• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

টাঙ্গাইলে ধর্ষিতা ও তার পরিবারকে যুবদল নেতার হুমকি

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ৩ জুন ২০২০  

 টাঙ্গাইলের মধূপুর উপজেলার কালিয়াকুড়ি গ্রামে এক কিশোরীকে অপহরণের পর যুবদল নেতার ভাই ও ভাইয়ের নাতি মিলে রাতভর ধর্ষণ করে। পরদিন সকালে কিশোরীকে বাড়ীপাশে ফেলে রাখে। সেখান আত্নীয় স্বজনরা উদ্ধার করলে বিষয়টি তাদের খোলে বলে কিশোরী। 

 

বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে মঙ্গলবার (২ জুন) সকালে এক গোপণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ইউনিয়ন জাতীয়তাবাদী যুব দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. ফরিদ মিয়া মাতাব্বরদের মোটা অংকের ঘোষের বিনিময়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ব্যার্থ হয়ে তার বাহিনী দিয়ে কিশোরীর বাবাকে বাড়ি বিক্রি করে অন্যত্র চলে যাওয়ার হুমকি দিয়ে আসছে।

 

পরে কিশোরীর বাবা বাদি হয়ে মধুপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। 

 

স্থানীয়রা জানান, , উপজেলার ফুলবাগচালা ইউনিয়নের কালিয়াকুড়ি গ্রামের নাতি কিশোর চান মিয়া (১৪) ও দাদা কবির হোসেন ওরফে কবজ (৫০) এর ভাই ইউনিয়ন বিএনপি’র যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. ফরিদ মিয়ার দাপটে পাশের হাগুড়াকুড়ি উত্তরপাড়া গ্রামের এক কিশোরীকে (১৩) শনিবার (৩০ মে) দুপুরে বাড়ির পাশ থেকে অপহরণ করে নিজেদের বাড়িতে নিয়ে আটকে রাখে।

 

পরে ইউনিয়ন জাতীয়তাবাদী যুব দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. ফরিদ মিয়ার বাড়ির উত্তর পাশের একটি কক্ষে যুবদল নেতার ভাই ও ভাইয়ের নাতি ওই কিশোরীকে রাতভর ধর্ষণ করে। পরদিন রোববার (৩১ মে) ওই কিশোরীকে তার বাড়ির পাশে ফেলে রেখে চলে যায়।

 

ওই কিশোরীর বাবা ও মা জানায়, তারা খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে খবর পেয়ে সন্ধ্যায় কবির হোসেন ওরফে কবজের বাড়িতে গিয়ে মেয়েকে ফেরত চাইলে তাদের কাছে নেই বলে জানায়। পরদিন ওই কিশোরী অসুস্থাবস্থায় বাড়িতে গিয়ে পুরো ঘটনা তার মাকে খুলে বলে। 

 

কিশোরীর অসহায় বাবা স্থানীয় মাতব্বর ও ইউপি সদস্যকে ঘটনা জানায়। পরে কিশোরীর বাবা বাদি হয়ে মধুপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা (নং-১, তাং-১/৬/২০২০ইং) দায়ের করেন।

 

তারা আরো জানায়, ফুলবাগচালা ইউনিয়ন জাতীয়তাবাদী যুব দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. ফরিদ মিয়ার নেতৃত্বে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে স্থানীয় একটি মহল নানাভাবে অপতৎপরতা শুরু করে।

 

তারই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (২ জুন) সকালে এক গোপণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে মাতব্বরদের মধ্যে বাকবিতন্ডা ও দরকষাকষির এক পর্যায়ে যুব দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. ফরিদ মিয়া ওই কিশোরীর বাবাকে বাড়ি বিক্রি করে অন্যত্র চলে যেতে হুমকি দেয়। কিশোরীর বাবাকে হুমকি দেওয়ায় স্থানীয় মাতব্বররা সালিশ ভন্ডুল করে দেন।

 

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. নওশের আলী জানান, কিশোরীকে ধর্ষণের বিষয়টি স্থানীয় পর্যায়ে ওপেনসিক্রেট। ধর্ষকের ভাই মো. ফরিদ মিয়া প্রভাবশালী হওয়ায় তারা বিষয়টিকে ধামাচাপা দেওয়ার পায়তারা করছে। থানায় মামলা হলেও আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

 

মধুপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তারিক কামাল জানান, , থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। আসামি গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর