• বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

জেনে নিন রোজা রাখার নিয়ত ও ইফতার শুরুর দোয়া

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ২৬ এপ্রিল ২০২০  

এ পৃথিবীর প্রত্যেক মুসলিম, প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ মস্তিষ্ক সম্পন্ন, স্থায়ী ও শারীরিক-মানসিকভাবে সামর্থ্যবান নারী-পুরুষের ওপর ইবাদতের পবিত্র মাস রমজানের রোজা রাখা ফরজ।

 

রমজান মাসের রোজা পালন নির্দেশ দিয়ে মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা কোরআনুল কারিমে বলেন,

 

‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর সিয়াম বা রোজা ফরজ করা হয়েছে; যেভাবে তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল; যাতে তোমরা তাকওয়া (আত্মশুদ্ধি) অর্জনে করতে পার। (সূরা : বাকারা : আয়াত  : ১৮৩)।

 

রমজানের রোজা পালনের জন্য সেহরি করা আবশ্যক। হাদিসে পাকে প্রিয়নবী রাসূলুল্লাহ (সা.) সেহরি গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন। আবার যথাসময়ে ইফতার গ্রহণেরও তাগিদ প্রদান করেছেন।

 

হজরত আমর ইবনুল আস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমাদের রোজা এবং আহলে কিতাব তথা ইয়াহুদি ও খ্রিস্টানদের রোজার মধ্যে পার্থক্য হলো সেহরি খাওয়া। (অর্থাৎ মুসলিমরা সেহরি খায় আর ইয়াহুদি ও খ্রিস্টানরা সাহরি খায় না)।’ (মুসলিম, নাসাঈ)।

 

রোজা পালনে সেহরি ও ইফতারের যেমন গুরুত্ব রয়েছে তেমনি রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়ার রয়েছে যথেষ্ট গুরুত্ব। সেহরি খাওয়ার পর রোজা নিয়ত করা জরুরি।

 

মুখে নিয়ত করা জরুরি নয়, অন্তরে নিয়ত করলেই যথেষ্ট হবে। তবে মুখে নিয়ত করা উত্তম। (ফতোয়াতে শামি : খ. ৩, পৃ. ৩৪৫)।

 

রোজার নিয়ত : 

 

نَوَيْتُ اَنْ اُصُوْمَ غَدًا مِّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْم

 

উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন আছুম্মা গাদাম মিন শাহরি রমাজানাল মুবারাকি ফারদাল্লাকা, ইয়া আল্লাহু ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আনতাস সামিউল আলিম।

 

অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আগামীকাল পবিত্র রমজানের তোমার পক্ষ থেকে নির্ধারিত ফরজ রোজা রাখার ইচ্ছা পোষণ (নিয়্যত) করলাম। অতএব, তুমি আমার পক্ষ থেকে (আমার রোজা তথা পানাহার থেকে বিরত থাকাকে) কবুল কর, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী।

 

ইফতারের আগ মুহূর্তে বেশি বেশি ইসতেগফার পড়া :

 

اَسْتَغْفِرُ اللهَ الْعَظِيْم – اَلَّذِىْ لَا اِلَهَ اِلَّا هُوَ اَلْحَيُّ الْقَيُّوْمُ وَ اَتُوْبُ اِلَيْهِ لَا حَوْلَ وَ لَا قُوَّةَ اِلَّا بِاللَّهِ الْعَلِىِّ الْعَظِيْم

 

উচ্চারণ : আসতাগফিরুল্লাহাল আজিম, আল্লাজি লা ইলাহা ইল্লাহু আল-হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম, ওয়া আতুবু ইলাইহি লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়্যিল আজিম।

 

ইফতারের সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দোয়া পড়ে ইফতার করা :

 

اَللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَ عَلَى رِزْقِكَ وَ اَفْطَرْتُ بِرَحْمَتِكَ يَا اَرْحَمَ الرَّاحِيْمِيْن

 

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু ওয়া আলা রিযক্বিকা ওয়া আফতারতু বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।

 

অর্থ : হে আল্লাহ! আমি তোমারই সন্তুষ্টির জন্য রোজা রেখেছি এবং তোমারই দেয়া রিজিকের মাধ্যমে ইফতার করছি।

 

ইফতারের পর আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে দোয়া পড়া :

 

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন ইফতার করতেন তখন বলতেন-

 

ذَهَبَ الظَّمَاءُ وَابْتَلَتِ الْعُرُوْقُ وَ ثَبَتَ الْأَجْرُ اِنْ شَاءَ اللهُ

 

উচ্চারণ : ‘জাহাবাজ জামাউ; ওয়াবতালাতিল উ’রুকু; ওয়া ছাবাতাল আঝরূ ইনশাআল্লাহ।’

 

অর্থ : ‘ (ইফতারের মাধ্যমে) পিপাসা দূর হলো, শিরা-উপসিরা সিক্ত হলো এবং যদি আল্লাহ চান সাওয়াবও স্থির হলো ‘ (আবু দাউদ, মিশকাত)।

 

ইফতারের ফজিলত :

 

রাসূলুল্লাহ (সা.) এর বাণী : ‘ইফতারের সময় রোজাদারের দোয়া প্রত্যাখ্যান করা হয় না।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৭৫৩)।

 

অন্য হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করায়, সে ওই রোজাদারের সমপরিমাণ সওয়াব পাবে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৮০৭)

 

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে সেহরির পর নিয়ত করা, ইফতারের আগে তাওবা-ইসতেগফার করা, ইফতারের সময় দোয়া পড়া এবং ইফতারের পর শুকরিয়া আদায় করে দোয়া পড়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর