• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

রফতানিতে নতুন স্বপ্ন

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২  

বর্তমানে দেশের ৯৮ শতাংশ পণ্য রফতানিতে শুল্ক সুবিধা দিচ্ছে চীন। সংখ্যার হিসাবে মোট ৮ হাজার ৯৩০টি বাংলাদেশী পণ্যকে বিনা শুল্কে প্রবেশাধিকার দিচ্ছে দেশটি। যার মধ্যে তৈরি পোশাকের সব পণ্যই রফতানিতে বিনা শুল্কের সুবিধা পাচ্ছে। এরই মধ্যে দেশের ব্যাংকগুলোকে চীনের মুদ্রা ইউয়ানে (সিএনআই) এ্যাকাউন্ট খোলার অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সঙ্গে চীনা মুদ্রা ইউয়ানে অনুমোদিত ডিলার (এডি) শাখার মাধ্যমে বৈদেশিক লেনদেনও নিষ্পত্তি করা যাবে বলে নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।


এসব সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মতো বাংলাদেশের বড় রফতানি বাজার চীন হতে পারে বলে মনে করছেন রফতানিকারক ও অর্থনীতি বিশ্লেষকরা। এ জন্য সরকারী-বেসরকারী খাত মিলে একটি স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন তারা। সম্প্রতি তীব্র ডলার সঙ্কটের কারণে বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিকল্প মুদ্রা ব্যবহারের বিষয়টি আলোচনায় আসে। বিশ্বের ৫টি দেশের মুদ্রাকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ ‘হাই ভ্যালু কারেন্সি’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। চীনের ইউয়ান তাদের অন্যতম।


আইএমএফের কারেন্সি বাস্কেটে ইউয়ান স্বীকৃতি পেয়েছে ২০১৬ সালে। এরপর থেকে আইএমএফের পর্যালোচনায় মুদ্রা হিসেবে ইউয়ান আগের চেয়ে শক্তিশালী হয়েছে। এদিকে চীন হচ্ছে বাংলাদেশের শীর্ষ আমদানিকারক দেশ। বাংলাদেশ প্রতি বছর চীন থেকে ১৪ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলারের মতো পণ্য আমদানি করে। কিন্তু এর বিপরীতে চীনে বাংলাদেশের রফতানি এখনও এক বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারেনি। আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সবসময় ডলার ব্যবহার করে আসছে। এই বাস্তবতায় গত বৃহস্পতিবার দেশের ব্যাংকগুলোকে চীনের মুদ্রা ইউয়ানে এ্যাকাউন্ট খোলার অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

একই সঙ্গে অনুমোদিত ডিলার (এডি) শাখার মাধ্যমে বৈদেশিক লেনদেনও নিষ্পত্তি করতে পারবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের আমদানি বাণিজ্য বাড়ায় ২০১৮ সালে ইউয়ানে লেনদেন ও এডি ব্যাংকগুলোকে দায় নিষ্পত্তির জন্য হিসাব খোলার সুযোগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। আগের সার্কুলারের সুযোগ আরও বড় পরিসরে করতে নতুন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) রিজার্ভ মুদ্রা হিসেবে মর্যাদা পায় বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনের ইউয়ান।


মার্কিন ডলার, ইউরো জোনের একক মুদ্রা ইউরো, জাপানি ইয়েন ও ব্রিটিশ পাউন্ড স্টার্লিংয়ের পর আইএমএফের পঞ্চম রিজার্ভ মুদ্রা ইউয়ান। বিশ্বব্যাপী কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো যখন তাদের রিজার্ভে ইউয়ানের পরিমাণ বাড়াচ্ছে তখনই দেশের ব্যাংকগুলোকে এ সুযোগ দিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
জানতে চাইলে সাবেক ব্যাংকার এবং পর্যবেক্ষক নুরুল আমিন বলেন, ইউয়ান হচ্ছে এমন এটি মুদ্রা যেটি বাংলাদেশ এবং চীন পরস্পরের সঙ্গে বাণিজ্যের জন্য ব্যবহার করতে পারে। চীনের সঙ্গে ইউয়ানে লেনদেনের অর্থ হচ্ছে, ডলার সঙ্কটকে পাশ কাটিয়ে আপনি লেনদেন করতে পারবেন, যেটা দুটো দেশ গ্রহণ করবে। তবে চাইলেই ইউয়ানের মাধ্যমে দ্রুত লেনদেন করা যাবে কিনা সেটি নিয়ে সংশয় আছে। এর একটি বড় কারণ হচ্ছে, ইউয়ানের দাম কীভাবে নির্ধারিত হবে। বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা আসে রফতানি এবং রেমিটেন্স থেকে। দুটোই আসে ডলারে। তা ছাড়া চীনে যেহেতু বাংলাদেশের রফতানি ১ বিলিয়ন ডলারেরও কম সেহেতু ইউয়ানের যোগান বেশি থাকবে না। নুরুল আমিন বলেন, আমাদের যদি এক্সপোর্ট বেশি হতো তাহলে ইউয়ান বেশি জমা থাকত। তবে চীনের সঙ্গে মুদ্রা বিনিময়ের মাধ্যমে লেনদেন করা সম্ভব। সে ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা দেখবে টাকার মূল্যমানের সঙ্গে ইউয়ানের মূল্যমান কত হয়। বাংলাদেশের একজন শীর্ষস্থানীয় নিটওয়্যার রফতানিকারক এবং বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স এ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ফজলুল হক বলেন, চীনের সঙ্গে ইউয়ানে বাণিজ্য করতে চাওয়া ভাল।

কারণ, চীনও ইউয়ানে লেনদেন করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। তবে বিষয়টি কার্যকরভাবে করা যাবে কিনা সেটি নিয়ে সন্দেহ আছে। তিনি বলেন, রফতানিকারকদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে তারা কত ডলার আয় করছেন। বিষয়টিকে তারা সবসময় ডলারের ভিত্তিতেই হিসাব করেন। যারা রফতানি করবে তারা হয়ত ইউয়ানে পেমেন্ট নাও চাইতে পারেন।
দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ার কয়েকটি দেশ সফরের অংশ হিসেবে ৬ আগস্ট ১৭ ঘণ্টার জন্য ঢাকায় আসেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং। সফরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাত করেন তিনি। ওই সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে আরও ১ শতাংশ পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশের সুযোগ দেয়ার ঘোষণা দেন। যা গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর করা হয়।


এর আগে ২০২০ সালের ১ জুলাই থেকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটির দেয়া আগের শুল্কমুক্ত সুবিধার তালিকায় তৈরি পোশাক খাতের নিট ও ওভেনের প্রায় সব আইটেম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। তবে তখন বাংলাদেশের প্রধান এ রফতানি পণ্যের কিছু আইটেমে চীন পুরো শুল্ক তুলে দেয়নি। নতুন ১ শতাংশের আওতায় এবার তৈরি পোশাকের সব আইটেম বিনা শুল্কের সুবিধা দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া তালিকায় আরও থাকছে বাদাম তেল, সূর্যমুখী তেল ও কটন সিড অয়েল, পলিইথিলিন ও পলিপ্রোপিলিনের মতো রাসায়নিক ও জুতাসহ বিভিন্ন পণ্য।


এর আগে বাংলাদেশের ৯৭ ভাগ পণ্যকে নিজেদের বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশের সুযোগ দেয় চীন। নতুন করে ১ শতাংশসহ মোট ৮ হাজার ৯৩০টি পণ্যকে বিনা শুল্কে প্রবেশাধিকার দেয়া হয়। চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরে আরও ১ ভাগ পণ্যকে শুল্কমুক্ত প্রবেশের সিদ্ধান্তকে সেই সময় ‘সুসংবাদ’ হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। ওই সময় তিনি আভাস দিয়েছিলেন, তৈরি পোশাকের সব পণ্য এবার নতুন শুল্কমুক্ত প্রবেশের সুযোগ পাওয়া পণ্যের মধ্যে থাকতে পারে।
বাংলাদেশের রফতানি বাণিজ্যের সবচেয়ে বড় খাত তৈরি পোশাক। বিশ্বে পোশাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম রফতানিকারকও বাংলাদেশ। ২০২১-২২ অর্থবছরে মোট রফতানিতে ৮২ শতাংশই ছিল তৈরি পোশাক; যা টাকার অঙ্কে ৪২ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার। চীনের আগের দেয়া ৯৭ শতাংশ শুল্কমুক্ত সুবিধা পেয়েও চীনের বাজারে রফতানি বাড়েনি বাংলাদেশের। গত ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশটিতে ৬৮ কোটি ৩৪ লাখ ডলারের বিভিন্ন ধরনের পণ্য রফতানি হয়েছিল, যা ছিল আগের অর্থবছরের চেয়ে মাত্র দশমিক ৪১ শতাংশ বেশি।


অথচ গত অর্থবছরে বাংলাদেশের রফতানি খাতে সার্বিক প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৩৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপের দেশগুলোসহ সব দেশেই বেশ ভাল প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। ২০২১-২২ অর্থবছরে চীনে ওভেন পোশাক রফতানি করে ১৩ কোটি ৮১ লাখ ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ। নিট পোশাক রফতানি থেকে এসেছিল ৮ কোটি ৪২ লাখ ডলার। এ ছাড়া চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য থেকে ৯ কোটি ৭৯ লাখ ডলার, হোম টেক্সটাইল থেকে ৭৪ লাখ ডলার, পাদুকা থেকে ১ কোটি ৭৭ লাখ ডলার, পাট ও পাটজাতপণ্য থেকে ১৭ কোটি ডলার এবং প্লাস্টিক দ্রব্য রফতানি করে ১ কোটি ৪৫ লাখ ডলার এসেছে।

তবে ৯৮ ভাগ শূন্য শুল্ক সুবিধায় বিভিন্ন ধরনের মৌলিক চামড়াজাত পণ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশী চামড়া শিল্পের রফতানিকারকদের জন্য যা ভাল খবর বলে মনে করা হচ্ছে। এ ছাড়া নতুন সুবিধার আওতায় বাংলাদেশ থেকে আম, কাঁঠাল, পেয়ারা, মধু ও গরুর মাংসও চীনের বাজারে বিনা শুল্কে প্রবেশের সুযোগ পাবে।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য মতে, চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে চীনে ৪ কোটি ৮১ লাখ ডলারের পণ্য রফতানি করেছেন বাংলাদেশের রফতানিকারকরা। গত বছরের জুলাই যে করেছিলেন ৪ কোটি ৯১ লাখ ২০ হাজার ডলার। তার আগের বছরে একই মাসে এই অঙ্ক ছিল ৬ কোটি ৪১ লাখ ৩০ হাজার ডলার। সে কারণে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েই চলেছে। বর্তমানে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি ১২ বিলিয়ন ডলারের বেশি। বাংলাদেশের মোট আমদানির প্রায় ২০ শতাংশ আসে চীন থেকে, যার বেশির ভাগই তৈরি পোশাক এবং অন্যান্য শিল্প খাতের কাঁচামাল।


জানতে চাইলে বাংলাদেশের নিট পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘ভারতের বাজারে আমাদের রফতানি যেভাবে বাড়ছে, চীনের বাজারেও আমরা যদি সেভাবে প্রবেশ করতে পারি, তা হলে আর আমাদের পেছনের দিকে তাকাতে হবে না। ইউরোপ-আমেরিকার ওপর নির্ভরশীলতা থেকে বেরিয়ে আসতে পারব। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে পোশাক রফতানি থেকে ১০০ বিলিয়ন ডলার আয়ের যে লক্ষ্য ধরেছি আমরা, সে স্বপ্নও সফল হবে।’
গত কয়েক দশক ধরে বিশ্ববাজারে পোশাক রফতানিতে দাপট দেখিয়ে চলেছে চীন। কিন্তু সেদিন আর নেই; যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে সেই দাপট হারাতে বসেছে দেশটি। যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানিতে ২০১৫ সালে চীনের অংশ ছিল প্রায় ৩৬ শতাংশ। ২০২১ সালে তা ২৪ শতাংশে নেমে এসেছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রফতানি গত কয়েক বছর ধরে বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী ভিয়েতনামেরও বেড়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধে জড়ানোর পর থেকেই একটু একটু করে চীনের তৈরি পোশাক রফতানি কম ছিল। তবে চীনের উহানে করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর সেটি ব্যাপকভাবে কমে যায়। বাংলাদেশের রফতানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি বাংলাদেশ চেম্বারের বর্তমান সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, ‘চীন সরকার নতুন করে ১ শতাংশসহ মোট ৯৮ শতাংশ পণ্যে যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিয়েছে, তাতে সব ধরনের পোশাক পণ্য রয়েছে। এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে চীনে আমাদের পোশাক রফতানি অনেক বাড়ানো সম্ভব।

দুই দেশের মধ্যে বর্তমানে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজ করছে, সেটা যদি অব্যাহত থাকে তা হলে চীন বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের একটা বড় বাজার হতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘চীন তৈরি পোশাক খাতের ব্যবসা থেকে ধীরে ধীরে অন্যান্য খাতে সরিয়ে নিচ্ছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে ইউরোপ ও আমেরিকায় তাদের রফতানি কমে যাওয়ায় চীন এখন পোশাক খাতের দিকে নজর কম দিচ্ছে। নতুন করে তারা এ খাতে বিনিয়োগ করছে না।

এই সুযোগটিই বাংলাদেশ কাজে লাগাতে পারে। গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে পোশাক খাতে প্রচুর বিনিয়োগ হয়েছে। বিশ্ব পরিম-লে আমাদের পোশাকের ভাবমূর্তি বেড়েছে।আমরা এখন কম দামি পোশাকের পাশাপাশি দামী পোশাকও উৎপাদন করছি। চীন পোশাক উৎপাদন কমিয়ে দিলে দেড়শ কোটি মানুষের দেশে পোশাকের ব্যাপক চাহিদা দেখা দেবে। আমাদের সেই সুযোগটিই নিতে হবে।

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, করোনার আগের বছর ২০১৯ সালে একক দেশ হিসেবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্রে ২ হাজার ৪৮৮ কোটি (২৪.৮৮ বিলিয়ন) ডলারের পোশাক রফতানি করে চীন। ওই বছর যুক্তরাষ্ট্রে চীনের রফতানি কমেছিল ৯ শতাংশ। ২০২০ সালে সেই রফতানি কমে ২০ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ওয়ার্ল্ড ট্রেড স্ট্যাটিসটিকস রিভিউ ২০২১ প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২০ সালে চীন সবচেয়ে বেশি ১৪ হাজার ২০০ কোটি ডলারের পোশাক রফতানি করে। তার আগের বছরের চেয়ে দেশটির পোশাক রফতানি ৭ শতাংশ কমেছে।

তার পরও চীন বিশ্বের মোট পোশাক রফতানি ৩১ দশমিক ৬ শতাংশ দখলে রেখেছিল। ২০২০ সালে ভিয়েতনাম ২ হাজার ৯০০ কোটি ডলারের পোশাক রানি করেছে। আর বাংলাদেশ রফতানি করেছে ২ হাজার ৮০০ কোটি ডলারের পোশাক। অথচ তার আগের বছর বাংলাদেশের রফতানি ছিল ৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলার। তখন ভিয়েতনামের রফতানি ছিল ৩ হাজার ১০০ কোটি ডলার। ওয়ার্ল্ড ট্রেড স্ট্যাটিসটিকস রিভিউ ২০২২ প্রতিবেদন এখনও প্রকাশ করেনি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা। ওই প্রতিবেদন পাওয়া গেলে ২০২১ সালের তথ্য জানা যাবে।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর