• মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৩ ১৪৩১

  • || ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

এই শীতে বেগুনের সাথে ‘বিষ’ যাচ্ছে সারাদেশে

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯  

ফরিদপুরের বেগুন চাষিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউ গাছ থেকে বেগুন তুলছেন, কেউ তা পরিষ্কার করছেন আর কেউ বস্তায় ভরছেন। 

 

এরপর পাইকারদের কাছে তারা বিক্রি করে দেন। কিন্তু পাইকাররা এসব বেগুনে মেশাচ্ছেন ফরমালিন (বিষ)। আর এ ফরমালিনযুক্ত বেগুন দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠাচ্ছেন তারা।

পাইকারদের দাবি, ফরমালিন মেশালে দীর্ঘ সময় টাটকা থাকে বেগুন। শুধু তাই নয়, ফরমালিন না মেশালে গাছ থেকে ছেঁড়ার পরও বেগুনে পোকা ধরার আশঙ্কা থাকে। তাই ফরমালিন মেশানো হয়।

 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে সদরপুরে বেগুনের আবাদ হয়েছে ৪৮৬ হেক্টর জমিতে। যা থেকে উৎপাদন হবে ১১ হাজার ১৭৮ মেট্রিক টন।

 

উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউপির শৈলডুবি, মাঠ শৈলডুবি, আবুলের মোড়, বাঁধানো ঘাটসহ বিভিন্ন এলাকায় ক্ষেতের গাছ থেকে বেগুন তুলছেন চাষিরা। আর এ কাজে সহযোগিতা করছেন গৃহিণীরাও। বেগুন তোলার পর ক্ষেতেই পাইকারদের কাছে বিক্রি কেরে দেন তারা। এরপরই শুরু হয় পাইকারদের কাজ।

 

ক্ষেতের পাশেই পাইকাররা এসব বেগুন একটি স্থানে স্তূপ করেন। এরপর সেসব বেগুন ফরমালিন মেশানো ড্রামের পানিতে চুবিয়ে বস্তায় ভরেন।

 

বেগুন চাষি আবু বাকার বলেন, বেগুনে মাত্রাতিরিক্ত পোকার আক্রমণ হয়। এ পোকা দমনে প্রতি সপ্তাহে বেগুন গাছে কীটনাশক দিতে হয়। বেগুন তোলার পর আমরা পাইকারের কাছে বিক্রি করে দেই।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পাইকার জানান, টাটকা ও দীর্ঘদিন সংরক্ষণের জন্য বেগুনে ফরমালিন দেয়া হচ্ছে। পরে সেগুলো সারাদেশে পাঠানো হয়। এতে দামও ভালো পাওয়া যায়।

 

তিনি আরো জানান, চাষিদের কাছ থেকে মণ দরে সর্বোচ্চ এক হাজার টাকা করে বেগুন কেনা হয়। পরে ফরমালিন মিশিয়ে প্রকারভেদে ১২শ’ থেকে ১৫শ’ টাকা মণ বিক্রি করা হয়।

 

শৈলডুবি বাজারে ঢাকা থেকে আসা ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান বলেন, শৈলডুবির বেগুনের কদর রয়েছে দেশের বিভিন্ন বাজার ও হাটে। এ অঞ্চলের বেগুন দীর্ঘদিনেও পচে না। তাই এখান থেকে বেগুন কিনে ঢাকার কাওরান বাজার, শ্যামবাজার, যাত্রাবাড়ী, দোহার বাজার, নারিশা বাজার, কার্তিকপুর, শ্রীনগর, মাদারীপুর, বরিশালসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়।

 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, শৈলডুবির বেগুন চাষিদের বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেয়া হয়। এছাড়া বেগুনের ক্ষেতগুলো বিশেষ নজরে রাখেন কৃষি কর্মকর্তারা। যেকোনো সমস্যায় দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হয়। তাই চাষিরা বেগুন চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।

 

তিনি আরো বলেন, পোকামুক্ত রাখতে বেগুন ক্ষেতে সহনশীল মাত্রায় কীটনাশক দেয়া হয়। কিন্তু ফরমালিন মেশানোর বিষয়টি জানা নেই।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর