• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর
সর্বশেষ:
চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তৎপর হওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সমগ্র বিশ্বে আত্মমর্যাদাশীল একটি জাতি : স্পিকার ভারতের কাছে পাঁচটি খাদ্যপণ্যের নিশ্চিত সরবরাহ চায় বাংলাদেশ চীনের সঙ্গে রাজনৈতিক-অফিসিয়াল যোগাযোগ বাড়াতে প্রস্তুত বাংলাদেশ হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্টের কাছে বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র পেশ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর স্বাধীনতা ঘোষণার ইতিহাস বিকৃত করা হয় বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত অস্ট্রেলিয়া বাংলা নববর্ষ উদযাপনে মানতে হবে ১৩ নির্দেশনা পদ্মাসেতুর নির্মাণশৈলী দেখে মুগ্ধ ভুটানের রাজা অ্যানেসথেসিয়াজনিত দুর্ঘটনা প্রতিরোধে মন্ত্রণালয়ের ৬ দফা নির্দেশনা

পাক-পবিত্র রাখতে ঘরের মেঝে যেভাবে পরিস্কার করবেন

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ৩ অক্টোবর ২০২১  

ঘরে ছোট শিশু থাকলে ঘর একটু ময়লা বা নোংরা হয় বেশি। এছাড়াও সময়ে-অসময়ে তারা প্রস্রাব করে দিতে পারে। এতে অনেক সময় বাসার ফ্লোর বা মেঝেতে অনেক  নাপাকি পড়ে বা লেগে যায়। যেসব বাসায় ছোট বাচ্চা আছে, সেখানে এটি নিত্যাকার ঘটনা। ফলে বাসায় খালি পায়ে হাঁটতে বা নামাজ আদায় নিয়ে অনেকে সন্দেহ ও শঙ্কায় ভোগেন।

যাদের বাসায় কিংবা বাড়িতে এই ধরনের সমস্যা প্রায়-ই হয়ে থাকে। জানতে হবে ইসলাম কী বলে? এখানে মূল বিষয় মেঝে বা ফ্লোর পবিত্র হওয়া। অর্থাৎ মেঝেতে কোনো নাপাকি পড়ে মেঝে নাপাক হয়ে গেলে— তা কীভাবে তা পবিত্র করতে হবে?

এছাড়াও একজন প্রশ্ন করেছেন- আমার ভাইয়ের ছোট বাচ্চা ছেলে রয়েছে। সে যদি ফ্লোরে প্রস্রাব করে, তাহলে আমরা শুকনা নেকড়া দিয়ে পরিষ্কার নিলে কি চলবে? যদি না চলে, তাহলে তো ওই স্থান থেকে নাপাকি ঘরের বিভিন্নস্থানে ছড়িয়েছে। এখন আমার কী করা উচিত?

মোট চার পর্যায়ে ঘরের মেঝে বা ফ্লোর পাক-পবিত্র করা যায়:

এক. পাকা ঘরের মেঝের নাপাক স্থানটুকু শুকনা বা ভেজা কাপড় দ্বারা মুছে দেয়ার পর যদি বাতাসে বা রোদে শুকিয়ে নাপাকির চিহ্ন দূর হয়ে যায়, তাহলে ওই স্থানটুকু পবিত্র হয়ে যাবে। তবে নাপাকির সামান্য চিহ্ন থাকলে তা পাক হবে না। এজন্যে প্রথমে প্রস্রাবটুকু মুছে নিয়ে— একটি পাক কাপড় ভিজিয়ে উক্ত জায়গাটা প্রাথমিকভাবে ২/৩ বার মুছে নিবে, যাতে শুকিয়ে যাওয়ার পর প্রস্রাবের দু্র্গন্ধ বা চিহ্ন না থাকে। (আবু দাউদ, হাদিস : ১/৫৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া : ১/৪৪; আহসানুল ফাতাওয়া : ২/৯২)

দুই. পাকা মেঝে বা ফ্লোর নাপাক হয়ে গেলে, তাৎক্ষণিকভাবে তা পাক করার সহজ পদ্ধতি হলো- নাপাক জায়গায় পানি ঢেলে ভালোভাবে ঝাড়ু দিয়ে ধুয়ে দেবে। এভাবে তিনবার ধুয়ে নিলে— জায়গাটা পাক হয়ে যাবে। আর যদি পানি গড়িয়ে বের করার ব্যবস্থা না থাকে, তাহলে প্রথমে একটি শুকনো বা ভেজা কাপড় দিয়ে প্রস্রাবটুকু মুছে দিবে। অতঃপর কাপড়টি ভাল করে ধুয়ে নাপাক জায়গাটা আবার মুছে দেবে। এক্ষেত্রে প্রতি বারই নতুন পানি ব্যবহার করবে। এভাবে তিনবার পাক কাপড় দিয়ে মুছে শুকিয়ে নিলে— জায়গাটা পাক-পবিত্র হয়ে যাবে। (রদ্দুল মুহতার, ১/৩১৩; ফাতাওয়া আলমগিরি : ১/৪৩; হিন্দিয়া : ১/৪৩-৪৪)

তিন. উল্লেখিত নিয়মাবলীর কোনো এক নিয়মে নাপাক জায়গা পবিত্র হয়ে যাওয়ার পর— সেখানে ভেজা পায়ে হাঁটলে, পা নাপাক হবে না। আর যদি উক্ত জায়গাটি উপরে বর্ণিত পদ্ধতিতে পবিত্র করা না হয়ে থাকে, তাহলে সেখানে খালি পায়ে হাঁটলে— নাপাক হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে নামাজ পড়তে হলে, পা দ্বিতীয়বার ধুয়ে নিতে হবে। (হালবি কাবির : ১৫৬; আদ-দুররুল মুখতার : ১/৩১১; খাইরুল ফাতাওয়া : ২/১৫০; ফাতাওয়া দারুল উলুম : ১/৩৩২)

চার. ইসলামি শরিয়াহ মতে মেঝেতে কোনো শুষ্ক নাপাকি পড়লে, তা সরিয়ে মেঝে মুছে ফেলতে হবে। তারপর তা শুকিয়ে গেলে ও নাপাকির প্রভাব নিশ্চিহ্ন হয়ে গেলে— সেই মেঝে নাপাকি থেকে পাক হয়ে যাবে। তারপর  খালি পায়ে বা ভেজা পায়ে ওই জায়গায় চলাচলে কোনো অসুবিধা নেই।

জ্ঞাতব্য যে, সিমেন্টের ফ্লোর ও টাইলস করা ফ্লোরে প্রস্রাব থাকলে, তখন পবিত্র করার জন্য পানি ঢেলে পরিস্কার করা জরুরি নয়। বরং ওই স্থান শুকিয়ে গেলেই তা পবিত্র হয়ে যাবে। (কিন্তু পানি দিয়ে মুঝে বা অন্যভাবে পরিস্কার করা উত্তম। আল্লাহ তাআলা অধিক পবিত্রতা পছন্দ করেন।) তবে হ্যাঁ, যদি দৃশ্যমান কোনো নাপাকি লেগে থাকে, তাহলে তা সরিয়ে মেঝে মুছে ফেলতে হবে। তারপর তা শুকিয়ে গেলে ও নাপাকির প্রভাব নিশ্চিহ্ন হয়ে গেলে— সেই স্থান নাপাকি থেকে পবিত্র হয়ে যাবে। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা : ১/৪৩১; ইলাউস সুনান : ১/৩৯৬;  নাসবুর রায়া : ১/২৭৭; ফাতাওয়া খানিয়া : ১/২৫; খুলাসাতুল ফাতাওয়া : ১/৪২)

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর