• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

বাঁশের সাঁকোয় ঝুঁকিপূর্ণ পারাপারে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর দুর্ভোগ

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ২০ এপ্রিল ২০২২  

ঝুঁকিপূর্ণ একটি বাঁশের সাঁকো পার হতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে মধুপুর গ্রামের লোকজন ও স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের। প্রায়দিনই সাঁকো ভেঙ্গে আহত হচ্ছেন লোকজন। কিন্তু এই সাঁকোটি সংষ্কারের কোন উদ্যোগ নেই। 

সিরাজগঞ্জের  উল্লাপাড়া উপজেলার পূর্ণিমাগাঁতী ইউনিয়নের মধুপুর-ঝবঝবিয়া সংযোগ সড়কের শুরুতে অবস্থিত এই ব্যবহার অনুপযোগী বাঁশের সাঁকো। 

মধুপুর সবুরা ছামাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে উক্ত সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে ভেঙ্গে যাওয়ায় মধুপুর গ্রামবাসী যাতাযাতের জন্য নিজেদের বাড়ি থেকে বাঁশ দড়ি সংগ্রহ করে প্রতিবছর এখানে বাঁশের সাঁকো তৈরি করেন। 

কিন্তু মেরামতের  কোন ব্যবস্থা না থাকায় সাঁকোটি ভেঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বিশেষতঃ মধুপুর সবুরা ছামাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীদেরকে প্রতিদিন এই সাঁকো পার হয়ে স্কুলে আসতে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ।  

মধুপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর সরকার, শরিফুল ইসলাম, আলম হোসেন, আব্দুল মতিন জানান, এই গ্রামের পাশে ঝবঝবিয়া সংযোগ রাস্তাটি স্থানীয় বাসিন্দাদের বাইরে বের হবার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু রাস্তার শুরুতেই বেশ কিছু অংশ বর্ষার পানির তোড়ে ভেঙ্গে যাবার পর ৫/৬ বছরের মধ্যেও এই ভাঙ্গা অংশ মেরামতের কোন উদ্যোগ নেয়নি পূর্ণিমাগাঁতী ইউনিয়ন পরিষদ। গ্রামের লোকজন স্থানীয় মেম্বর চেয়ারম্যানদের কাছে অনেকবার আবেদন জানালেও তাতে কোন কাজ হয়নি। বর্তমানে মধুপুর সবুরা ছামাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শতাধিক ছাত্রছাত্রীকে প্রতিদিন এই ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো পার হয়ে স্কুলে যাতায়াত করতে হয়। একই সঙ্গে এই সাঁকো পেরিয়েই মধুপুর গ্রামের অন্ততঃ ৫০ জন কলেজ ছাত্রছাত্রী সরকারি আকবর আলী কলেজ ও উল্লাপাড়া বিজ্ঞান কলেজে পড়ালেখা করে থাকে। 

ভুক্তভোগীরা আরও জানান, সাঁকো ভেঙ্গে অনেক দিন পড়ে গিয়ে গ্রামের লোকজন এবং ছাত্রছাত্রীরা আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বর্ষার সময় পড়ে গিয়ে স্কুল পোশাক ভিজিয়ে অনেক শিক্ষার্থীকে স্কুলে ক্লাস করতে হয়। 

এই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সোহগ হোসেন, ছাব্বির, নাফিজ, খাদিজা ও জুই জানায়, তারা প্রতিদিন গ্রামের ভাঙ্গা রাস্তার উপর নির্মিত বাঁশের সাঁকো ঝুঁকি নিয়ে পার হয়ে থাকে। অনেক সময় পড়ে গিয়ে আহত হয় তারা। এসব শিক্ষার্থী এখানে স্থায়ীভাবে সেতু নির্মানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছে।  

মধুপুর সবুরা ছামাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এলিনা পারভীন তার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উক্ত বাঁশের সাঁকোয় পারাপার ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে জানান, উক্ত ভাঙ্গা অংশে একটি পাকা সেতু নির্মানের ব্যবস্থা হলে শিশু শিক্ষার্থীরা নিরাপদে স্কুলে যাতায়াত করার সুযোগ পাবে। 

এব্যাপারে পূর্ণিমাগাঁতী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল ইসলাম তপন জানান, মধুপুর-ঝবঝবিয়া সংযোগ সড়কের ভাঙ্গা অংশ দিয়ে মধুপুর গ্রামের লোকজন বর্ষার সময় নৌকায় বাইরে যাতায়াত করে থাকেন। ফলে ভাঙ্গা অংশটি মেরামত করার ক্ষেত্রে গ্রামবাসীর আপত্তি রয়েছে। তবে ওই স্থানটি বর্ষায় নৌ চলাচলের উপযোগী রাখতে ভাঙ্গা অংশের উপর আপাততঃ একটি উঁচু কাঠের সেতু নির্মানের উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। পরবর্তীতে এখানে পাকা সেতু নির্মানের জন্য একটি প্রকল্প প্রনয়ন করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে প্রেরণের ব্যবস্থা নেবেন তিনি।
 

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর