• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

ধনী বর চেয়ে পূজার বিজ্ঞাপন; জবাবে শীর্ষ ধনী মুকেশ আম্বানি যা বলল!

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ৯ জুলাই ২০২০  

বছরে ১ শত কোটি রুপি আয় করা বর চেয়ে অনলাইন ফোরামে বিজ্ঞাপন পোস্ট দিয়েছিলেন ২৫ বছর বয়সের সুন্দরী যুবতী পূজা চৌহান।

 

ফোরামে পোস্টের বিজ্ঞাপনটি দেখে সুন্দরী পূজাকে বুদ্ধিদীপ্ত বা হৃদয় নিংড়ানো উত্তর দিলেন স্বয়ং ভারতের শীর্ষ ধনকুব মুকেশ আম্বানি। এ উত্তর এখন নেটিজেন দুনিয়ায় আলোচনার ঝড় বইয়ে দিচ্ছে।

অনলাইন ফোরামে পূজা চৌহান লিখেন, আমি চলতি বছর ২৫ বছরে পা দেব। দেখতে খুবই সুন্দরী, স্টাইলিশ, রুচিশীল। আমি একজন স্বামী চাই, যার বার্ষিক বেতন হবে ১০০ কোটি বা তারও বেশি। আপনি হয়তো বলবেন, আমি একটু বেশিই উচ্চাকাঙ্ক্ষী।

 

কিন্তু বর্তমানে বার্ষিক দুই কোটি টাকা বেতনে একেবারেই মধ্যবিত্তের মতো জীবনযাপন করতে হয়। সেদিক থেকে চাহিদা একেবারেই বেশি নয় আমা’র। এ ফোরামে ১০০ কোটি টাকা বেতনের সবাই কি বিবাহিত?

 

তিনি আরো লিখেন, কেন আপনাকে আমি বিয়ে করব? এখনো পর্যন্ত যতগুলো ডেটে গিয়েছি, এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেতনের পুরুষটির বেতন ছিল বার্ষিক ৫০ কোটি টাকা। অ’তএব আমি ৫০ কোটি টাকার পর থেকেই কাউকে স্বামী হিসেবে ভাবছি।

 

তার কারণ কেউ নিউইয়র্কের সবচেয়ে অ’ভিজাত এলাকায় বসবাস করলে বার্ষিক ৫০ কোটি টাকা বেতন একেবারেই যথেষ্ট নয়। আমি কিছু প্রশ্ন করছি।

 

কেন সব ধনী ব্যক্তিদের স্ত্রী’রা দেখতে মোটামুটি মানের হয়? আমা’র কিছু বান্ধবী আছে, তারা দেখতে খুব একটা ভালো নয়। তবে ধনী ব্যক্তিদের সঙ্গেই তাদের বিয়ে হয়েছে। ধনী ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে আমা’র প্রশ্ন, আপনি কী’ দেখে সিদ্ধান্ত নেন, এ মহিলা আমা’র স্ত্রী’ হবেন, আর ইনি গার্লফ্রেন্ড?

 

ওই ফোরামটিতে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের কর্ণধার মুকেশ আম্বানিও রয়েছেন। তিনি পোস্টটি দেখে বুদ্ধিদীপ্ত বা হৃদয় নিংড়ানো উত্তর দেন। সেই উত্তরটি হলো-

 

প্রিয় পূজা,

আমি আপনার পোস্টটি খুব মন দিয়ে পড়েছি। দেখলাম, আরো বহু মে’য়ের আপনার মতোই প্রশ্ন রয়েছে। দয়া করে একজন পেশাদার লগ্নিকারী হিসেবে আপনার প্রশ্নগুলোকে একটু বিশ্লেষণ করতে দিন।

 

আমা’র বার্ষিক আয় ১০০ কোটি টাকার বেশি। আপনার চাহিদা মতোই। কিন্তু একজন ব্যবসায়ী হিসেবে আপনাকে বিয়ে করা খুবই খা’রাপ সিদ্ধান্ত হবে। খুব সহ’জ উত্তর। দেখু’ন, আপনি চাইছেন, সৌন্দর্য ও টাকার বিনিময়।

 

অর্থাৎ আপনাকে বিয়ে করলে একজন সুন্দরী স্ত্রী’ পাওয়া যাবে। তার বদলে আপনি হবেন ধনী। কিন্তু সমস্যা হল, আপনার এ যৌবন ও সৌন্দর্য এক সময় শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু আমা’র টাকা শেষ হবে না। বস্তুত, প্রতি বছর আমা’র আয় বাড়বে। কিন্তু প্রতি বছরই আপনি আরো সুন্দরী হয়ে উঠবেন না।

 

অ’তএব অর্থশাস্ত্রের নিরিখে, আমি একজন অ্যাপ্রিসিয়েশন অ্যাসেট। আর আপনি ডেপ্রিসিয়েশন অ্যাসেট। অর্থাৎ আপনার যৌবন ও রূপই যদি আপনার সম্পত্তি হয়ে থাকে, তাহলে ১০ বছর পর আপনার সম্পত্তি অনেকটাই কমে যাচ্ছে।

 

ওয়াল স্ট্রিটে একটি প্রবাদ আছে, প্রত্যেক ট্রেডিংয়ের একটি পজিশন থাকে। আপনার সঙ্গে ডেটিং ও একটা ট্রেডিং পজিশন। যদি ট্রেড ভ্যালু কমে যায়, তাহলে তা আম’রা বিক্রি করে দিই। খামোখা দীর্ঘ মেয়াদী ফেলে রেখে লাভ নেই। একইভাবে আপনাকে বিয়ে করলেও তাই হবে। শুনতে খুব খা’রাপ লাগলেও সত্যি, যে কোনো সম্পত্তি, যার ডেপ্রিসিয়েশন ভ্যালু বেশি, তা বিক্রি করে দেয়া বা লিজ দেয়াই লাভজনক।

 

যে ব্যক্তির বার্ষিক আয় ১০০ কোটি টাকা, সে নিশ্চয়ই বোকা নয়। ব্যবসায়ী দৃষ্টিভঙ্গিতে আপনার সঙ্গে ডেট করাই যায়। কিন্তু বিয়ে করা যায় না। অ’তএব কোনো ধনীকে বিয়ে করার স্বপ্ন আপনার না দেখাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। বরং নিজে ১০০ কোটি আয় করার চেষ্টা করুন। কোনো ধনীকে বোকা বানানোর চেয়ে ভালো হবে। আশা করি, উত্তরটি আপনাকে ভাবতে সাহায্য করবে।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর