• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

দোল উৎসবে যুবতীদের খোলা পিঠে অশ্লীল শব্দ লিখে বিতর্ক

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ৬ মার্চ ২০২০  

রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিটি রোড ক্যাম্পাসে গতকাল বৃহস্পতিবার দোল উৎসবের শাড়ি পড়া কিছু যুবতীদের খোলা পিঠে আবির দিয়ে অশ্লীন শব্দ লিখা ছবি ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছিল সেই সব ছবি। যা নিয়ে শুরু হয় হইচই। এ বার ওই ঘটনায় সিঁথি থানায় অভিযোগ জানালেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে ওই ঘটনায় যুক্ত পাঁচ ছাত্রছাত্রীকেও। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ওই ছাত্রছাত্রীরা সকলে হুগলির শ্রীরামপুর কলেজের পড়ুয়া।

গত কাল রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে দোল উৎসব পালিত হয়। সন্ধ্যার মধ্যে সেই উৎসবের বেশ কিছু ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। ছবিগুলিতে দেখা গিয়েছে, শাড়ি পরা কিছু মহিলার খোলা পিঠে আবির দিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান বিকৃত করে অশ্লীল শব্দ লেখা রয়েছে। অশ্লীল শব্দ লেখা রয়েছে কয়েকজন যুবকের বুকেও।

Debate at porn festival by writing obscene words on open backs of young women
অশ্লীল শব্দ লেখা রয়েছে কয়েকজন যুবকের বুকেও।

রবীন্দ্রভারতীর ছাত্রছাত্রীরা গোটা ঘটনায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী শুক্রবার বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার দুপুরেই ঘটনাটি আমাদের নজরে আসে। তার পরেই আমরা উপাচার্যের কাছে লিখিত ভাবে অভিযোগ জানাই। তিনি ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছিলেন।” আর এক ছাত্র বলেন, ‘‘বাইরের কিছু ছাত্রছাত্রীর জন্য আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নাম হচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্য এক ছাত্রী বলেন, ‘‘ওরা ৬ জন ছিল। তার মধ্যে পাঁচ জনকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। এটা বিকৃত মানসিকতার লক্ষণ।  ওদের জন্য আমাদের বদনাম হচ্ছে। এর পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও উৎসবে বাইরের কাউকে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হবে না। এখানকার পড়ুয়াদের নিয়েই উৎসব হবে।’’

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ছাত্রছাত্রীদের করা লিখিত অভিযোগকেই সিঁথি থানায় পাঠানো হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁরা অভিযোগ পেয়েছেন। জানা গিয়েছে, শ্রীরামপুর কলেজের ওই ছাত্রছাত্রীরা নিজেরাই এ দিন রবীন্দ্রভারতীতে এসে হাজির হয়েছেন। তাঁরা অনুতপ্ত বলে জানিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, ওই পড়ুয়াদের উপাচার্যের কাছে নিয়ে যাওয়া হবে। তিনি যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবেন। যদিও এই ব্যাপারে উপাচার্য সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরীকে এ দিন একাধিক বার ফোন করা হয়। কিন্তু, তিনি ফোন ধরেননি। জবাব দেননি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজরও।

রবীন্দ্রভারতীর এই দোল-কাণ্ডের নিন্দা করে সাহিত্যিক তিলোত্তমা মজুমজার বলছেন, ‘‘এ বসন্ত ঋতু নয়। বরং এ দৃশ্য অসুখের।’’ আর প্রাবন্ধিক-গবেষক নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ীর মতে, ‘‘এটা সাংস্কৃতিক বিকার। এ কোনও সংস্কৃতির অঙ্গই নয়, বরং অপসংস্কৃতি বলাই ভাল।’’

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর