাটাইল উপজেলার ধলাপাড়া ইউনিয়নের সরাসাক ও গাংগাইর গ্রামের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া বংশাই নদীতে ব্রীজ নির্মাণ হচ্ছে না। আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষের বর্ষা মৌসুমে নৌকা ও সুষ্ক মৌসুমে ঝুকিপুর্ণ বাশেঁর সাকো যাতায়াতের একমাত্র ভরসা।

 

বর্তমানে বাঁশের সাকোটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এটিরও সংস্কার না করায় ভোগান্তি পোহাচ্ছেন প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। নদীর দুই পাড়ে রয়েছে দুইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুকি নিয়ে এই নদী পারাপার হতে হয়। বর্ষা মৌসুমে নৌকা ডুবে প্রান যায় শিক্ষার্থীদের। সুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাকো দিয়ে পারাপার হতে গিয়েও পরতে হয় দুর্ঘটনায়। এ অঞ্চলের মানুষের টাঙ্গাইল জেলা সদরে যাতায়াত করতে হয় ঘাটাইল হয়ে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়ক দিয়ে। এতে সময় লাগে প্রায় দেড় ঘন্টা। অথচ এই বংশাই নদীর উপর যদি একটি ব্রীজ নির্মাণ করা হয় তবে,  টাঙ্গাইল জেলা সদরে যেতে সময় লাগবে মাত্র ৪০ মিনিট। নিজেদের যাতায়াতের দুর্ভোগের পাশাপাশী পাহাড়ী অঞ্চলে উৎপাদিত বিভিন্ন ফল-ফসলের বাজারজাত করতেও যাতায়াত খরচ পরে যায় অনেক।

 

এলাকাবাসীরা জানান,এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার ধলাপাড়া ও দেওপাড়া ইউনিয়নের গাংগাইর, সরাসাক, আমজানি, বাদেআমজানি, গোলাবাড়ি, ধলাপাড়া, মলাজানি, জুগিয়াটেংগর, নয়ারহাট, বর্গাসহ ১০টি গ্রামের মানুষকে যাতায়াত করতে হয় বংশাই নদী পারাপার হয়ে। অত্র এলাকার সরাসাক গ্রামে রয়েছে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, গাংগাইর গ্রামে রয়েছে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়া ধলাপাড়া এলাকায় রয়েছে একটি বড় বাজার, একটি কলেজ, একটি মাধ্যমিক বালক বিদ্যালয় ও একটি বালিকা বিদ্যালয়। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বংশাই নদী পার হয়েই লেখাপড়া করতে হয়। দেশ স্বাধীনের পর হতেই তারা বংশাই নদীর উপর একটি ব্রীজ নির্মানের জন্য জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন স্থানে দাবী জানিয়ে আসছেন। অনেকেই প্রতিশ্রæতি দেন ব্রীজ নির্মান করে দেয়ার। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না।  তাদের দাবী অতি দ্রæত এখানে নির্মান করে দেয়া হোক একটি পাকা ব্রীজ। তাহলে তাদের দীর্ঘ সময়ের দুর্ভোগ দুর হবে। 

 

গাংগাইর গ্রামের পল্লী চিকিৎসক সেন্টু তালুকদার বলেন, বর্ষার সময় সঠিক সময় খেয়া পর হতে না পারায় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা সময় মতো ক্লাসে উপস্থিত হতে পারে না। শুকনো মৌসুমেও ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো পার হতে হয়। বংশাই নদীর ওপর সেতু নির্মাণ জরুরি।

 

একই গ্রামের নূরুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন সময়ে জনপ্রতিনিধিরা প্রতিশ্রæতি দিলেও স্বাধীনতার ৫০ বছরেও বংশাই নদীতে সেতু নির্মিত হয় নাই। অথচ প্রতিদিন ১০ গ্রামের শত শত মানুষকে এই নদী ওপর দিয়ে পারাপার হয়ে যাতায়াত করতে হয়। আমি সরকারের কাছে এখানে দ্রæত সেতু নির্মাণের দাবি জানাই।

 

 

খেয়াপারের মাঝি দুলাল জানান, আমার বাপ-দাদারাও এই খেয়ার মাঝি ছিল। বংশানুক্রমে আমিও খেয়া পারাপার করি। এখানে সেতু নির্মাণ হলে এলাকার মানুষের দুর্ভোগ থাকবে না।

 

ধলাপাড়া  ইউপি চেয়ারম্যান মো: এজহারুল ইসলাম মিঠু ভুইয়া বলেন, তিনি উপজেলা উন্নয়ন মিটিংয়ে অনেকবার দাবী তুলেছেন,  ধলাপাড়া- গাংগাইর- কালিহাতী রাস্তায় বংশাই নদীর ওপর সেতু নির্মাণ করা জরুরী।  বিষয়টি আমি স্থানীয় প্রশাসন ও এমপি মহোদয়কে অবগতি করেছি। দ্রæত সময়ের মধ্যে সেতুটি হবে বলে আশা করি।

 

ঘাটাইল উপজেলা পরিষদের  চেয়ারম্যান মো:শহিদুল ইসলাম লেবু বলেন, সড়াসাক ও গাংগাইর গ্রামের বংশাই নদীতে ব্রীজের অভাবে স্থানীয জনগনের দুর্ভোগের কথা তিনি অবহিত আছেন। স্থানীয় সংসদ সদস্যের সাথে কথা বলে এখানে যাতে একটি পাকা ব্রীজ নিমান প্রকল্প বান্তবায়ন করা যায়, সে বিষয়ে তিনি উদ্যোগ নিবেন।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর