• মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৩ ১৪৩১

  • || ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

করোনা ভাইরাসের সংকটে ৩১০০ কোটি টাকা দিচ্ছে ইইউ

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ৪ জুন ২০২০  

 বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশকে ৩৩ কোটি ৪০ লাখ ইউরো সহায়তা করবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় তিন হাজার ১০০ কোটি টাকার সমান। এই অর্থের মধ্যে নয় কোটি ৩০ লাখ ইউরো বাংলাদেশের রপ্তানি খাতের ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের নগদ সহায়তা হিসেবে দেওয়া হবে। ইইউর ঢাকা অফিস এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

 

সহযোগী দেশগুলোতে করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধ এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য ইইউ সম্প্রতি ২০ বিলিয়ন ইউরোর একটি তহবিল চালু করেছে। বাংলাদেশকে ওই তহবিল থেকে প্রাথমিকভাবে এই সহায়তা করা হচ্ছে। প্রয়োজনে আরও সহায়তা করবে ইইউ।

 

ঢাকায় ইইউ রাষ্ট্রদূত রনজে তেরিঙ্ক সাংবাদিকদের বলেছেন, করোনাভাইরাসের প্রভাব কোনো দেশের মধ্যে আটকে নেই। এটা অতিদরিদ্রদের সবচেয়ে বেশি আঘাত করেছে। বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠী, যারা করোনাভাইরাসের কারণে স্বাস্থ্য ও জীবিকার ক্ষেত্রে দুর্দশায় পড়েছে তাদের সহায়তার জন্য ইউরোপীয় দেশগুলো এ অর্থ দিচ্ছে।

 

বাংলাদেশকে দেওয়া সহায়তার মধ্যে ২৬ কোটি ৩০ লাখ ইউরো করোনাভাইরাসের অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাব মোকাবিলায় ব্যয় হবে। এ ছাড়া জার্মান তহবিলের দুই কোটি ইউরোসহ মোট নয় কোটি ৩০ লাখ ইউরো রপ্তানি খাতের ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের নগদ সহায়তা হিসেবে দেওয়া হবে। এতে বাংলাদেশের জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি জোরদার হবে।

 

ফ্রান্সের উন্নয়ন সংস্থা এএফডি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা উদ্যোগ উন্নয়নে ১৫ কোটি ইউরো অনুদান দেবে। এর মধ্যে ছয় কোটি ৪৮ লাখ ইউরো ব্যয় হবে জাতিসংঘ ও এনজিও সহযোগীদের মাধ্যমে কক্সবাজারের স্থানীয় লোকজন ও রোহিঙ্গাদের উন্নয়নে। এর মধ্যে ৫৫ লাখ ইউরো গবেষণা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নয়নে ব্যয় হবে। সাত লাখ ১৪ হাজার ৩৮৩ ইউরো ব্যয় হবে ঢাকা শহরের ও দেশের অন্যান্য এলাকার অতিদরিদ্রদের উন্নয়নে। সরাসরি নগদ টাকা দেওয়া হবে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে। একই সঙ্গে জনসচেতনতা সৃষ্টির কার্যক্রম নেওয়া হবে।

 

বাংলাদেশের রপ্তানি খাতের বড় বাজার ইইউর দেশগুলো। দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকের ৮০ ভাগের গন্তব্য ইউরোপীয় দেশগুলো। করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর ইইউর অনেক ক্রেতা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ থেকে ক্রয়াদেশ বাতিল করেছে। এতে প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন লোকসানে পড়েছে, তেমনি কর্মীদের বেতন ভাতা পাওয়া নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে অনেক কারখানা লে-অফ হয়েছে। অন্যান্য রপ্তানি খাতেও একই পরিস্থিতি।

 

এ পরিস্থিতিতে রপ্তানি খাতের কর্মীদের সময়মতো বেতন দিতে সহায়তা করতে সরকার পাঁচ হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল ঘোষণা করেছে। এখান থেকে রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানগুলো বেতন দেওয়ার জন্য মাত্র ২ শতাংশ সুদে ঋণ নিতে পারবেন। এ অবস্থায় ইইউর এই সহায়তা রপ্তানি খাতের কর্মীদের বিশেষ সহায়তা করবে। তবে জানা গেছে, শুধু ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের এই সহায়তা দেবে ইইউ।

 

ইইউর সহায়তা প্রসঙ্গে পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হক সমকালকে বলেন, রপ্তানি খাতের শ্রমিকদের সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে ইইউ বিজিএমইএর সঙ্গে আলোচনা করেছে। বিজিএমইএর সদস্য কারখানাগুলো মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে কর্মীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করেছে। ইইউ বিজিএমইএর তথ্য ভান্ডার ব্যবহার করবে।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর