• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

করোনা ভাইরাসের সংকট কেটে গেলে বেশি ব্যবসা পাবে বাংলাদেশ

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ৬ জুন ২০২০  

বৈশ্বিক মহামারি করোনা পরিস্থিতিতে চীনসহ কয়েকটি দেশ থেকে বিনিয়োগ স্থানান্তরের ঘটনা ঘটছে। এই পরিস্থিতিতে বিদেশি বিনিয়োগ আনতে নতুন করে তৎপরতা শুরু করেছে শেখ হাসিানার সরকার। বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, অনেক বিনিয়োগ এখন বাংলাদেশে আসতে পারে। এ পরিস্থিতিতে বিদেশি বিনিয়োগ আনতে একটি কমিটি গঠন করেছে সরকার। কমিটির সুপারিশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পেশ করা হবে। বিদেশি বিনিয়োগ টানতে প্রতিযোগী বিভিন্ন দেশ এ মুহূর্তে কোনো ধরনের তৎপরতা চালাচ্ছে এবং উদ্যোক্তাদের কী কী সুবিধা দিচ্ছে সে বিষয়েও নজর রাখা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার পোশাক শ্রমিকদের করোনাভাইরাস পরীক্ষায় বিশ্বমানের একটি ল্যাবের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

 

করোনায় পোশাক খাতের রপ্তানি আদেশ বাতিল এবং ফেরত আসা সম্পর্কে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধানদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছেন। উদ্যোক্তারাও ক্রেতাদের সঙ্গে কাজ করছেন। এ মুহূর্তে আসলে ধৈর্য ধরতে হবে। কারণ ক্রেতারাও পোশাক নিয়ে সমস্যায় আছেন। তবে ধৈর্য ধরে সংকট কাটিয়ে ওঠা গেলে বেশি পরিমাণে ব্যবসা পাবে বাংলাদেশ।

 

বৃহস্পতিবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিজিএমইএ। পোশাক শ্রমিকদের করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য এ ল্যাব স্থাপনে সহযোগিতা করেছে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি। গাজীপুরে চন্দ্রায় ড. ফরিদা হক মেমোরিয়াল জেনারেল হাসপাতালে ল্যাবটির মাধ্যমে প্রতিদিন ৪০০ নমুনা পরীক্ষা করা যাবে। করোনার সন্দেহে থাকা শ্রমিকদের নমুনা সংগ্রহ করা হবে কারখানায় এসে। পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হলে আইসোলেশনে রেখে শ্রমিকদের চিকিৎসা দেওয়া হবে। চিকিৎসার ব্যয় বহন করবে কারখানা কর্তৃপক্ষ। পর্যায়ক্রমে চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ এবং ঢাকায় এ ধরনের আরও ল্যাব স্থাপন করা হবে।

 

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহেদ মালেক বলেন, যে কোনো পরিস্থিতিতে মানুষের জীবন বাঁচাতে হবে। একই সঙ্গে জীবিকাকেও অগ্রাধিকার দিতে হবে। মাস্ক পরার পাশাপাশি প্রয়োজন হলে পরীক্ষা করা এবং সময়মতো চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

 

প্রধানমন্ত্রীর শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, চীনে থাকা বিনিয়োগ বাংলাদেশে স্থানান্তরে সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোক্তাদের অনুরোধ করা হয়েছে। কয়েকটি দেশের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। করোনায় অন্য সব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মতো বিনিয়োগ কার্যক্রমও ব্যাহত হয়েছে। তবে আবারও এসব কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ব্যবসা সহজ করার কার্যক্রম আবার শুরু হয়েছে।

 

বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক বলেন, বাতিল হওয়া রপ্তানি আদেশের ২৬ শতাংশ ফেরত এসেছে। এতে কারখানাগুলোর উৎপাদন ক্ষমতার মাত্র ৫৫ শতাংশ কাজ চলছে। ফলে বাধ্য হয়ে জুন-জুলাই থেকে শ্রমিক ছাঁটাইয়ে যেতে হবে। এটাই বাস্তবতা। কারণ ৫৫ শতাংশ সক্ষমতা দিয়ে শতভাগ শ্রমশক্তি চালানো যায় না। তবে সরকার এপ্রিল, মে এবং জুন- এই তিন মাসের বেতন পরিশোধে ঋণ সহায়তা দিয়েছে। এ কারণে এ সময়ে কোনো কারখানায় শ্রমিক ছাঁটাই হলে বিজিএমইএ ওই কারখানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। এ পর্যন্ত ২৬৪ জন পোশাক শ্রমিক করোনায় আক্রান্ত হয়েছে বলে তিনি জানান।

 

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, সামজিক দূরুত্বের চাইতে নিরাপদ দূরত্ব রক্ষা করা বেশি জরুরি। আক্রান্ত শ্রমিকদের চিকিৎসা এবং পরিবারের খোঁজখবর রাখার জন্য কারখানা মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি সাংসদ সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, বিজিএমইএর ল্যাবে পোশাক শ্রমিকদের পাশাপাশি খেটে খাওয়া মানুষের পরীক্ষা করানোর সুযোগ রাখতে হবে।

 

আলোচনায় আরও অংশ নেন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি সাংসদ আব্দুস সালাম মুর্শেদী, শ্রম সচিব কেএম আব্দুস সালাম, বস্ত্র খাতের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিটিএমএর সাবেক সভাপতি এ মতিন চৌধুরী, ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. একে আজাদ খান প্রমুখ।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর