• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

উল্লাপাড়ায় লোক লজ্জার ভয়ে এক নারীর আত্মহত্যার অভিযোগ

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ৪ জুলাই ২০২০  

লজ্জা ও অপমান সইতে না পেরে উল্লাপাড়ার দুর্গানগর ইউনিয়নের ভাদালিয়াকান্দি গ্রামে সুফিয়া খাতুন (১৯) নামের এক নারী বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি এই গ্রামের আনোয়ার হোসেনের মেয়ে। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার  ভোরে। এ ব্যাপারে সুফিয়ার বাবা শুক্রবার সন্ধ্যায় উল্লাপাড়া মডেল থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনার একটি মামলা দায়ের করেছেন। 

 

আনোয়ার হোসেন অভিযোগ করেন, তার মেয়ে সুফিয়ার ১ বছর আগে বিয়ে হয়। কিন্তু স্বামীর সঙ্গে মতবিরোধের কারণে কিছুদিন আগে তাদের বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর সে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় নতুন করে লেখাপড়া শুরুর জন্য ৯ম শ্রেণিতে ভর্তি হয়। মাদ্রাসায় পড়াশোনাকালে উপজেলার নন্দীবেড়া গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে পলাশ হোসেন (২০) এর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই সুবাদে পলাশ মাঝে মাঝেই তার বাড়িতে আসতো ও কথা বলত। গত বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) মধ্যরাতে কথিত পলাশ তার দুই সহযোগীকে নিয়ে সুফিয়াকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে নৌকায় করে সামনের মাঠের দিকে চলে যায়। বিষয়টি টের পেয়ে আনোয়ার হোসেন ও তার ভাই আফছার আলীকে নিয়ে চিৎকার করে গ্রামের কিছু লোকজনসহ নৌকা থামানোর চেষ্টা করে। কিন্তু নৌকা না থামালে তারা পাশের রাস্তা দিয়ে দৌড়ে কিছুটা এগিয়ে গিয়ে পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে নৌকাটি ধরে ফেলে। এসময় পলাশ ও তার এক সহযোগী আল আমিন (বিশা) কে নিয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও পলাশের অপর সহযোগী জাহিদুলকে লোকজন ধরে আটক করে এবং সুফিয়াকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে। তারা উল্লাপাড়া মডেল থানায় খবর দিলে পুলিশ দ্রæত ঘটনাস্থলে গিয়ে আটক জাহিদুলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে। এদিকে সুফিয়াকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর সে গোপনে বিষ পান করে । তাকে রাতেই গুরুতর অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। শুক্রবার ভোরে সেখানে তার মৃত্যু হয়। 

 

উল্লাপাড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক কুমার দাশ জানান, নিহত সুফিয়ার বাবা উল্লাপাড়া থানায় তার মেয়েকে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে কথিত পলাশ হোসেন এবং একই এলাকার বাসিন্দা পলাশের সহযোগী আল আমিন (বিশা) ও পুলিশের হাতে আটক জাহিদুল ইসলামকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ সুফিয়ার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। একই সঙ্গে জনতার হাতে আটক জাহিদুল ইসলামকেও আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অপর আসামীদের গ্রেফতারের জন্য চেষ্টা চলছে। ওসি আরো জানান, লোকলজ্জার ভয়ে সুফিয়া আত্মহত্যার পথ বেঁচে নিয়েছে বলে আপাতঃ দৃষ্টিতে পুলিশ ধারনা করছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। 

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর