• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

দেওয়ানগঞ্জে বসবাসকারী একজন সফল কৃষকের কাহিনী

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার ডাংধরা ইউনিয়নের, জোয়ানেরচর মুন্সি পাড়া গ্রামের মোঃ বদিউজ্জামান, একজন সফল কৃষক। 

 

ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অর্থায়নে,ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ এর তত্ত্বাবধানে, উন্নয়ন সংঘ বাস্তবায়নে, BIeNGS প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে জামালপুর ও শেরপুর জেলায়।

 

সে সুবাদে, দেওয়ানগন্জ্ঞ উপজেলার ডাংধরা ইউনিয়নের জোয়ানেরচর কমিউনিটি ক্লিনিকের আওতাধীন, জোয়ানেরচর মুন্সি পাড়া বেগুন উৎপাদনকারী দল গঠন করা হয়েছে।   গত ১৫ই সেপ্টেম্বর উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ ওসমান গনি সহ সিএফ মোঃ ফরিদুল ইসলাম জোয়ানেরচর মুন্সি পাড়া পরিদর্শন করা হয়। 

বদিউজ্জামানের কৃষি ক্ষেত পরিদর্শনে এনজিও কর্মীরা
বদিউজ্জামানের কৃষি ক্ষেত পরিদর্শনে এনজিও কর্মীরা

মোঃ ওসমান গনি বলেন, এ এলাকায়  বেগুন চাষের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে জমি রয়েছে। এখানে পূর্বের নিয়মে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক বেশি ব্যবহারে খরচের পরিমাণ বেশি হয় এবং ফলন কম হয়। যার ফলে কৃষক  লাভবান হয়না। জোয়ানেরচর মুন্সি পাড়া বেগুন উৎপাদনকারী দলের সভাপতি মোঃ বদিউজ্জামান ২০ শতাংশ জমিতে বেগুনের প্রদর্শনী প্লট  করা জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন, যেখানে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক খুবই কম ব্যবহৃত হবে।

 

সেক্স ফোরামেন ট্যাব পদ্ধতি সহ বিভিন্ন টেকনিক্যাল পদ্ধতি গ্রহণ করা হবে। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ ক্রমে ললিতা হাইব্রিড বেগুন বীজ কিনে ২৫ সেপ্টেম্বর বীজ তলায় বোপণ করেন। পরিচর্যার মাধ্যমে ১লা নভেম্বর চারা গুলো রোপণ করা হয়।  এ সময় সিএফ মোঃ ফরিদুল ইসলাম সহ উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ ওসমান গনি সাহেব উপস্থিত ছিলেন। ভালোবাসার সহিত কৃষক মোঃ বদিউজ্জামান উক্ত পরিদর্শন প্লটের পরিচর্যা করেন। ১২ই ডিসেম্বর উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ ক্রমে সেক্স ফোরামেন ট্যাব পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়। ২০ শতাংশ জমিতে খরচ হয় সর্ব মোট ১০হাজার টাকা। ডিসেম্বর মাসে বেগুন উত্তোলন করা হয় ৪০ মণ। যার মূল্য ত্রিশ হাজার টাকা। জানুয়ারি মাসে বেগুন উত্তোলন করা হয় ত্রিশ মণ, মূল্য চব্বিশ হাজার টাকা মাত্র। 

 

এবং ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সাপ্তাহে ১৫ মন ৭৫০০টাকা বিক্রয় করা হয়। এবং বেগুন উত্তোলন ও বিক্রয় চলমান রয়েছে। সিএফ মোঃ ফরিদুল ইসলাম সহ উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ ওসমান গনি নিয়মিত পরিদর্শন ও পরামর্শ প্রদান করেন। 

কৃষি জমি পরিচর্জা করছেন কৃষক বদিউজ্জামান
কৃষি জমি পরিচর্জা করছেন কৃষক বদিউজ্জামান

 

সফলতার সহিত প্লটের কার্যক্রমে সফল হওয়ায় কৃষক মোঃ বদিউজ্জামান খুব খুশি ও আনন্দিত। 

 

 কৃষক বদিউজ্জামান এর অনুভূতি জানতে চাইলে, তিনি বলেন আমাদের গ্রামে বেগুন উৎপাদনকারী দল গঠন করা হয়, বিভিন্ন মিটিং ও সেশনের মাধ্যমে সিএফ মোঃ ফরিদুল ইসলাম উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ ওসমান গনি সাহেবের সাথে যোগাযোগ করে দেন।

 

কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ ক্রমে আমি ২০শতাংশ জমিতে বেগুনের প্রদর্শনী প্লট করি। যা অন্যান্য বছরের চেয়ে ভিন্ন। তার পরামর্শ অনুযায়ী রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার কমিয়ে , গোবর সার, কম্পোস্ট সার ও সবুজ সার বেশি ব্যবহার করি, সেক্সফোরামেন ট্যাব পদ্ধতি, সহ বিভিন্ন পদ্ধতি গ্রহণ করি। যার ফলে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর বিনিয়োগ খরচ অনেক কম হয়েছে। অপরদিকে অন্যান্য বছরের তুলনায় ফলন অনেক বৃদ্ধি হয়েছে। যার ফলে এবছর লাভের পরিমান বেশি হচ্ছে।

 

 আমি প্রতি সাপ্তাহে ১০/১২ মণ তরে বেগুন বিক্রয় করতেছি। ডিসেম্বর মাসে ৩০০০০টাকা এবং জানুয়ারি মাসে ২৪০০০টাকা আয় হয়েছে। এতে আমি ও আমার পরিবার সহ খুব খুশি। বদিউজ্জামান ও তার স্ত্রী ম্যানকেয়ার দলের সদস্য। স্বামী স্ত্রী মিলেমিশে পরামর্শ ক্রমে সাংসারিক কাজ গুলো করেন।

সফল কৃষক বদিউজ্জামানের ফসল দেখতে অন্যান্য কৃষকরা
সফল কৃষক বদিউজ্জামানের ফসল দেখতে অন্যান্য কৃষকরা

একই কৌশলে ফুল কপির প্লট,বাঁধা কপির প্লট, টমেটোর প্লট, শিমের প্লট, বড়বডির প্লট, ও শশার প্লট আলাদা আলাদা করে করা হয়েছে। যার ফলে অন্যান্য বছরের চেয়ে এবছর বাম্পার ফলন পাচ্ছি। এরকম সংস্থার সাথে জড়িত হয়ে কাজ করার সুযোগ পেয়ে আমি আনন্দিত। BIeNGS project, উন্নয়ন সংঘ কে ধন্যবাদ ও সাধুবাদ জানাই, আমাদের এরকম ভালো কিছু সুযোগ করে দেওয়ার জন্য। তিনি আরও বলেন সিএফ মোঃ ফরিদুল ইসলাম, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ ওসমান গনি, প্রোগ্রাম অফিসার গাব্রিয়েল পালমা, প্রোগ্রাম অফিসার মোঃ আল মজনু, ইকোনোমিকস ও ভেল্যু চেইন স্পেশালিষ্ট অফিসার মোঃ মামুন সাহেব নিয়মিত দেখাশোনা ও পরামর্শ দিয়েছেন। 

 

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ ওসমান গনি সাহেবের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি বদিউজ্জামানের বেগুনের প্রদর্শনী প্লট শুরু থেকে এ পর্যন্ত নিয়মিত পরিদর্শন ও পরামর্শ প্রদান করে আসছি।

 

 প্রোগ্রাম অফিসার গাব্রিয়েল পালমা, প্রোগ্রাম অফিসার মোঃ আল মজনু, ইকোনোমিকস ভেল্যু চেইন স্পেশালিষ্ট অফিসার মোঃ মামুন সাহেবের সাথে যোগাযোগ করলে, পরিদর্শন ও পরামর্শ প্রদান করেছেন বলে স্বীকৃতি দিয়েছেন।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর