• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

দেশী প্রজাতির মাছ বিলুপ্তি থেকে রক্ষার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ২৩ জুলাই ২০২০  

বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতানুগতিক পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে এসে উন্নত ও আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষের মাধ্যমে দেশীয় প্রজাতির মাছকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মৎস্য খাতে বিনিয়োগের ফলে একদিকে যেমন নতুন নতুন কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি হয়, তেমনি সমৃদ্ধ হয় জাতীয় অর্থনীতি। তার সরকার মৎস্য খাতের গুরুত্ব উপলব্ধি করে দেশে মৎস্য সম্পদ রক্ষা ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে নানাবিধ কার্যকর ও ফলপ্রসূ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ফলে গত ১১ বছরে মাছের উৎপাদন ৫০ শতাংশের বেশি বেড়েছে।

 

বুধবার গণভবনের লেকে মাছ অবমুক্ত করে ‘জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২০’ উদ্বোধন ঘোষণা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। প্রেস সচিব জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন লেকে পোনামাছ অবমুক্ত করে মৎস্য সপ্তাহের উদ্বোধন ঘোষণা করেন এবং মৎস্যখাতের উন্নয়নে ভূমিকা রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

 

মৎস্য উৎপাদনে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ২০২০ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী স্বাদু পানির মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির হারে বাংলাদেশ এবার বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে উন্নীত হয়েছে। দেশ আজ মৎস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। বর্তমানে জনপ্রতি দৈনিক ৬০ গ্রাম চাহিদার বিপরীতে ৬২ দশমিক ৫৮ গ্রাম মাছ আমরা গ্রহণ করছি।

 

প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চাষের মাধ্যমে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে দেশবাসীকে অনুপ্রাণিত করতে ১৯৭৩ সালে গণভবনের লেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মাছের পোনা অবমুক্ত করেন। জাতির পিতা পাট, চামড়া, চা-এর সঙ্গে মাছকেও বাংলাদেশের রফতানি পণ্য হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন এবং মৎস্যসম্পদ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের দ্বিতীয় প্রধান খাত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন।

 

শেখ হাসিনা বলেন, দেশে প্রায় পৌনে পাঁচশত প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ এবং ২৫০ প্রজাতির বেশি স্বাদু পানির মাছ রয়েছে। এছাড়াও চিংড়ি, কাঁকড়া, শামুকসহ অসংখ্য মৎস্য সম্পদের আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বাজারে প্রচুর চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে।

 

কোভিড-১৯ এর মধ্যেও মৎস্য অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থার কর্মীবৃন্দ যেভাবে ঝুঁকি নিয়ে মাছের উৎপাদন, বিপণন এবং রফতানি অব্যাহত রেখেছেন, এজন্য প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, দেশের স্বার্থে এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। তিনি বলেন, মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি করে দেশের জনগোষ্ঠীর শুধু পুষ্টি চাহিদা পূরণ নয়, ব্যাপক কর্মসংস্থান, বিদেশে মাছ রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন আমাদের অন্যতম লক্ষ্য।

 

এ সময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম প্রধানমন্ত্রীকে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে সরকারের গৃহীত নানামুখী পদক্ষেপ ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করেন। তিনি বলেন, মৎস্যখাতে গত ১১ বছরে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে বাড়তি প্রায় ৬৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে এবং বৃদ্ধি পেয়েছে মৎস্য চাষী ও মৎস্যজীবীদের আয়। মা-ইলিশ রক্ষা ও জাটকা নিধন রোধে আমরা কার্যকর কর্মসূচী গ্রহণ করেছি। এর আওতায় জাটকা আহরণে বিরত দরিদ্র জেলেদের খাদ্য সহায়তা দেয়া অব্যাহত রয়েছে; ফলে ইলিশের উৎপাদন ২০০৯ সালের পরিমাণ থেকে দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।

 

গণভবন লেকে পোনামাছ অবমুক্তকরণের সময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম ছাড়াও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রওনক মাহমুদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম উপস্থিত ছিলেন।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর