• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

বাজেটে জিডিপির আকার হবে ৩১ লাখ ৭১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ৪ জুন ২০২০  

বৈশ্বিক মহামারি করোনার দেশের অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ে শঙ্কা থাকলেও আগামী অর্থবছরের বাজেটে জিডিপির চলতি বাজারমূল্য ধরা হচ্ছে ৩১ লাখ ৭১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের চেয়ে আগামী অর্থবছরের জিডিপির আকার দুই লাখ ৮৫ হাজার ৯২৮ কোটি টাকা বাড়ছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

 

এ ব্যাপারে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, ধীরে ধীরে পৃথিবী আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে। করোনাভাইরাসের টিকাও আসার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তাই জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে ‘করোনা সংকট’ খুব বেশি প্রভাব ফেলবে বলে মনে হয় না। এই হিসাব ধরেই আগামী বাজেটের জিডিপির চলতি বাজারমূল্য ঠিক করা হয়েছে।

 

এ ব্যাপারে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আগামী অর্থবছরের জন্য জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশের বেশি ধরা হলে তা হবে অবাস্তব। কারণ আমাদের রপ্তানি ভালো না। উৎপাদনশীল খাতের সাপ্লাই চেইনে সমস্যা। রপ্তানির পাশাপাশি আমদানিতে সমস্যা। এগুলো ঠিক না হলে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ভালো হবে না।

 

সূত্র মতে, জিডিপি বলতে বোঝানো হয়ে থাকে, ‘একটি দেশের ভেতর সব রকম দ্রব্যের উৎপাদন ও সেবামূলক কাজের মূল্যভিত্তিক যোগফল।’ করোনার আঘাতে সব কিছু লণ্ডভণ্ড হয়ে যাওয়ার আগে গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল উল্লেখ করার মতো। তবে এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। উৎপাদন থেকে শুরু করে আমদানি-রপ্তানি প্রায় থমকে আছে। এরই মধ্যে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে অর্থনীতিতে। অর্থ মন্ত্রণালয় বাস্তব অবস্থা বিবেচনা করে চলতি অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে সংশোধন আনে। চলতি অর্থবছরে জিডিপির চলতি বাজারমূল্য ধরা হয়েছে ২৮ লাখ ৮৫ হাজার ৮৭২ কোটি টাকা। করোনাভাইরাস আঘাত হানলে সংশোধিত বাজেটে ৮০ হাজার ১৭২ কোটি টাকা কমিয়ে ২৮ লাখ ৫ হাজার ৭০০ কোটি টাকা করা হয়। অর্থাৎ চলতি অর্থবছরের বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৮.২ শতাংশ থাকলেও তা কমিয়ে ৫.২ শতাংশ করা হয়। আগামী অর্থবছরে অর্থনীতির চাকা আবার সচল হবে—এমনটা ধরে নিয়ে নতুন বাজেটে আবারও বড় লক্ষ্য দিতে যাচ্ছে সরকার। চলতি বাজারমূল্যে এর পরিমাণ ৩১ লাখ ৭১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। সংশোধিত চলতি বাজারমূল্য থেকে এটি তিন লাখ ৬৬ হাজার ১০০ কোটি টাকা বেশি। সে হিসাবে আগামী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা প্রাক্কলন করা হয়েছে ৮.২ শতাংশ।

 

এক যুগেরও বেশি সময় ধরে জিডিপির চলতি বাজারমূল্য বাড়ছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) সূত্র জানায়, চলতি বাজারমূল্যে ২০০৮-০৯ অর্থবছরে জিডিপির আকার ছিল ৬ লাখ ৯৪ হাজার কোটি টাকা। প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতায় এটি ২০০৯-১০ অর্থবছরে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি, ২০১০-১১ অর্থবছরে ৯ লাখ ১৬ হাজার কোটি, ২০১১-১২ অর্থবছরে ১০ লাখ ৫৫ হাজার কোটি, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ১১ লাখ ৯৯ হাজার কোটি, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ১৩ লাখ ৪৪ হাজার কোটি, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ১৫ লাখ ১৬ হাজার কোটি, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১৭ লাখ ৩৩ হাজার কোটি এবং ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১৯ লাখ ৭৬ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত হয়। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ২২ লাখ ৫০ হাজার ৪৭৯ কোটি টাকা।

 

২০১৮-১৯ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে দেশের মোট জিডিপির আকার ছিল ২৫ লাখ ৩৬ হাজার ১৭৭ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে জিডিপির চলতি বাজারমূল্য ধরা হয়েছে ২৮ লাখ ৮৫ হাজার ৮৭২ কোটি টাকা। পরে সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে এনে ধরা হয় ২৮ লাখ ৫ হাজার ৭০০ কোটি টাকা।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর