• মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৩ ১৪৩১

  • || ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

চলতি অর্থবছর দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৬.৮%: এডিবির পূর্বাভাস

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০  

চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৮ শতাংশ হতে পারে। এ সময়ে মূল্যস্ফীতির হার সাড়ে ৫ শতাংশের ঘরেই থাকবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। তবে পরিকল্পিত সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা ও সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজের দ্রুত বাস্তবায়নের কারণে কভিড-১৯-পরবর্তী পুনরুদ্ধার দ্রুততার সঙ্গেই হবে। রফতানি ও রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে সফলতা, সরকারের সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা এবং আর্থিক প্রণোদনা ও সামাজিক সুরক্ষার জন্য বৈদেশিক তহবিল নিশ্চিতের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবে।

গতকাল ম্যানিলা থেকে প্রকাশিত এডিবির ত্রৈমাসিক প্রতিবেদন এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুকের সেপ্টেম্বর আপডেটে এ পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক-২০২০-এর হালনাগাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতির পুনরুদ্ধার প্রবণতারই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।  ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের শক্ত ভিত্তি ও রফতানি গন্তব্যগুলোতেও প্রবৃদ্ধিতে গতি আসার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এ ক্রমান্বয় পুনরুদ্ধার প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। এছাড়া ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি সহনশীল মাত্রায় থাকবে। এ সময় মূল্যস্ফীতির হার হবে সাড়ে ৫ শতাংশ। একই সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ জিডিপির ১ দশমিক ১ শতাংশে নেমে আসতে পারে। সামষ্টিক অর্থনীতি ব্যবস্থাপনায় সরকারের বিচক্ষণতা ও দ্রুততার সঙ্গে প্রণোদনা পরিকল্পনার বাস্তবায়নই এ সম্ভাব্য প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার মূল চাবিকাঠি বলেও উল্লেখ করেছে এডিবি। তবে এ প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাসের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশে মহামারী দীর্ঘায়িত হলে কিংবা দেশের রফতানি গন্তব্যগুলোর অবস্থার ওপর এটি নির্ভর করবে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর মহমোহন পারকাশ বলেন, মহামারী পরিস্থিতি থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। স্বাস্থ্য ও মহামারী ব্যবস্থাপনা নিয়ে উল্লেখযোগ্য চাপের মধ্যে থেকেও সরকার ভালোভাবেই অর্থনীতিকে ধরে রাখতে পেরেছে। মূলত দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য মৌলিক সেবা ও পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে উপযুক্ত প্রণোদনা এবং সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম নেয়ার কারণে এটি সম্ভব করতে পেরেছে সরকার। রফতানি ও রেমিট্যান্সে অর্থনীতির সাম্প্রতিক অবস্থা এবং অর্থনৈতিক প্রণোদনা ও সামাজিক সুরক্ষার জন্য বৈদেশিক তহবিলের জোগান নিশ্চিত করতে সরকারের সামষ্টিক অর্থনীতি ব্যবস্থাপনা এ পুনরুদ্ধারকে সম্ভব করেছে।

আগেভাগে ভ্যাকসিন প্রাপ্তি এবং স্বাস্থ্য ও মহামারী ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দেয়া এ পুনরুদ্ধার প্রবণতাকে সহায়তা করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার, রফতানি বৈচিত্র্য, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দক্ষতা উন্নয়নের পাশাপাশি সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য এ সংকটই একটি সুযোগ এনে দিয়েছে। আর এসব ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে এডিবি সরকারের সঙ্গে কাজ করছে।

এডিবি বলছে, নভেল করোনাভাইরাস মহামারী এশীয় অঞ্চলের উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলোকে মন্দার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। প্রায় ছয় দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো ৪৫ দেশের উন্নয়নশীল এশিয়ায় আঞ্চলিক মন্দা দেখা দিয়েছে। চলতি বছরে উন্নয়নশীল এ অঞ্চলের অর্থনীতি শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ সংকুচিত হবে। তবে ২০২১ সালে এশিয়ার অর্থনীতি দৃঢ়ভাবে ঘুরে দাঁড়াবে। ওই বছর এশিয়ার অর্থনীতিতে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ঘটতে পারে। ২০২০ সালে এ অঞ্চলের জিডিপি শূণ্য দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাসে সংশোধন এনেছে এডিবি। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অর্থনীতি ৩ দশমিক ৮ শতাংশ হ্রাস পেতে পারে। বিশেষ করে এ অঞ্চলের পর্যটননির্ভর অর্থনীতির দেশগুলোতে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকোচন দেখা দিয়েছে। এশিয়ার দেশগুলোতে মূল্যস্ফীতি সহনীয় থাকবে।

কভিড-১৯ মহামারীর কারণে আর্থসামাজিক প্রভাব মোকাবেলা ও দ্রুত পুনরুদ্ধারে সহায়তা দিতে এডিবি বাংলাদেশের পাশে থাকবে। এরই মধ্যে বাংলাদেশকে প্রাথমিকভাবে ৬০ কোটি ডলার ঋণ ও ৪৪ লাখ ডলার অনুদান দিয়েছে। এছাড়া ২০২১-২৩ পর্যন্ত সময়ে সহযোগিতা করতে আরো ১১ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ সহায়তা দেবে।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর