বাংলাদেশ : সময় এখন সার্বিক উন্নতির
দৈনিক জামালপুর
প্রকাশিত: ১৬ মার্চ ২০২১
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর অর্থাৎ সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে আমরা সবাই আনন্দিত এবং উজ্জীবিত। সঙ্গে সঙ্গে ভবিষ্যতের দিকেও তাকিয়ে আছি আমরা, আরও উন্নতি ও অগ্রগতির দিকে। একটা বিষয় এখন উপলব্ধি করার প্রয়োজন আছে সেটা হলো এখন শুধু আত্মতুষ্টির সময় নয়, প্রস্তুতির সময়ও, অর্থাৎ দেশের আপামর জনসাধারণের সামষ্টিক উন্নতি-অর্থনৈতিক, সামাজিক, জীবনযাত্রার গুণগত মানের উন্নতি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের সংগ্রামের পেছনে দুটি কারণ ছিল, প্রথমত পাকিস্তান বিশেষ করে পশ্চিম পাকিস্তানি শাসক থেকে রাজনৈতিক ও স্বাধিকার। দ্বিতীয়ত অর্থনৈতিক উন্নয়ন, অর্থাৎ এই ভূখণ্ডের মানুষের সার্বিক উন্নতি। নানা ঘাতপ্রতিঘাত পেরিয়ে আমরা বর্তমান পর্যায়ে উপনীত হয়েছি।
তবে বিশেষ লক্ষণীয় যে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য সচেষ্ট সবাই। কোন সরকার কতটুকু অর্জন করেছে সেটা চুলচেরা বিশ্লেষণ এবং দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপার কিন্তু বলা যেতে পারে একটা সন্তোষজনক জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে অন্যান্য দেশের তুলনায় বিশেষ করে অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের তুলনায়। ইদানীং যে দুটি বিশেষ অর্জন নিয়ে আলোচনা চলছে, একটা হলো দেশ এখন নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ হিসাবে পরিচিত এবং আমাদের প্রত্যাশা আমরা দ্রুত উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হব।
আর একটা হলো, এখন জাতিসংঘের সংজ্ঞা অনুযায়ী অনুন্নত দেশের পর্যায় থেকে উন্নয়নশীল পর্যায়ের দেশ হিসাবে গণ্য হবে। কতগুলো সূচকের ওপর ভিত্তি করে এসব পর্যায়গুলো ঠিক করা হয়। সরকার অবশ্য ২০২৬ পর্যন্ত সময় নিয়েছে আনুষ্ঠানিকভাবে উন্নয়নশীল দেশের ঘোষণা করার জন্য। এটা একটা সঠিক পদক্ষেপ, কারণ ন্যূনতম পাঁচ বছর লেগে যাবে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করার জন্য এবং অবস্থানটিকে টেকসই হিসাবে দাঁড় করানোর জন্য।
কোভিড-১৯ এর মহামারির ফলে সমগ্র বিশ্বের সব দেশের স্বাস্থ্য-আর্থসামাজিক-রাজনৈতিক সব ক্ষেত্রে কতগুলো চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে। গতানুগতিক ধারায় সব কিছু আবারও স্বাভাবিক হবে এবং এগিয়ে যাবে এটা প্রত্যাশা করা মোটেও সমীচীন হবে না।
সামষ্টিক অর্থনীতি পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, আমাদের প্রবৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, রেমিটেন্স, মূল্যস্ফীতি এবং বৃহৎ শিল্প ও সেবা খাত মোটামুটি সন্তোষজনক পর্যায়ে রয়েছে। তবে সেগুলোর সুফল সুষমভাবে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছায়নি। সমস্যাগুলো এখানেই।
দিনে দিনে ব্যক্তিগত আয় ও সম্পদের বৈষম্য বাড়ছে, কর্মসংস্থানের স্বল্পতা হেতু বেকার জনসংখ্যা (বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে) বাড়ছে, মূল্যস্ফীতি বিশেষ করে খাদ্যদ্রব্য এবং অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রীর (যাতায়াত, বাড়ি ভাড়া, স্বাস্থ্যসেবা ইত্যাদি) ব্যয়ভার বাড়ছে। যার ফলে দরিদ্র, নিম্নবিত্ত এমনকি মধ্যবিত্তদেরও আঘাত করছে।
কোভিড-১৯ এর মহামারিতে আমাদের স্বাস্থ্যব্যবস্থার ঘাটতি ধরা পড়েছে। আমাদের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার কিছুটা উন্নতি হলেও রোগের পরের ধাপ এবং নিরাময়ের ক্ষেত্রে দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগণ ভুগছে, শিশু ও মাতৃ অপুষ্টির হার, বিশেষ করে চরাঞ্চল ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখনো আশঙ্কাজনক। শিক্ষার হার বেড়েছে আনুষ্ঠানিক শিক্ষায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে, কিন্তু শিক্ষার মান বাড়েনি। শিক্ষা, প্রশিক্ষণ অনেক ক্ষেত্রে বিষয়াদির যথার্থতায় কিছুটা ঘাটতি থাকাতে শিক্ষা শেষে কর্মজীবন এমনকি আত্মকর্মসংস্থানেও তরুণ ও যুবকদের বেগ পেতে হচ্ছে।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান, যেমন ব্যাংক, বীমা, ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান, পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণ ও তদারকির দুর্বলতার জন্য অর্থনৈতিক উন্নয়ন আরও দ্রুত ও জনগণের কল্যাণের জন্য সুষম হচ্ছে না। বিনিয়োগ আশানুরূপ নয় বিশেষ করে কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে খুবই স্বল্প। এগুলো হলো মোটাদাগে আমাদের মূল সমস্যা। সব কিছু ছাড়িয়ে যেটা দেখা যাচ্ছে, দুর্নীতি এবং অর্থের অপচয়।
নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনার শক্ত প্রয়োগ এবং আইন ও নীতিমালার প্রয়োগ ও পরিপালনের অভাবে দিন দিন সব অর্জনগুলো হুমকির মুখে পড়ছে। এর ফল হচ্ছে অর্থপাচার, কিছু সংখ্যক ব্যক্তির অযৌক্তিক ভোগ বিলাস এবং সাধারণ জনগণের ওপর আর্থিক ও মানসিক চাপ, যাতে স্বাধীনতার মূল উদ্দেশ্যগুলোও ব্যাহত হতে পারে।
আমাদের প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজন বেশ কিছু বলিষ্ঠ পদক্ষেপ নেওয়া ও সেগুলোর বাস্তবায়ন। প্রথমত, আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা বিশেষ করে নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো, উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো, বাজারব্যবস্থায় প্রতিযোগিতা ও সুষম ক্ষেত্র আনা যা সব উদ্যোক্তা ও সৎ ব্যবসায়ীদের প্রেরণা জোগাবে। দ্বিতীয়ত, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় সংস্কার আনা, ব্যাংক কোম্পানি আইন, বিমা আইন, পুঁজিবাজার সম্পর্কিত আইন, প্রতিযোগিতা আইন এগুলোকে যুগোপযোগী করা এবং কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা। তৃতীয়ত, সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনা আরও স্বচ্ছ এবং সুষ্ঠু করা।
সরকারি অর্থায়নে গ্রহণকৃত বিভিন্ন প্রকল্প, বিভিন্ন প্রশাসনিক কার্যক্রমে দুর্নীতি অপচয় বন্ধ করা। প্রশাসনকে আরও স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক করা। সরকারে রাজস্ব আদায় ও কর ব্যবস্থাকে আরও দক্ষ, কর্মতৎপর, ব্যবসা ও জনগণবান্ধব হিসাবে পরিণত করতে হবে। একই সঙ্গে এসব ক্ষেত্রে সব প্রক্রিয়া ও কার্যক্রম হতে হবে সুষম উন্নয়ন ও বৈষম্য হ্রাসের মাধ্যম হিসাবে। চতুর্থত, সরকারি প্রশাসন ও উন্নয়ন কার্যক্রম বিকেন্দ্রিকরণ করতে হবে।
সবকিছুই রাজধানী এবং কিছু বৃহৎ শহরভিত্তিক হয়ে যাচ্ছে, সেটার বিপরীত স্রোতে এখন যেতে হবে। স্থানীয় প্রশাসন, পল্লি অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়ন, কৃষি ও সংশ্লিষ্ট অত্যাবশ্যকীয় ক্ষেত্র (পশুপালন, মৎস্য উৎপাদন ইত্যাদি) এবং পল্লি অঞ্চলে শিল্প-বাণিজ্যের বিস্তার এসব ক্ষেত্রে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। পঞ্চমত, শিল্প-বাণিজ্য প্রসারের ক্ষেত্রে রপ্তানি বহুমুখীকরণ, কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পগুলোকে সরকারি ও বেসরকারি সব পর্যায়গুলোতে সম্প্রসারিত করতে হবে।
ইদানীং কোভিড-১৯ উত্তর সরকারি আর্থিক প্রণোদনার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর এসব কর্মকাণ্ড মোটেও সন্তোষজনক নয়, এরকম যেন পুনরাবৃত্তি না হয়। ষষ্ঠত, দেশের আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর, শৃঙ্খলা এবং জবাবদিহিতা আনতে হবে। সবশেষে যেটা উল্লেখ্য যে-সুশাসন, জবাবদিহিতা এবং সব ক্ষেত্রে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত না করলে ভবিষ্যতে আমরা যে চ্যালেঞ্জগুলোর মোকাবিলা করতে হবে সেগুলোর সুরাহা করা অত্যন্ত কঠিন হবে, সেজন্য দরকার রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং আপামর জনসাধারণের সহযোগিতা ও কার্যকরী অংশগ্রহণ।
আমাদের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০২০-২৫) ‘সকলের সঙ্গে সমৃদ্ধির পথে’ (প্রোমোটিং প্রসপারিটি অ্যান্ড ফস্টারিং ইনক্লুসিভনেস) এবং জাতিসংঘের ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য’ (সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস)-এর দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখে আমাদের নিজস্ব বাস্তবসম্মত কার্যক্রম নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
লেখক : সাবেক গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক
- বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার ইতিহাস ১৯৭৫ সালের পর বিকৃত করা হয়েছে
- কুড়িগ্রামে নতুন বাণিজ্য সম্ভাবনা
- বাজার নিয়ন্ত্রণে আরও ক্ষমতা পাচ্ছে সরকার
- অর্থনীতিতে গতি ফেরাতে যত পরিকল্পনা
- শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দেয়ার নির্দেশ
- শিল্পে দ্রুত ইভিসি মিটার দেবে তিতাস
- ঢাকায় দুদিনের সফরে আসছেন কাতারের আমির
- পাল্টে যাচ্ছে রাজধানীর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চেহারা
- কূপ খননে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে তিন কোম্পানি
- ব্যাংক কর্মকর্তাসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
- শাহজালালের থার্ড টার্মিনাল পুরোপুরি চালুর অপেক্ষা
- বকশীগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রারের উপর হামলা: একজন গ্রেপ্তার
- রৌমারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এর বিরুদ্ধে মানববন্ধন
- ইসলামপুরে কৃষকরা পেল উন্নত মানের বীজ
- কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শনে ভুটানের রাজা
- চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তৎপর হওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
- বাংলাদেশ সমগ্র বিশ্বে আত্মমর্যাদাশীল একটি জাতি : স্পিকার
- ভারতের কাছে পাঁচটি খাদ্যপণ্যের নিশ্চিত সরবরাহ চায় বাংলাদেশ
- চীনের সঙ্গে রাজনৈতিক-অফিসিয়াল যোগাযোগ বাড়াতে প্রস্তুত বাংলাদেশ
- হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্টের কাছে বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র পেশ
- বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর স্বাধীনতা ঘোষণার ইতিহাস বিকৃত করা হয়
- বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত অস্ট্রেলিয়া
- বাংলা নববর্ষ উদযাপনে মানতে হবে ১৩ নির্দেশনা
- পদ্মাসেতুর নির্মাণশৈলী দেখে মুগ্ধ ভুটানের রাজা
- অ্যানেসথেসিয়াজনিত দুর্ঘটনা প্রতিরোধে মন্ত্রণালয়ের ৬ দফা নির্দেশনা
- ঈদে সরকারি ছুটির সমান ছুটি পাবেন শ্রমিকরা
- ভারত থেকে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ আনছে টিসিবি
- ড. ইউনূসের ‘দ্য ট্রি অব পিস’ পুরস্কারের খবর সত্য নয়
- লাগামহীন ওষুধের দাম
- বিএনপি ইহুদি ও ইসরায়েলের দোসরে পরিণত হয়েছে
- আসছে ১৫০০ টন ভারতীয় পিঁয়াজ
- বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে পদ্মা ব্যাংক পিএলসির চুক্তি স্বাক্ষর
- বাংলাদেশ সফরে আসছেন সুইডেনের ক্রাউন প্রিন্সেস
- দুই নারী আম্পায়ারকে নিয়োগ দিচ্ছে বিসিবি
- বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস আজ
- ভারত থেকে আসছে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ
- জামালপুরে যমুনা নদী রুই মাছের জীবন রহস্য উদঘাটন
- জি-মেইলের বিকল্প এক্স-মেইল আনছেন ইলন মাস্ক
- জুতা সেলাই করে সংসার চলে ববিতার
- সিরিজ জয়ের জন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে প্রধানমন্ত্রীর অভিনন্দন
- তারহীন ইন্টারনেট সংযোগ দিতে পারবে ৩ মোবাইল অপারেটর
- মেলান্দহে ব্যাংক গ্রাহক সেবা উন্নয়নে সভা
- বকশীগঞ্জে জাতীয় পরিসংখ্যান দিবস পালিত
- স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মান,নারীদের অধিকার আদায়-সাবলম্বী করতে চাই
- ঝালকাঠিতে শিশু হত্যা মামলায় যুবকের ফাঁসি, নারীর যাবজ্জীবন
- স্যামসাং টিভিতে এখন দেখা যাবে টফি অ্যাপ
- রংপুর থেকে ঢাকা সময় লাগবে মাত্র ৫ ঘণ্টা
- কাগজের কার্টনে মিলল শিশুর লাশ
- সাগর থেকে পাইপলাইনে তেল এল ইআরএলে
- ভুটানকে উড়িয়ে দিলো বাংলাদেশ