• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

জামালপুরে ১ম ধাপে করোনার টিকা পাচ্ছে ৩৬ হাজার জন, নিবন্ধন ২২০৪

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১  

সারাদেশের ন্যায় জামালপুর জেলায়ও ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে করোনার টিকাদান কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। এই টিকাদান কর্মসূচি সফল করতে জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ ইতিমধ্যে উপজেলা পর্যায়ে টিকার ডোজ পাঠানো ও টিকাদান কেন্দ্র বা বুথ স্থাপনসহ সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। তবে জামালপুর জেলায় মোট বরাদ্দ পাওয়া প্রায় ৭২ হাজার টিকার মধ্যে ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রথম ধাপে জামালপুরে প্রায় ৩৬ হাজার মানুষের দেহে টিকা প্রয়োগ করা হবে। কিন্তু সুরক্ষা অ্যাপসের মাধ্যমে টিকা নিতে আগ্রহীর নিবন্ধন হয়েছে সারা জেলায় মাত্র ২ হাজার ২০৪ জনের।

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, জামালপুর জেলায় বরাদ্দ পাওয়া ৭১ হাজার ৯৯৯ ডোজ করোনার টিকা ৬ ফেব্রুয়ারি দুপুরে জামালপুর সদরসহ সাতটি উপজেলায় পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে বকশীগঞ্জ উপজেলায় ৬ হাজার ৮৭৫ ডোজ, দেওয়ানগঞ্জে ৮ আজার ১০৭ ডোজ, ইসলামপুরে ৯ হাজার ৩৭২ ডোজ, মাদারগঞ্জে ৮ হাজার ৩৭৫ ডোজ, মেলান্দহে ৯ হাজার ৮৩৫ ডোজ, সরিষাবাড়ীতে ১০ হাজার ২১৬ ডোজ এবং জামালপুর সদর উপজেলায় ১৯ হাজার ৩১৬ ডোজ টিকা পাঠানো হয়েছে। একই সাথে একবার ব্যবহারযোগ্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক এডি সিরিঞ্জও (অটোমেটিক ডিজ্যাবল) সরবরাহ করা হয়েছে। ৬ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১২টার দিকে জেলার সাত উপজেলা হাসপাতালের সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে প্রয়োজনীয় বিশেষ তাপমাত্রার কোল্ড বক্সে করে পুলিশ প্রহরায় এসব টিকা পাঠানো হয়েছে। এ সময় সিভিল সার্জন চিকিৎসক প্রণয় কান্তি দাস, ডেপুটি সিভিল সার্জন চিকিৎসক কে এম শফিকুজ্জামান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সুফিয়ানসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তা ও স্বাস্থ্যকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে সুরক্ষা অ্যাপসে টিকা নিতে আগ্রহীদের নিবন্ধনের সর্বশেষ তথ্য দিয়ে সিভিল সার্জন চিকিৎসক প্রণয় কান্তি দাস এ প্রতিবেদককে জানান, ৬ ফেব্রুয়ারি বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত সুরক্ষা অ্যাপসে সারা জেলায় মোট ২ হাজার ২০৪ নিবন্ধন করেছেন। এরমধ্যে বকশীগঞ্জ উপজেলায় ১৩০ জন, দেওয়ানগঞ্জে ১২০ জন, ইসলামপুরে ১৬০ জন, মাদারগঞ্জে ৩১৪ জন, মেলান্দহে ১২০ জন, সরিষাবাড়ীতে ১৬০ জন এবং জামালপুর সদর উপজেলায় ১ হাজার ২০০ জন নিবন্ধন করেছেন।

সূত্রটি আরো জানায়, জেলায় করোনার টিকা পাওয়া গেছে ৭১ হাজার ৯৯৯ ডোজ। এর মধ্যে প্রথম ধাপে টিকা দেওয়া হবে এর অর্ধেক ডোজ, অর্থাৎ ৩৫ হাজার ৯৯৯ জনকে। দ্বিতীয় ধাপে একমাস পর নতুন আরো ৩৫ হাজার ৯৯৯ জনকে টিকা দেওয়া হবে। ফলে প্রথম ধাপে ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে টিকাদান শুরু করা হবে ৩৫ হাজার ৯৯৯ জনকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে। কিন্তু সুরক্ষা অ্যাপসে সারা জেলায় নিবন্ধন হয়েছে মাত্র ২ হাজার ২০৪ জনের।

সূত্র মতে, ৭ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টায় সারাজেলায় একযোগে টিকাদান শুরু হবে। তবে প্রথমপর্যায়ে শুধুমাত্র উপজেলা সদরের টিকাদান বুথে টিকা প্রয়োগের প্রস্তুতি নিয়েছে স্বাস্থ্যবিভাগ। পরবর্তীতে ইউনিয়ন পর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদের বুথে টিকাদান কার্যক্রম সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগের। টিকাদান কেন্দ্র বা বুথ স্থাপনের কাজও শেষ হয়েছে। এর মধ্যে জামালপুর সদরের টিকা নিতে আগ্রহী নিবন্ধিত ব্যক্তিদের জন্য সদর হাসপাতাল কমপ্লেক্সের ভেতরে শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজের একটি টিনশেড একাডেমিক ভবনে আটটি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ, সিভিল সার্জন কার্যালয়, ২৫০ শয্যার জামালপুর সদর হাসপাতাল ও সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয় এই চারটি প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে এই বুথগুলোতে টিকা গ্রহণের সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ। এছাড়া জেলা পুলিশ হাসপতালে একটিসহ জেলার বাকি ছয়টি উপজেলা হাসপাতালে তিনটি করে টিকাদান বুথ স্থাপন করা হয়েছে।

এদিকে করোনার টিকাদান কার্যক্রমের প্রচারণা নিয়ে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তেমন কোন উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়নি। তবে ৬ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জেলা তথ্য অফিসের একটি গাড়িতে করে জেলা সদর ও অন্যান্য উপজেলাগুলোতে এ বিষয়ে প্রচারণা চালাতে দেখা গেছে। এছাড়াও প্রতিটি উপজেলায় ইউএনও কার্যালয়ের ব্যবস্থাপনায় প্রচার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

সিভিল সার্জন চিকিৎসক প্রণয় কান্তি দাস এ প্রতিবেদককে বলেন, অ্যাপসে নিবন্ধনের কার্যক্রমটি একটি চলমান প্রক্রিয়া হওয়ায় নিবন্ধনের সংখ্যা বাড়তে থাকবে। ৭ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধনী দিন থেকে বয়সের মাপকাঠিতে টিকা নিতে আগ্রহীরা স্ব-স্ব উপজেলা হাসপাতালের বুথেও ফরম পূরণ করে নিবন্ধন করতে পারবে। ইতিমধ্যে যারা নিবন্ধন করেছেন তাদের প্রত্যেকের মোবাইল ফোন নম্বরে কোথায় কখন টিকা নিতে পারবেন তা উল্লেখ করে খুদে বার্তাও পাঠানো হচ্ছে। প্রতিটি টিকাদান কেন্দ্রের প্রতিটি বুথে প্রশিক্ষিত দুইজন করে নার্স ও চার সদস্যের স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে একটি করে টিম টিকা প্রয়োগের কাজে নিয়োজিত থাকবেন। টিকা নেয়ার পর পর্যবেক্ষণ করাসহ করোনার টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়নে ইতিমধ্যে সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।

টিকাদান কার্যক্রমের প্রচারণা প্রসঙ্গে সিভিল সার্জন বলেন, করোনার টিকাদান কার্যক্রম ব্যবস্থাপনা জেলা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় প্রচারণার কাজটি করছে জেলা তথ্য অফিস। এছাড়াও উপজেলা পর্যায়ে ইউএনও কার্যালয় ও উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্যোগেও প্রচারণা চলমান রয়েছে।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর