• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

মেডিকেলে চান্স পেয়েও ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা শাহিনুরের

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ৯ এপ্রিল ২০২১  

প্রাইভেট পড়িয়ে ও বাবার সঙ্গে দিনমজুরি করে ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস পরীক্ষায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে অদম্য মেধাবী শাহিনুর রহমান। 

 

সে সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার হাটিকুমরুল ইউনিয়নের পাটধারী গ্রামের দিনমজুর খলিলুর রহমান  ও গৃহিনী সেলিনা খাতুনের ছেলে।

 

 বাড়ির ভিটেটুকু ছাড়া আর কোন জমি নেই তাদের। নেই বিকল্প কোন আয়ের উৎস। 

 

মজুরি করে ৫ সদস্যের পরিবার চালান খলিলুর রহমান। তার মেধাবী ছেলে শাহিনুর তার সঙ্গে দিনমজুরি করে এবং দুই একটি প্রাইভেট পড়ায়। 

 

এই অর্থ দিয়ে শাহিনুর এ যাবৎ তার নিজের ও আরো দুই বোনের লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে আসছে। তার বড় বোন সরকারি আকবর আলী কলেজে প্রাণীবিদ্যা বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্রী। ছোট বোন ৭ম শ্রেণিতে পড়ছে। দিনমজুর বাবার পক্ষে এমনিতেই সংসার চালানো দুঃসার্ধ্য। শত প্রতিকুলতার মধ্যে ডাক্তারি পড়ার আবাল্যের লালিত স্বপ্ন পূরণ হলেও দারিদ্র্য তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতবড় সাফল্যের আনন্দ যেন তাদের পরিবারে ¤øান করে দিয়েছে দারিদ্র্য। 

 

শাহিনুর রহমান গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়ে উপজেলার পাগলা বোয়ালিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জেএসসি এবং এসএসসি ও সরকারি আকবর আলী কলেজ থেকে গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করেছে। মেধাবী এই শিক্ষার্থীর এখন মেডিকেল কলেজে ভর্তি হবার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের কোন সংস্থান নেই। ভালো ফল করেও ডাক্তার হবার স্বপ্ন পূরণ হবে কিনা এমন অনিশ্চয়তায় ভুগছে শাহিনুর। 

 

শাহিনুর রহমানের মা সেলিনা খাতুন জানান, ‘ছোটবেলা থেকে সে ভালো ছাত্র। সব পরীক্ষায়ই ছাওয়ালটা প্রথম হয়েছে। টেহার অভাবে তাকে পেরাইভেট পড়াইবার পারি নাই। বাপের সাথে দিন মজুরি কইরা নিজের পড়ালেহা চালাইছে। সে এলাকার ছাওয়াল পাওয়ালেক পেরাইভেট পড়াইছে। সেই টেহা (টাকা) দিয়া নিজে পইড়ছে। অহন ডাক্তারি পড়াইবার টেহা কনে পাই আমরা। মেডিকেলে ভর্তি করতেও অনেক টেহার দরহার। একথা ভাইবা অহন চোখে অন্ধকার দেখতাছি।’

 

শাহিনুর রহমান জানায়, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ভর্তি হলে সে আর কোন কাজ করতে পারবে না। প্রাইভেট পড়ানো সম্ভব কিনা জানেনা সে। এঅবস্থায় কেমন করে পড়ালেখা করবে ভেবে পাচ্ছে না। তার উপর মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতেও অনেক অর্থের প্রয়োজন। সবকিছু মিলিয়ে চরম অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে এখন দিন কাটছে শাহিনুর রহমানের। 

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর