• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, ২৬টি ইউনিয়নের মানুষ পানিবন্দি

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ১৬ জুলাই ২০২০  

টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে গাইবান্ধা জেলার ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত এবং ভারী বর্ষণের কারণে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে।জেলার ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের ভাষারপাড়া সংলগ্ন বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ চুঁইয়ে পানি অপর পাড়ে যাচ্ছে। আজ বুধবার সকাল থেকে ফুলছড়ির ভাসারপাড়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ ছিড়ে কঞ্চিপাড়া, উদাখালী, বোয়ালী, গজারিয়া ইউনিয়নের গ্রাম বন্যা কবলতি হয়েছে। গাইবান্ধা-সাঘাটা সড়কের উল্যা ভরতখালী বিভিন্ন এলাকা দিয়ে পানি গড়ছে। এই সড়কের ১০টি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বালির বস্তা দিয়ে বন্যার পানি ঠেকানোর চেষ্টা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং সড়ক ও জনপদ বিভাগ। যেকোন সময় ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এদিকে ফুলছড়ি সিংড়িয়া বাধ পরিদর্শন করেছেন গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক, পানি উন্নয়ন বোর্ডে কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিবৃন্দ। বন্যা কবলিত এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানি সংকট দেখা দিয়েছে। ভেঙ্গে পড়েছে স্যানিটেশন ব্যবস্থা। পানিবন্দী মানুষজন নিরাপদে আশ্রয়ের যাওয়ার চেষ্টা করলেও উদ্ধার নৌকা না থাকা সহায় সম্পদ রক্ষায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। এছাড়াও জেলার বেশ কয়েকটি বাঁধটি চরম হুমকির মুখে পড়েছে। বন্যার পানির তোড়ে বাঁধ ভেঙ্গে ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সদর উপজেলার ব্যাপক এলাকা পাবিত হতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে। তবে বালির বস্তা দিয়ে বাঁধের ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এছাড়া খোলাহাটি ইউনিয়নের কিশামত বালুয়া এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধও চুঁইয়ে চুঁইয়ে পানি পড়ায় তা হুমকির মুখে পড়েছে। এদিকে ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধির ফলে সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সদর উপজেলার ২৬টি ইউনিয়নের আরও নতুন নতুন এলাকা পাবিত হয়েছে। ফলে ঘরবাড়িতে বন্যার পানি ওঠায় পানিবন্দী পরিবারগুলো চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে। শুকনো খাবার ও জ্বালানির অভাবে খাদ্য সংকটে পড়েছে বন্যার্ত মানুষ। এছাড়া গোবাদি পশুরও খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকার অনেকে ইতোমধ্যে বাড়িঘর ছেড়ে গরু-ছাগল নিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ও উঁচু এলাকায় আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। জেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে বন্যা কবলিত ৪টি উপজেলায় এখন পর্যন্ত ২ হাজার ২১ হেক্টর জমির পাট, আমন বীজতলা, আউশ ধান এবং বিভিন্ন শাকসবজির ক্ষেত তলিয়ে গেছে। এদিকে পলী বিদ্যুৎ সমিতির ফুলছড়ির বন্যা কবলিত এলাকায় দুর্ঘটনা এড়াতে জনসাধারণকে বিদ্যুতের খুটি স্পর্শ না করার জন্য মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, ১৫ জুলাই বুধবার দুপুর ১২টা ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ১১৫ মিটার এবং ঘাঘট নদীর পানি ৯২ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর