• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর
সর্বশেষ:

শত কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পে বদলে যাচ্ছে মেলান্দহ পৌরসভা

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ৪ নভেম্বর ২০২০  

শত কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে পাল্টে যাচ্ছে জামালপুরের মেলান্দহ পৌরসভার চিত্র, বৃদ্ধি পেয়েছে নাগরিক সুবিধা। এই উন্নয়ন ধারা অব্যাহত রাখতে পৌরবাসীর সহায়তা চেয়েছেন মেয়র শফিক জাহেদী রবিন।

তিনি জানান, তিনি মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে বিগত পাঁচ বছরে মেলান্দহ পৌরসভার ব্যাপক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে পৌর নাগরিকদের সেবার মান বাড়াতে পেরেছেন। পৌরসভার বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন, রাস্তাঘাট, ড্রেন, কালভার্ট সংস্কার ও নির্মাণ, সড়কবাতি স্থাপন, অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণের মাধ্যমে বিদ্যুৎ খরচ কমিয়ে আনা, শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে টারসিয়ারি ড্রেন, সেকেন্ডারি আরসিসি ড্রেন, বিভিন্ন মসজিদ-মাদ্রাসার সংস্কার ও উন্নয়নসহ সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে সুপেয় পানি সরবরাহ উন্নয়নে।


তিনি বলেন, ‘পৌর নাগরিকদের জন্য সার্বক্ষণিক আর্সেনিকমুক্ত সুপেয় পানি সরবরাহের জন্য ইতোমধ্যে দুই কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩৫ দশমিক ৪১ কিলোমিটার পানির পাইপলাইন স্থাপন, ৯১ লাখ ৬৬ হাজার টাকা ব্যয়ে দুটি উৎপাদক নলকূপ, চারটি পরীক্ষামূলক নলকূপ ও একটি ইলেক্ট্রো মেকানিক্যাল পাম্পহাউজ স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া বর্তমানে ঘণ্টায় ১৮৩ ঘন মিটার ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন পাঁচ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয়ে আধুনিক পানি শোধনাগার নির্মাণ প্রকল্পের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। এছাড়াও পৌরসভার চারটি দরিদ্র এলাকা চিহ্নিত করে দরিদ্রদের সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আরসিসি রাস্তা, সড়কবাতি, স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য ১৫৫টি পাকা টয়লেট, সুপেয় পানির জন্য ৪২টি নলকূপ স্থাপন করেছি। এছাড়াও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তিদের ১৬৫টি গভীর নলকূপ সরবরাহ করা হয়েছে।’

মেয়র জানান, পৌরসভার অবকাঠামোগত উন্নয়নে ৪২ কোটি টাকা, ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বর্তমানে ভূমি অধিগ্রহণের কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়া জামালপুরের আট পৌরসভা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় পৌরসভা ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও পানি সরবরাহ নেটওয়ার্ক স্থাপনের জন্য ২৭ কোটি টাকা ও ১১.০৫৩ কিলোমিটার টারসিয়ারি ড্রেন, সেকেনডায়ি ড্রেন স্ল্যাপসহ আরসিসি ড্রেন নির্মাণের জন্য ১৭ কোটি টাকা বরাদ্দ আছে, যা দ্রুতই কাজ শুরু করা যাবে।

মেয়র বলেন, ‘মেলান্দহ বাজার ও রেলস্টেশনসহ বিভিন্ন স্থানে চারটি আধুনিক পাবলিক টয়লেট এবং বিভিন্ন স্থানে আরো ১২টি কমিউনিটি পাবলিক টয়লেট স্থাপন করা হয়েছে। নারী-পুরুষ বৈষম্য দূরকরণ, অসচ্ছল নারীদের সেলাই কাজের প্রশিক্ষণ ও সেলাই মেশিন বিতরণসহ সামাজিক নিরাপত্তামূলক বিভিন্ন উন্নয়ন ও সেবামূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন করে নাগরিকদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। এতে মেলান্দহ পৌর নাগরিকদের সেবার মান কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।’

পাঁচ বছর আগে পৌর কর্মচারীদের বেতন ও উন্নয়ন কাজের বকেয়াসহ প্রায় কোটি টাকা ঋণের বোঝা ঘাড়ে নিয়ে দায়িত্বভার গ্রহণের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পৌরসভার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প সঠিকভাবে বাস্তবায়ন এবং কোন প্রকার অনিয়মের সুযোগ না দিয়ে, অযাচিত ব্যয় কমিয়ে বা ব্যয় সাশ্রয় করে পৌর কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করার পরও বর্তমানে পৌরসভার রাজস্ব তহবিলে ৪৬ লাখ ১৩ হাজার ৩৭২ টাকা স্থিতি রেখে যেতে পেরেছি।’

পৌরসভার নিয়ন্ত্রাধীন মেলান্দহ বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী শহীদ বলেন, ‘আগের সামান্য বৃষ্টিতেই বাজারে হাটু পানি জমে থাকত। মানুষের যাতায়াত ও ব্যবসা-বানিজ্য করতে সমস্যা হতো। এখন বাজারের চারপাশে পাকা সড়ক ও ড্রেন করায় পানি জমে না। এছাড়া সড়কে বাতি দেয়ায় চুরি ছিনতাই অনেকটাই কমে গেছে।’

এই উন্নয়ন ধারা অব্যাহত থাকলে পৌরসভার নাগরিকরা আরো বেশি সেবা ও সুবিধা পাবেন বলে জানান স্থানীয়রা।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর