• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

টাঙ্গাইলে ঘন ঘন লোডশেডিং এ চরম ভোগান্তি

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ৯ জুন ২০২৩  

টাঙ্গাইলে ঘন ঘন লোডশেডিং হচ্ছে। এতে প্রচন্ড গরমে হাঁসফাঁস করছে সাধারণ মানুষ। এছাড়াও স্বাভাবিক কাজও করতে না পেরে বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। বিদ্যুৎ অফিসের তথ্য অনুযায়ী ২৪ ঘন্টার মধ্যে দুই থেকে চার ঘন্টা লোডশেডিং হওয়ার কথা থাকলেও ১০ থেকে ১২ ঘন্টা লোড শেডিং হচ্ছে। সব মিলিয়ে ঘন ঘন লোডশেডিং এ চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। লোডশেডিং বন্ধে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, কয়েক সপ্তাহ যাবত টাঙ্গাইলে লোডশেডিং বেড়েই চলেছে। যে স্বাবাভিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। বিশ্রাম, খাবার গ্রহণ, ঘুম, পড়াশোনাসহ প্রতিটি মুহুর্তই ভোগান্তির শিকার হচ্ছে স্থানীয়রা। বৃষ্টি না হওয়ায় উত্তপ্ত আবহাওয়ায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে মানুষের। সব মিলিয়ে এক দিকে অবিরত লোডশেডিং অপর দিকে প্রচন্ড তাপপ্রবাহের কারণে টাঙ্গাইলের মানুষের গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। আর গরমের কারনে নানা রোগে আক্রান্তদের সংখ্যা বেড়েছে। বিশেষ করে ডায়েরিয়া, বমি, জ্বর, ঠান্ডা।
সরেজমিন বুধবার দুপুরে টাঙ্গাইল শহরের বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, বেশির ভাগ মার্কেটেই বিদ্যুৎ নেই। এদের মধ্যে কেউ কেউ অস্থায়ী জেনারেটর ব্যবহার করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করার চেষ্টা করছে। গরমে অনেকেই তৃষ্ণার্ত হচ্ছে। একটু স্বস্তির আশায় শরবতের দোকান ও তালের শাসের দোকানে ভিড় করছে।
মো. সাইফুল ইসলাম নামের এক ম্যানেজার বলেন, টাঙ্গাইল শহরে আমাদের ৪৫টির মতো শোরুম রয়েছে। বেশির ভাগ সময়ই বিদ্যুৎ থাকে না। কোন শোরুমে আইপিএস, আবার কোন শোরুমে অস্থায়ী জেনারেটর ব্যবহার করা হচ্ছে। দীর্ঘক্ষণ লোডশেডিং থাকলেও জেনারেলও ব্যাকআপ দিতে পারে না। এতে ব্যবসাও ভাল হচ্ছে না। সব মিলিয়ে আমরা অতিষ্ট হয়ে উঠেছি।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে কথা হয় অপর জন জয়ন্তী সরকারের সাথে। তিনি বলেন, সকালে আমার রোগিকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি করিয়েছি। বিছানা না পাওয়ায় বারান্দায় রোগিকে রাখা হয়েছে। বারান্দায় ফ্যান না থাকায় এই প্রচন্ড গরমে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
কাগমারা এলাকার জাহিদ হাসান বলেন, দিন রাত মিলে ১২ থেকে ১৩ ঘন্টা লোডশেডিং হয়। মধ্যরাতে বিদ্যুৎ চলে গেলে তিন চার ঘন্টায়ও আসে না। গরমে ঘুমন্ত মানুষ জেগে উঠি। লোডশেডিং ও গরমে সোমবার দিবাগত রাতে চার ঘন্টাও ঘুম পারতে পারিনি। অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
সদর উপজেলার বাঘিল ইউনিয়নের ধরেরবাড়ী মুসলিম হাই স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। প্রচন্ড গরমে লোডশেডিং এর সময় অনেকেই ঠিক মতো লিখতে পারে না। গরমে বসে থেকে ঘেমে অনেকের স্কুল ড্রেস নষ্ট হচ্ছে।
শহরের কাগমারা এলাকার হাজী অটো রাইস মিলের স্বত্ত্বাধিকারী জহিরুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সময়ে দুই ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকলেও তিন ঘন্টা থাকে না। এতে মিলের উৎপাদন অর্ধেকেরও কম হচ্ছে। বিদ্যুৎ কারনে ছেলে মেয়েও শান্তিতে পড়াশোনা করতে পারে না। ঘুমানোর পর বিদ্যুৎ চলে গেলে ভোগান্তি অনেক বেশি হয়।
টাঙ্গাইল বিদ্যুৎ বিভাগের সুপারিনটেডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার ওবায়দুল ইসলাম বলেন, টাঙ্গাইলে ১২০ থেকে ১২৫ মেঘাওয়াটের বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। সেখানে ১০০ থেকে ১০৫ মেঘাওয়াট পাওয়া যাচ্ছে। গড়ে ২০ মেঘাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতি রয়েছে। তাতে দুই থেকে চার ঘন্টা লোডশেডিং হতে পারে।
বন্ধ হওয়া পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রভাব টাঙ্গাইলে পড়ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ পাচ্ছি। কোথা থেকে চাপ পড়ছে ইনজেনারেল সেটা বোঝা যাচ্ছে না।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর