• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

জুন ও আগস্টে অনুষ্ঠিত হবে এসএসসি ও এইচএসসি

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ৩০ ডিসেম্বর ২০২০  

বৈশ্বিক মহামারি করোনার প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। গত মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তবে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে আগামী জুন মাসে এসএসসি পরীক্ষা নেয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী। একইভাবে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদেরও সীমিত পরিসরে ক্লাসে ফিরিয়ে এনে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করা হবে। উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের জন্যও এনসিটিবি পরিমার্জিত সিলেবাস করছে। জুলাই বা আগস্ট মাসে এইচএসসি পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী। গতকাল মঙ্গলবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

 

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে পারছে না। শিখন ফল অর্জন নিশ্চিত করতে ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সীমিত পরিসরে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ক্লাস করানো হবে। এ লক্ষ্যে একটি পরিমার্জিত সিলেবাস তৈরি করছে এনসিটিবি। এ সিলেবাসের ওপর শিক্ষার্থীদের ক্লাস করিয়ে এসএসসি পরীক্ষা নেয়া হবে।

 

শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, আশা করছি ১৫ জানুয়ারির মধ্যে এসএসসির পরিমার্জিত সিলেবাস এবং ৩১ জানুয়ারির মধ্যে এইচএসসির পরিমার্জিত সিলেবাস শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়া সম্ভব হবে। ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো: জাকির হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, শিক্ষা মন্ত্রণালয় মাধ্যমিক উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো: মাহাবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের সচিব মো: আমিনুল ইসলাম খান, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো: গোলাম ফারুক, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা এবং বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান।

 

 ২০২১ এর জানুয়ারিতে এইচএসসির ফল : 

এ দিকে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল তৈরি হয়ে গেছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে এই ফলাফল প্রকাশ করা হবে। এর আগে একটি অধ্যাদেশ জারি করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পরীক্ষার ফল সংক্রান্ত একটি আইন রয়েছে। তবে এ বছর করোনার এই বিশেষ পরিস্থিতিতে ফল প্রকাশের জন্য একটি অধ্যাদেশ জারি করতে হবে। সহসাই এটি জারি করা হবে। এর পরেই মূলত এইচএসসির ফল প্রকাশ করা হবে। প্রসঙ্গত ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৯ জন শিক্ষার্থী এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিল। পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল ১ এপ্রিল থেকে। কিন্তু করোনার কারণে ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়।

 

এবারের এইচএসসি ও সমমানের ফলাফল নিয়ে কেউ অসন্তুষ্ট হবে না বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী। মন্ত্রী বলেন, করোনার কারণে এবার বিশেষ পরিস্থিতিতে ফলাফল দেয়া হচ্ছে। ফলাফলে যদি কোনো শিক্ষার্থী ক্ষুব্ধ হন তাহলে তিনি নিজ শিক্ষা বোর্ডে আবেদন করতে পারবেন। তবে আশা করছি রেজাল্ট নিয়ে কেউ অসন্তুষ্ট হবেন না।

 

রোল নম্বর থাকবে না, পরিবর্তে হবে আইডি নম্বর : 

মন্ত্রী জানান, শিক্ষার্থীরা অটোপ্রমোশন নিয়ে ওপরের ক্লাসে উঠছে। তবে ক্লাসে শিক্ষার্থীদের কোনো রোল নম্বর থাকবে না। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসম প্রতিযোগিতা বন্ধ হবে। মাধ্যমিক পর্যায়ের সব স্তরে রোল নম্বর তুলে দিয়ে নাম শনাক্ত করে উপস্থিতি নেয়া হবে। প্রতিটি শিক্ষার্থীর একটি ইউনিক নম্বর দেয়া হবে। তার মাধ্যমে শিক্ষার্থীকে শনাক্ত করা হবে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে এ বছর দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এ কারণে আমরা ক্লাস ও পরীক্ষা নিতে পারিনি। সংসদ টিভি, অনলাইন মাধ্যম ও অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পঠন জ্ঞান দেয়া হচ্ছে। এতে প্রায় ৮৭ শতাংশ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে। সেখানে নানা পর্যায়ে অ্যাসাইনমেন্ট মূল্যায়ন করা হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হলেও অনলাইন ক্লাস ও অ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হবে বলেও জানান তিনি।

 

বই পাচ্ছে না সকল শিক্ষার্থী : 

শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেয়া প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী জানান, ১ জানুয়ারি দেশের সব শিক্ষার্থী নতুন বই পাবে না। ধারাবাহিকভাবে ১২ দিনে সব ক্লাসে বই বিতরণ করা হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের বই নিতে হবে। 

 

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, গত ১০ বছর থেকে বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেয়া হয়। এটি আমাদের একটি উৎসবে পরিণত হয়েছে। করোনা হানা দিয়েছে বলে এবার সেই উৎসব আয়োজন করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে আগামী ৩১ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি পাঠ্যবই বিতরণ কর্মসূচি উদ্বোধন করবেন। এর পর থেকে স্কুলে বই বিতরণ কার্যক্রম শুরু করা হবে। 

 

তিনি আরো বলেন, এবার বছরের প্রথম দিন সব শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দেয়া হবে না। প্রতিটি ক্লাসের শিক্ষার্থীদের কাছে তিনটি ভাগে তিন দিন বই বিতরণ করা হবে। ১২ দিনে সব শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই তুলে দেয়া হবে।

 

 

জিপিএ থাকবে না সনদপত্রে : 

করোনার মধ্যে এবার পরীক্ষা ছাড়াই জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার্থীদেরকে পরের ক্লাসে তোলা হবে বলে তাদের সনদপত্রে কোনো জিপিএ থাকবে না। 

 

শিক্ষামন্ত্রী জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে এ বছর জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা গ্রহণ করতে পারিনি বা সম্ভব হয়নি। অন্য দিকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের নির্দেশনা মোতাবেক নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন সম্পন্ন করেছে। যদিও ইতোমধ্যে শিক্ষাবোর্ডগুলো জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের কাজও সম্পন্ন করেছে। বোর্ডগুলো সব শিক্ষার্থীকে উত্তীর্ণ সনদ দেবে, কিন্তু কোনো নম্বরপত্র দেয়া হবে না।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর