• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

টাঙ্গাইলে নিহত কালচারাল অফিসারের শিশুর ঠাঁই মামা-মামির ঘরে

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ২৬ এপ্রিল ২০২১  

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে জন্ম নেওয়ার চারদিনের মাথায় বাবার হাতে মায়ের খুন হওয়া সেই কন্যা শিশুটি আইনি প্রক্রিয়ায় ৩৫দিন পর প্রশাসনের সহযোগিতায় মামা-মামির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে মামা-মামিই তার বাবা-মা।

রোববার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় শিশু কল্যাণ বোর্ডের সদস্যরা কুমুদিনী হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে শিশু কন্যাটিকে বৈধ অভিভাবক হিসেবে মামা খন্দকার আশরাদুল হক এবং মামি সাবিহা ইসলামের হাতে তুলে দেন।

জানা যায়, জন্মের চার দিনের মাথায় বাবা দেলোয়ার রহমান মিজানের হাতে মা জেলা কালচারাল অফিসার খন্দকার রেদোয়ানা ইসলাম ইলু খুন এবং খুনের মামলায় আসামি হয়ে বাবা পলাতক থাকায় অসহায় শিশুটির ঠিকানা হয়েছিল কুমুদিনী হাসপাতালের শিশু বিভাগে।

হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা শিশুটিকে আদর-মমতা দিয়ে লালন পালনকালে নাম রেখেছিল রোদেলা।

মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ মার্চ দুপুরে কুমুদিনী হাসপাতালে টাঙ্গাইল জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার খন্দকার রেদোয়ানা ইসলাম ইলুকে তার স্বামী দেলোয়ার রহমান মিজান বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার পর পালিয়ে যান। তখন থেকেই বাবা-মা ছাড়া অসহায় ফুটফুটে শিশু কন্যার আশ্রয় হয় কুমুদিনী হাসপাতাল।

শিশুটির লালন-পালন নিয়ে গত ১ এপ্রিল টাঙ্গাইল জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। শিশুটির দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে জেলা প্রশাসক ডক্টর মো. আতাউল গনির সভাপতিত্বে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়।

অন্যদিকে, মামলার বাদি ও কালচারাল অফিসার খন্দকার রেদোয়ানা ইসলাম ইলুর ভাই খন্দকার আশরাদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, বিয়ের পর থেকেই তার বোনের উপর স্বামী মিজান অমানবিক অত্যাচার-নির্যাতন করছিল। মিজান সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি টাঙ্গাইল থেকে সম্প্রতি ভোলা জেলায় বদলি হয়ে যান।

গত ২২ মার্চ প্রসব ব্যাথা নিয়ে তার বোন খন্দকার রেদোয়ানা ইসলাম ইলু কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি হন। ওইদিনই কন্যা শিশুর জন্ম হয়। তার বোনের ছুটি হলেও শিশু কন্যা অসুস্থ্য থাকায় কেবিন ভাড়া নিয়ে তিনি থেকে যান।

গত ২৭ মার্চ মিজান কুমুদিনী হাসপাতালে শিশু কন্যাকে দেখতে আসেন। মিজানকে ওয়ার্ডে রেখে তার মামি খোদেজা বেগম শিশু কন্যাকে দুধ খাওয়ানের জন্য তিন তলায় যান। ফিরে এসে দেখেন রুমের দরজায় তালা।

ঘটনাটি কর্তব্যরত নার্স ও চিকিৎসকদের জানালে তারা বিকল্প চাবি এনে দরজা খুলে দেখেন বালিশ চাপা দিয়ে তার বোন ইলুকে হত্যার পর ঘাতক স্বামী মিজান পালিয়েছেন।

তিনি অভিযোগ করেন, তার বোনকে পরিকল্পিত ভাবে খুন করা হয়েছে। এ বিষয়ে মির্জাপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। খুনের পর থেকেই দেলোয়ার রহমান মিজান পলাতক রয়েছেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও মির্জাপুর থানার এসআই মো. শাজাহান মিয়া জানান, মামলার পর থেকে একমাত্র আসামি দেলোয়ার রহমান মিজানকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তাকে গ্রেপ্তারে বিভিন্ন তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর