• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

মামুনুল কি গ্রেনেড হামলার আসামি শহিদুলের সাথে মাদ্রাসা দখল করেননি

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ২৭ নভেম্বর ২০২০  

এভাবে চলতে পারে না। দৈনিক সমকাল, মামুনুল হকের মাদ্রাসা দখল নিয়ে অভিমত প্রকাশ করেছে। এর প্রতিবাদে ২৭ তারিখ বায়তুল মোকাররমে বিক্ষোভ ডাকা হয়েছে। এর আগে একাত্তর টিভির বিরুদ্ধে সমাবেশ ও বয়কট ঘোষণা করেছিলো। যমুনা টিভিকে ক্ষমা চাইতে হয়েছে। বাবুনগরীর সমালোচনা করে মুচলেকা দিতে হয়েছে। এতো বাহানা না করে সরাসরি আইন প্রণয়নের দাবি করলেই হয় যে, হেফাজত নেতারা নবী রাসুলদের মতো নিষ্পাপ ও মাসুম, তাদের সমালোচনা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বিভিন্ন সময়ে পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্ট প্রসঙ্গে বলি। মামুনুল হক কি গ্রেনেড হামলার আসামি মুফতি শহিদুলের সঙ্গে মাদ্রাসা দখল করেননি? মামুনুল হক ও তার ভাইকে কি মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কার করা হয়নি? মুফতি মনসুরুল হকের মতো সহজ সরল একজন মানুষের উপর জুলুম করা হয়নি? অভিযুক্ত জঙ্গি ও জামায়াত শিবির নিয়ে খেলাফত মজলিসের কার্যালয় দখল করা হয়নি? দেশের নামকরা জঙ্গিদের সঙ্গে খেলাফত মজলিস বা আজিজুল হকের মাদ্রাসার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ যোগাযোগের কথা অস্বীকার করতে পারবে তারা? মোহাম্মদপুরের মাদ্রাসায় জবাই করে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আজিজুল হক-সহ ১০০ মাদ্রাসার ছাত্র গ্রেপ্তার হননি?

হরকাতুল জেহাদ সংশ্লিষ্টতা-সহ এ অভিযোগগুলোর প্রতিবেদন পত্রিকাতেই প্রকাশিত হয়েছিল। ধর্মের ঠিকাদাররা তাদের সমালোচনা প্রকাশিত হলে তা মিথ্যা ও ধৃষ্টতাপূর্ণ বলে অভিহিত করে নিজেরাই মিথ্যাচার করে এবং তা কিছু পত্রিকায় প্রকাশিতও হয়। আশ্চর্য! তাদের প্রতি বিবেক সম্পন্ন মানুষের শ্রদ্ধা ও আস্থা থাকে কীভাবে? আবার যে যমুনা টিভিকে হেনস্থা করা হলো সেখানে বয়ান দেন আহমদউল্লাহ নামে এক উগ্রবাদী। একাত্তর টিভি বয়কটের ডাক সে প্রথম দিয়েছিলো। সব ইস্যুতেই সে উস্কানি দেয়। এভাবে হয় না। এ জাতীয় কোনো বিক্ষোভের অনুমতি দেওয়া অনুচিত। সাংবাদিক ও প্রগতিশীল ব্যক্তিদের পাশাপাশি সকলের উচিত এসব অনাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া উচিত। সাংবাদিকদেরও উচিত এক্ষেত্রে বৃহত্তর স্বার্থের কথা বিবেচনা করা। জাস্টিসিয়া ইস্যুতে ছাড় দেয়ায় তারা এখন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে ঔদ্ধত্য দেখাচ্ছে। চাপে পড়ে বা কৌশলগত কারণে হয়তো এখন এ ইস্যু থেকে সরে আসতে পারে। কিন্তু মিডিয়ার উপর চাপ সৃষ্টি সহ ‘মামু বাড়ির বিভিন্ন আবদার’ জানানো অব্যাহত রাখবে। নমনীয়তা দেখানো আত্মঘাতী হবে।

তারা বহুবার ঘোষণা দিয়েছে যে আফগানিস্তানের মতো হুকুমত কায়েম করবে এবং ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি যারা করে তাদের পিঠের চামড়া তুলে নেবে। তারা নিজেদের বাইরে অন্য ইসলামী মতাদর্শকেও মেনে নিতে পারে না। মসজিদ মাদ্রাসা ভাঙচুরের পক্ষেও নির্লজ্জভাবে সাফাই দেয় তারা। পৃথিবীর সব মুসলিম দেশে ভাস্কর্য থাকার পরও যারা ভাস্কর্য মেনে নিতে পারে না, তারা কতোটা ভয়ংকর তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এই দানবদের এখনি থামানো উচিত। কিছু রাজকতা হলেও বলপ্রয়োগ করলে এখন তা সামাল দেওয়া যাবে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে তা সামাল দেওয়া যাবে না। ডিজিটাল বাংলাদেশ, ভিশন ২০৪১ বা উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ- এসবই মূল্যহীন হয়ে যাবে। আফগানিস্তান ও সিরিয়ার মতো সকল সম্ভাবনা শেষ হয়ে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে যাবে দেশ। নীতি-নির্ধারকদের কানে যাবে কিনা জানি না, গেলেও বিবেচনায় আনা হবে কিনা জানি না। তবে আমরা যারা এগুলো নিয়ে চিৎকার করি তারা অন্তত নিজেকে শান্তনা দিতে পারবো যে সচেতন করার বৃথা চেষ্টা করেছিলাম।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর