• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

সখীপুরে কামারশালায় ছেলের সহযোগী ৭০ বছর বয়সী মা!

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১  

বৃদ্ধ শানদাসী (৭০)। হাঁপর দিচ্ছেন আর ছেলে জয়দেব হাতুড়ি পিটিয়ে তৈরি করছেন দা, বঁটি, কাচি, শাবল, কোদাল। বয়স ৭০ হলেও এখনো কোন ভাতা পায় না শানদাসী। ছেলের বউ মারা যাওয়ার পর থেকেই জয়দেবের কামারশালার সহযোগী হিসেবে আছেন তার মা। মা ও ছেলেকে নিয়ে জয়দেবের অভাব অনটনের সংসার। তাদের বাড়ি টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কালিয়ান গ্রামে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে বাড়ির আঙিনায় জয়দেবের ছোট্ট কামারশালা। স্ত্রীর মৃত্যুর পর থেকেই জয়দেবের কামারশালায় স্বেচ্ছায় হাঁপর দেয় তার মা শানদাসী। লেখাপড়ার কারণে বাবার কামারশালায় খুব একটা সময় দিতে পারে না ছেলে সুজিদ। 

কামারশালায় তৈরি জিনিসগুলো স্থানীয় বল্লা, গান্ধিনা, রতনগঞ্জ ও কালিয়ান গ্রামের সাপ্তাহিক হাটে বিক্রি করেন জয়দেব। এসব বিক্রি করে যা আয় হয় তাই দিয়েই চলে তিন সদস্যের একটি অস্বচ্ছল পরিবার।

জয়দেবের স্ত্রী একাদশীর মৃত্যুর পর বৃদ্ধ মা আর ছেলে ছাড়া কেউ নেই সংসারে। টাকার অভাবে কামারশালায় কোন শ্রমিক রাখতে পাচ্ছে না জয়দেব। এক মাস আগে জয়দেবের স্ত্রী একদশী মারা গেছে। অসুস্থ স্ত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে কয়েক লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। যে কারণে অর্থনৈতিকভাবে খুবই অসহায় হয়ে পড়েছে জয়দেব। এখন ছেলের অবস্থা দেখে ঘরে বসে থাকতে পারে না বৃদ্ধ মা।

বৃদ্ধ শানদাসী বলেন, স্বামী মারা গেছে ১০/১৫ বছর আগে, এখনো বিধবা ভাতা ও বয়স্ক ভাতা কোনটাই পাই না। মেম্বারের কাছে বলছি কয়েকবার কিন্তু এখনো হয় নাই। অভাব অনটনের সংসার তাই ছেলের সাথে কামার ঘরে হাঁপর দেই।

জয়দেব বলেন, আগে স্ত্রী হাঁপর দিতো, সে মারা যাওয়ার পর এখন আমার মা হাঁপর দেন। এ ছাড়া অন্য কোন কাম কাজ করতে পারি না বলে বাধ্য হয়েই লেগে আছি।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর