• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

ধুনটে কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দূর্ণীতির অভিযোগ প্রমানিত

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ৬ মে ২০২০  

বগুড়ার ধুনট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুশিদুল হকের বিরুদ্ধে সরকারি ভ‚র্তকীর টাকায় ধান কাটা যন্ত্র ক্রয়ে অনিয়ম ও দূর্ণীতির অভিযোগ তদন্তে প্রমানিত হয়েছে। ফলে ওই কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহনের সুপারিশসহ থানায় সাধারণ ডাইরীর আবেদন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

 

জানা গেছে, কৃষি পূর্নবাসন কর্মসূচির আওতায় ২০১৯-২০ অর্থবছরে সরকারি ভ‚র্তকীতে ধান কাটা যন্ত্র (কম্বাইন হারভেস্টার) ক্রয়ের জন্য ১৯ জন কৃষক উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার নিকট আবেদন করেন। কিন্ত এ উপজেলার জন্য সরকারি ভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৪টি যন্ত্র। প্রতিটি যন্ত্রের মূল্য ২৮ লাখ টাকা। এই মূল্যের ৫০শতাংশ টাকা কৃষক সরকারের নিকট থেকে ভ‚র্তকী পাবেন। আবেদনকৃত ১৯ জনের মধ্যে নাটাবাড়ি গ্রামের ফোরহাদ রেজা, চিকাশি গ্রামের ছানোয়ার হোসেন ও পাঁচথুপি গ্রামের আশরাফুল ইসলামের নামে ধান কাটা যন্ত্রের বরাদ্দ চুড়ান্ত করেন কৃষি কর্মকর্তা। একই কৌশলে বাকী একজন কৃষকের নাম চুড়ান্তের বিষয়টিও প্রক্রিয়াধিন ছিল। 

 

বিধি মোতাবেক উপজেলা কৃষি পূর্নবাসন কর্মসূচি বাস্তবায়ন কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক কৃষকের নাম চুড়ান্ত করার কথা। কিন্ত কৃষি কর্মকর্তা নিজেই টাকাগুলো লুটপাট করার জন্য মনগড়া ভাবে ৩জন কৃষকের নাম চুড়ান্ত করেছেন। এরমধ্যে কৃষক ফোরহাদ রেজা ২০১৯ সালের ১৬ অক্টোবর, ছানোয়ার হোসেন ২০১৯ সালের ২৪ নভেম্বর ও আশরাফুল ইসলাম ২০১৯ সালের ২৯ অক্টোবর ধান কাটা যন্ত্র ক্রয় করেছেন। সেই পুরাতন যন্ত্র ৩টি নতুন করে এবারে ক্রয় দেখিয়ে ভূয়া বিল ভাউচার তৈরী করেন কৃষি কর্মকর্তা মুশিদুল হক। পুরাতন ৩টি যন্ত্র কাগজ কলমে নতুন দেখিয়ে ২১ এপ্রিল ৩ জন কৃষকের হাতে আনুষ্ঠানিক ভাবে ওই যন্ত্রের চাবি হস্তান্তর করা হয়েছে। 

 

এ ঘটনায় ২৭ এপ্রিল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ৫জন কৃষক স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগপত্র উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট দাখিল করেন। কৃষকের অভিযোগটি তদন্তে ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। পরে তদন্তে দোষী প্রমানিত হওয়ায় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবরে সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে তদন্ত কমিটি। এছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিয়া সুলতানার কাছে থেকে প্রতারনা করে স্বাক্ষর গ্রহন করায় ঐ কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডাইরীর আবেদন করেছেন। 

 

অভিযোগ প্রসঙ্গে ধুনট উপজেলা কৃষি পুর্নবাসন কর্মসূচি বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুশিদুল হক বলেন, আমি কোন অনিয়ম বা দূর্নীতি করিনি। ওই ৩জন কৃষক ভুল তথ্য দিয়ে তাদের নামে ধান কাটা যন্ত্র বরাদ্দ নিয়েছিলেন। পরবর্তীতে তাদের নামে বরাদ্দ’র ৩টি যন্ত্র বাতিল করা হয়েছে।

 

ধুনট উপজেলা কৃষি পুর্নবাসন কর্মসূচি বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিয়া সুলতানা বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী উপকারভোগী কৃষক যাছাই-বাছাই ও মনোনয়ন, কোম্পানীর সঙ্গে যোগাযোগ, কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন ক্রয়, বিতরণ ও বিল ভাউচার তৈরী সহ যাবতীয় কার্য সম্পাদন করেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা। উপজেলার অন্যান্য কমিটির ন্যায় পদধিকার বলে আমি উক্ত কমিটির সভাপতি। উপজেলা কৃষি কর্মকতার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূণীর্তির মাধ্যেমে সরকারি ভূর্তকীর টাকা আত্মসাতের চেষ্টার অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। ফলে পরবর্তী নির্দেশনা ও ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর