• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

মরক্কোয় হাকিমিদের রাজকীয় সংবর্ধনা

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ২২ ডিসেম্বর ২০২২  

কাতার বিশ্বকাপে মরক্কোর অর্জন দেশটির ফুটবলে সোনার হরফে লেখা থাকবে। প্রথম আফ্রিকান দেশ হিসেবে সেমিফাইনাল খেলে ফেরা আশরাফ হাকিমি, ইয়াসিন বুনুদের রাজকীয় সম্মানে বরণ করে নেয়া হয়েছে। রাজধানী রাবাতে এদিন সকালের সূর্যটা ছিল একটু অন্যরকম। জমকালো আয়োজনে ছিল অন্যরকম দ্যুতিময় ও ঝলমলে। আলোক শিখা জ্বালিয়ে, শালীন উল্লাসে হাজারও সমর্থক ছিলেন মাতোয়রা।

রাজপথে ছাদখোলা বাসে হাত নেড়ে ভক্তদের অভিবাদনের জবাব দিয়েছে ওয়ালিদ রেদ্রাগুয়ের দল। এ্যাটলাস লায়ন্সদের পরে রাজকীয় সংবধা দেন রাজা ষষ্ঠ মোহাম্মদ। তিনি আশা প্রকাশ করেন ২০২৬ বিশ্বকাপে আরও শক্তিশালী দল হিসেবে আবির্ভূত হবে মরক্কো, ‘আপনারা আমাদের গর্ব। দেশের জন্য অনেক বড় সম্মান বয়ে এনেছেন। ২০২৬ বিশ্বকাপে আমরা আরও একধাপ এগিয়ে যাব। ফুটবলার, কোচ ও স্টাফ সবাইকে অশেষ ধন্যবাদ।’ বলেন রাজা মোহাম্মদ।
কাতার বিশ্বকাপে সৃষ্টিকর্তা মরক্কোকে দুহাত ভরে দিয়েছে। আফ্রিকার প্রথম দেশ হিসেবে সেমিফাইনালে উঠে ইতিহাস গড়েছেন রোমাইন সাসিস, হাকিম জিয়েশরা। বিশ্বের সেরা ৩২টি দলের মধ্যে শীর্ষ চারে জায়গা করে নেয়া সহজ নয়। গ্রুপ পর্ব থেকে শুরু করে কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত প্রতিটি ম্যাচেই মূর্তিমান আতঙ্ক হয়ে প্রতিপক্ষের সমনে হাজির হয় মরক্কো।

সিংহের গর্জনে একের পর এক ধরাশায়ী হয়েছে বেলজিয়াম, স্পেন ও পর্তুগালের মতো ইউরোপের পাওয়ার হাউস। সেমিফাইনালে ফ্রান্সের কাছে ২-০ গোলের হারে থামে তাদের স্বপ্নযাত্রা। ক্রোয়েশিয়ার কাছে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে ২-১ এর হারে চতুর্থ হয়েই মরক্কো শেষ করে কাতার বিশ্বকাপ। এ অর্জন মুসলিম অধ্যুষিত আফ্রিকান দেশটির মানুষের কাছে বিশ্বজয়ের সমান।

কারণ মোহাম্মদ সালাহ, সাদিও মানেদের মতো তারকা নিয়েও আফ্রিকার কোনো দেশ যার পারেনি সেটিই তার করে দেখিয়েছে। মরক্কোর মানুষের কাছে তাই ওয়ালিদ রেগরাগুইয়ের শিষ্যরা এক একজন দিগি¦জয়ী বীর। ফুটবলে নতুন আশার স্বপ্ন বোনা একেকজন কারিগর।
রাবাতে এক সমর্থক বলেন, ‘সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ। ওরা নিরাপদে দেশে ফিরেছে। আমরা ওদের নিয়ে গর্বিত। ওরা বিশ্বকাপে যা করেছে তা মরক্কোর মানুষ সারাজীবন মনে রাখবে। আরেক জনের অনুভূতি, ‘ওরা বিশ্বকাপ জয় করেনি তো কী হয়েছে! চতুর্থ হওয়াটাই আমাদের কাছে বিশ্বকাপ জয়। আমরা বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছি আমাদের শক্তিমত্তা। আমরা থেমে যাব না।

আগামী বিশ্বকাপে অন্য এক মরক্কোকে দেখবে ফুটবল দুনিয়া।’ ২০২৬ বিশ্বকাপের জন্য নতুন রূপে নিজেদের প্রস্তুত করবে বলেও ফুটবলারদের নিয়ে আশার বীজ বুনছেন এই স্বপ্নবাজ সমর্থকরা। মরক্কো কোচ বলেন, ‘আমরা বুঝতে পারি, এরই মধ্যে মহান কিছু অর্জন করতে পেরেছি। আর অবিশ্বাস্য এই অর্জনের জন্য আমি আমার শিষ্যদের নিয়ে গর্বিত। ওরা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত হাল ছাড়েনি। বিশ্ববাসীকে দেখিয়ে দিয়েছে, নিজেদের ওপর বিশ্বাস্য ও অদম্য মানসিকাতায় কী হতে পারে। বিশ্বজুড়ে সমর্থকদেরও ধন্যবাদ। তারা আমাদের প্রাণ খোলা সমর্থন দিয়ে এসেছে। কাতার বিশ্বকাপ মরক্কো ফুটবলের এগিয়ে যাওয়ার সোপান হয়ে থাকবে।’
বিশ্বকাপ যত এগিয়ে গেছে, আফ্রিকা ও আরব বিশ্বের দেশগুলোতে মরক্কোর জনপ্রিয়তা কেবলই বেড়েছে। দলটির জন্য তারা গলা ফাটিয়েছেন, যেন নিজেদের দেশের জাতীয় দল জিতেছে, যেন মরক্কোই তাদের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছে। পুরো মুসলিম, আফ্রিকান, অ্যারাবিয়ান জাতিগোষ্ঠীর কাছেই সাফল্যের প্রতীক হয়ে উঠেছে মরক্কো।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর