• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

দেওয়ানগঞ্জে সরিষার ফুল থেকে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌ-চাষীরা

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ২০ ডিসেম্বর ২০২০  

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় সরিষার মৌসুমে সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৌ-চাষীরা। উপজেলায় সরিষা ক্ষেতগুলোতে হলুদের সমারোহ। ফুলে ফুলে মৌ মৌ গন্ধ। এক ফুল থেকে অন্য ফুলে গিয়ে মধু সংগ্রহ করছে মৌমাছি। পোষা মৌমাছি দিয়ে মধু আহরণ করছেন মৌ-চাষীরা।

উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, মৌমাছির মধু আহরণের ফলে সরিষার ফুলে ফুলে পরাগায়ন ঘটে এবং শতকরা ৩০ ভাগ বেশি ফলন হয়। মধু সংগ্রহে লাভবান হচ্ছেন মৌ-চাষীরা।

দেওয়ানগঞ্জ উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নাজমুল হুদা জানান, সরিষা ফুল থেকে মৌমাছি মধু আহরণের ফলে সরিষার বাম্পার ফলন হয় এবং সরিষা ক্ষেতে কৃষক ও মৌ-চাষী উভয়ই লাভবান হয়ে থাকেন। এতে বেকারত্বও দূর হচ্ছে।

চারদিন ধরে সরিষার ক্ষেতে মৌমাছির বাক্স বসিয়ে মধু আহরণ করছেন সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার সুন্দর বন গ্রামের ফজর আলীর ছেলে মৌচাষী রিয়াজল ইসলাম রাজু। উপজেলার চর আমখাওয়া ইউনিয়নের লংকার চর এলাকার সরিষার ক্ষেতে ৪ শতাধিক মৌমাছির বাক্স বসিয়ে মধু আহরণ করছেন ১০ জন শ্রমিক নিয়ে।

মৌ-চাষী রাজু বলেন, সরিষার মধু যেমন খাঁটি তেমনি সুস্বাদু। মানের দিক থেকেও উন্নত হওয়ায় এ মৌসুমে চাহিদাও বেশি। মধু উচ্চমাত্রার প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক হওয়ায় ব্যাপক চাহিদা থাকায় ওষুধ, মধু কোম্পানির ও খুচরাভাবে মধু বিক্রয় করে লাভবান হচ্ছেন মৌ-চাষীরা। গত বছর বিভিন্ন এলাকার সরিষার ক্ষেতে ৪০০টি কাঠের বাক্স স্থাপন করে অনেক মধু সংগ্রহ করায় লাভবান হয়েছি। প্রতিটি বাক্সে একটি রানী মৌমাছি, একটি পুরুষ মৌমাছি ও অসংখ্য এপিচ মেইলিফ্রা জাতের কর্মী মৌমাছি রয়েছে। কর্মী মৌমাছিরা মৌ মৌ গন্ধে ঝাঁকে ঝাঁকে ছুটে যায় সরিষার ফুলে ফুলে। পরে ফুলে থেকে মধু সংগ্রহ করে মৌমাছির দল নিজ নিজ কলোনিতে মৌচাকে এনে জমা করে। প্রথম ১৫ দিন পর প্রতিটি বাক্স থেকে চাষিরা ৫ কেজি মধু সংগ্রহ করেন তারপর প্রতি সপ্তাহে একবার ১০ মণের মতো মধু পাওয়া যায়। ৬ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হয় মধু।

তিনি আরও বলেন, এর আগে আমি সুন্দর বন এলাকায় বিভিন্ন ফুল যেমন-খলিশা, গোরান, কেউরা, বাইল, হরগোছা এছাড়াও কালিজিরা, ধনিয়া, লিচু, বড়ই ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে ৪ লাখ টাকার মধু বিক্রি করেছি। তবে গত বারের চেয়ে লাভ কম হবে এবার। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকার কারণে লোকসানও হতে পারে।

তিনি জানান, ২০০৫ সালে প্রথমে ৫০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে ২০টি বাক্স দিয়ে মৌচাষ শুরু করেন তিনি। বর্তমানে ৪০০টি বাক্সে মধু চাষ করছেন। যে কেউ মনোযোগ দিয়ে চাষ করলে অবশ্যই লাভবান হতে পারবেন বলে তিনি জানান।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি সরিষা মৌসুমে উপজেলায় ১৪ হাজার ১০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর