বুড়াগৌরাঙ্গ নদে ফেরি বন্ধ, দুর্ভোগে ৫০ দ্বীপচরের মানুষ

প্রথমে বড় ফেরি ‘কেতকী’, পরে ছোট একটি ফেরি। কিন্তু কোনোটিই শেষ পর্যন্ত স্থায়ী হয়নি। লোকসানের কারণ দেখিয়ে বুড়াগৌরাঙ্গ নদ থেকে বিআইডব্লিউটিসি ফেরি দুটি তুলে নেয়। সেই থেকে আবারও পটুয়াখালীর চরবিশ্বাস ও চরকাজলসহ গলাচিপা, রাঙ্গাবালী, দশমিনা এবং পার্শ্ববর্তী ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার অন্তত ৫০টি দ্বীপচরের মানুষ মূল ভূখ- অর্থাৎ গলাচিপা উপজেলাসহ পটুয়াখালী জেলা সদরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। লোকজনকে ছোট ইঞ্জিনচালিত নৌকা, ট্রলার ও স্পিডবোটে প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বুড়াগৌরাঙ্গ নদ পাড়ি দিতে হচ্ছে। গত পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলছে এ অবস্থা, যা দেখারও কেউ নেই।   
পটুয়াখালীর গলাচিপা, রাঙ্গাবালী ও দশমিনা উপজেলায় অন্তত ৫০টি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ-চরাঞ্চল রয়েছে। এসব চরবাসীকে নানা প্রয়োজনে প্রতিদিনই যাতায়াতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উত্তাল বুড়াগৌরাঙ্গ নদ পাড়ি দিতে হয়। এ বিষয়ে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ চরবিশ্বাস ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তোফাজ্জেল হোসেন বাবুল মুন্সী বলেন, গলাচিপার চরবিশ্বাস থেকে সাগর উপকূলীয় রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ পর্যন্ত পাকা সড়ক রয়েছে। ফেরি চালু করার ফলে উপজেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ চরকাজল, চরশিবা, চরআগস্তি, চরনজির, চরবোরহান, চরবিশ্বাস, চরমোন্তাজ ও চরবেষ্টিন- এই ৮ চরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের পাশাপাশি চরের মানুষের জীবনযাত্রায় ব্যাপক পরিবর্তন আসবে বলে মনে করেছিলাম। কিন্তু কেন যে ফেরি বন্ধ হলো, তা চরবাসী জানতেও পারছে না।

এখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। আরেক বিচ্ছিন্ন ইউনিয়ন চরকাজল ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, ফেরির ব্যবস্থা হওয়ায় নিরাপদ নদ পারাপার অনেকটা নিশ্চিত হয়েছিল। এ ছাড়া এ অঞ্চলের উৎপাদিত ফসল, বিশেষ করে তরমুজ ও ডালজাতীয় ফসল বাজারজাত অনেকটা সহজ হবে বলে সকলেই আশা করেছিল। কিন্তু ফেরি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আবারও চরের মানুষের জেলা ও উপজেলা সদরে যাতায়াত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করার স্বপ্নও ভেঙে গেছে।
এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিসি বরিশাল কার্যালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ফেরি পারাপারের পূর্বশর্ত হচ্ছে যানবাহন থাকতে হবে। কিন্তু নদ পারাপারে তেমন যানবাহন হচ্ছিল না। এ ছাড়া চরবিশ্বাস-চরকাজল এলাকায় রাস্তাঘাটও তেমন নেই। এ কারণে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ফেরি চলাচল সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে ঘাটে পন্টুন রয়েছে। কর্তৃপক্ষ চাইলে আবার তা চালু হবে।