• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

ট্রাক্টরের বিকট শব্দ দূষণে অতিষ্ঠ রৌমারীবাসি

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ২ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

কুড়িগ্রামের রৌমারীর উপজেলার বন্দবেড় ও রৌমারী সদর ইউনিয়নের শহরতলির হাজার হাজার মানুষ বালু ভর্তি ট্রাক্টর (কাকড়া) ও ট্রলির চলাচলের বিকট শব্দ দূষণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে রৌমারীবাসি। 

 

প্রতিদিন শতশত ট্রাক্টর উপজেলার পশ্চিমে ব্রহ্মপুত্র নদের পার কেটে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করে বিভিন্ন এলাকার পুকুর ও বসতভিটা ভরাট করছে। এতে পানি নিস্কাশনের বাধার সৃষ্টি হচ্ছে। অন্য দিকে ট্রাক্টরের বিকট শব্দের ও হর্ণে রাস্তার উভয় পাশের বসতবাড়ির লোকজন চরম ভাবে দুর্বিসহ জীবন যাপন করছেন। 

 

প্রতিদিন ভোর হতে গভীর রাত পর্যন্ত একটানা বালু ভর্তি ট্রাক্টরগুলো অবিরাম দ্রত গতিতে চলতে থাকে। দিনের বেলায় ১৫টি স্কুল, ৩টি মাদ্রাসা, ৪টি কলেজসহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা নিরাপদে রাস্তায় চলাচল করতে পারে না। দ্রæতগতির ট্রাক্টরের ভয়ে শিক্ষার্থীরা সর্বদা দুর্ঘটনার আশঙ্কায় রাস্তা পাড়াপাড় হয়ে থাকে। বিশেষ করে রৌমারী সরকারি ডিগ্রি কলেজ পাড়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিশুদের একাএকা স্কুলে পাঠাতে ভয়ে থাকতে হয় অভিভাবকদের। 

 

এ এলাকায় ৭টি মসজিদের নামাজিরা বিকট শব্দে ঠিকমতো নামাজ আদায় করতে পারে না। প্রতিদিন রৌমারী হতে চিলমারী-কুড়িগ্রামের যাত্রী ও উপজেলার পরিষদগামী, হাটুরে হাজার হাজ্রা মানুষকে জীবনের ঝুকি নিয়ে প্রতিনিয়ত রাস্তা চলাচল করতে হয়। বালু ভর্তি ট্রাক্টরগুলো এত বিকট শব্দে চলে যে আশপাশের বসতবাড়ির ছোট-ছোট শিশুরা দিনের বেলায় ঘুমোতেও পারে না। বিকট শব্দ শুনে শিশুরা কান্না ও ভয়ে ভিতসন্ত্রস্ত হয়ে উঠে। ট্রাক্টরের বিকট শব্দে দূষণ ও বালুতে রাস্তার পাশের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। যার ফলে বসতবাড়ির লোকজন শ্বাসকষ্ট জনিত রোগসহ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। পরীক্ষার্থী ও সাধারন শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ঠিক ভাবে পড়াশোনা করতে পারছে না। 

 

অতি শব্দে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে অফিসিয়ালি কাজকর্মে ব্যহত হচ্ছে। বিকট শব্দে অসুস্থ ব্যক্তিরা আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছে। অতিমাত্রায় অবৈধগাড়ি চলাচলে সরকারের গ্রামীণ জনপদের রাস্তাঘাট ভেঙ্গে গিয়ে যাতায়াতের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। 

 

কুটিরচর গ্রামের পথচারী লিটন মিয়া জানান, ট্রাক্টরের ভয়ে রাস্তায় ঠিকমতো যাতায়াত করা যায় না। ট্রাক্টর এলেই রাস্তা ছেড়ে দিয়ে পাশে দাড়িয়ে থাকতে হয়। অনভিজ্ঞ ও কম বয়সী চালকেরা পাল্লা দিয়ে দ্রæত গতিতে গাড়ি চালাতে গিয়ে দূর্ঘটনা, বসতবাড়ি ও জানমালের ক্ষতি করছে।

 

কৃষি বান্ধব সরকারের ভর্তুকি দেওয়া ট্রাক্টর জমি চাষাবাদ না করে মালবাহি হিসেবে ব্যবহার করায় প্রতিনিয়তই দূর্ঘটনা ঘটেই চলছে। কেড়ে নিয়েছে কোমলমতি স্কুল শিক্ষার্থীসহ বেশ কিছু জনপ্রাণ। 

 

এ নিয়ে একাধীকবার মিছিল মিটিং ও মানববন্ধনসহ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হলেও এর কোন প্রতিফলন ঘটেনি। একদিকে যেমন শব্দ দূষণ অন্য দিকে জনপ্রান কেড়ে নেওয়ায় এ আত্মঘাতি যন্ত্রটি নিয়ে এলাকায় আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

 

ইতোপূর্বে প্রশাসনের পক্ষ হতে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন  বন্ধে ড্রেজার মেশিন জব্দ ও জরিমানা করলেও সম্পন্ন ভাবে বন্ধ হচ্ছে না বালু উত্তোলন।

 

এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল ইমরান বলেন, গত বৃহস্পতিবার মাসিক সমন্বয় সভায় চলতি এসএসসি পরীক্ষা চলাকালিন ট্রাক্টর (কাকড়া) বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদী থেকে বালু উত্তোলনের বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর