• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

গত তিন মাসে ৭৬২ কোটি টাকার মাছ রফতানি

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ৬ নভেম্বর ২০২০  

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে কয়েক মাস বন্ধ থাকার পর শুরু হয়েছে মাছ রফতানি। চলতি অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে খুলনা বিভাগ থেকে রফতানি হয়েছে ৭৬২.৪৬ কোটি টাকার মাছ। বাগদা, গলদা ও হরিণা চিংড়ির পাশাপাশি রফতানি হয়েছে দেশীয় প্রজাতির মাছও।
সাতক্ষীরা শহরের বড় মাছের বাজার সুলতানপুর। এ বাজারে অর্ধশত প্রজাতির মিঠা ও লোনা পানির মাছের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকে। এ বাজার থেকে প্রতিদিন বেচাকেনা হয় প্রায় ১২-১৫ টন মাছ।

সুলতানপুর বড় বাজারের মাছ ব্যবসায়ী আমির হোসেন জানান, রফতানিতে চিংড়ি এগিয়ে থাকলেও অভ্যন্তরীণ বাজারে ক্রেতাদের মাঝে দেশীয় সুস্বাদু মাছের চাহিদা বেশি। স্বাদ বেশি হওয়ায় খুচরা ক্রেতারা মিঠা পানির চেয়ে লোনা পানির মাছ বেশি ক্রয় করেন। অবশ্য এ বাজারে বিভিন্ন প্রজাতির চিংড়ির পাশাপাশি রুই, কাতল, সিলভার, পাঙ্গাস, তেলাপিয়াসহ অর্ধশত প্রজাতির মাছের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে।

সাতক্ষীরা মৎস্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় ৫৪ হাজার ৯৩৫টি ঘেরে উৎপাদন হয়েছে ২১ হাজার ৪৪১ মেট্রিক টন বাগদা চিংড়ি। এছাড়া ১১ হাজার ৬৬২টি ঘেরে গলদা চিংড়ির উৎপাদন হয়েছে ৬ হাজার ৫৪২.৫ মেট্রিক টন। এসব ঘেরে হরিণা চিংড়ির উৎপাদন হয়েছে ৩ হাজার ৪১০ মেট্রিক টন। এছাড়া অন্যান্য প্রজাতির মাছের উৎপাদন হয়েছে ৩১ হাজার ৩৯৩.৫ মেট্রিক টন।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, মাছের ঘেরগুলোতে উৎপাদন বেড়েছে। এছাড়া করোনাভাইরাসের কারণে কয়েক মাস রফতানি কার্যক্রম বন্ধ থাকায় ঘের ব্যবসায়ীরা মাছ ধরতে পারেননি। এবার ঘেরে পানির পরিমাণ বেশি থাকায় মাছের আকারও বড় হয়েছে। রফতানি শুরু হয়েছে, উৎপাদনও বেড়েছে। করোনায় রফতানি বন্ধের কারণে যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে নিতে পারবেন মাছ চাষিরা।

খুলনা কোয়ালিটি কন্ট্রোল কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে খুলনা বিভাগ থেকে ৯ হাজার ৯২৮ মেট্রিক টন বিভিন্ন প্রজাতির মাছ রফতানি হয়েছে। এর মধ্যে গলদা চিংড়ি রফতানি হয়েছে ৮১০ মেট্রিক টন, বাগদা ৬ হাজার ৫২০ মেট্রিক টন, হরিণা চিংড়ি ২৪২ মেট্রিক টন, কাঁকড়া ১২৫ মেট্রিক টন, বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছ ৭২ মেট্রিক টন। আরো রফতানি হয়েছে মাছের আঁশ ও চিংড়ির খোসা।

আরো জানা গেছে, জুলাই-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে ৭৬২.৪৬ কোটি টাকার মাছ রফতানি হয়েছে। এর মধ্যে গলদা রফতানি হয়েছে ১২৮ কোটি ৯৮ লাখ ৭৬ হাজার ৩২৩ টাকা, বাগদা ৬০৯ কোটি ৮০ লাখ ২০ হাজার ৮৩৮ টাকা, হরিণা চিংড়ি ১৯ কোটি ৩৬ লাখ ৪৯ হাজার ৪৫৪ টাকা ও ৪ কোটি ৩২ লাখ ৩৭ হাজার ৩৬৯ টাকার অন্যান্য প্রজাতির মাছ রফতানি হয়েছে।

সাতক্ষীরা সদরের মাছের ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, বর্তমানে প্রতিদিন ৩-৪ ট্রাক মাছ রফতানি করছি। আমি চট্টগ্রামে মাছ পৌঁছে দেই। প্রতি ট্রাকে ১৫-১৬ টন মাছ রফতানি হয়। এক ট্রাক মাছের দাম ৫-৬ লাখ টাকা।

খুলনা কোয়ালিটি কন্ট্রোল কার্যালয়ের মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা এটিএম তৌফিক মাহমুদ বলেন, ৮০ শতাংশ বাগদা চিংড়ি রফতানি হয় ইউরোপের ২৭টি দেশে। ২০ ভাগ যায় আমেরিকা, জাপান, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে। এছাড়া মোট রফতানির দুই শতাংশ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ রফতানি হয় অন্যান্য দেশে।

তিনি বলেন, জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে ৭৬২.৪৬ কোটি টাকার মাছ রফতানি হয়েছে। করোনার প্রাদুর্ভাব কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে মাছ রফতানি খাত।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর