• মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৩ ১৪৩১

  • || ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

সারাদেশের ৮০% মানুষকে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ৪ জুন ২০২১  

 দেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে পর্যায়ক্রমে করোনার টিকার আওতায় আনার পরিকল্পনার কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে দেওয়া প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছরের মতো আগামী অর্থবছরেও করোনা মোকাবিলায় জরুরি চাহিদা মেটাতে পুনরায় ১০ হাজার কোটি টাকা থোক বরাদ্দ রাখা হবে। তিনি অবশ্য চলতি অর্থবছরের ১০ হাজার কোটি টাকা কোথায় কী খরচ হয়েছে, তা বর্ণনা করেননি। 

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো প্রায় দেড় বছর ধরে বাংলাদেশ মহামারির কবলে। এই সময় স্বাস্থ্য খাতের দুর্বলতা ও সীমাবদ্ধতা ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও অর্থনীতিবিদেরা স্বাস্থ্য খাতে মোট বরাদ্দ এবং যৌক্তিকভাবে খাতওয়ারি বরাদ্দ বাড়ানোর সুপারিশ করে আসছেন।

আগামী অর্থবছরে স্বাস্থ্য খাতে সরকার বরাদ্দ রেখেছে ৩২ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা। এর মধ্যে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগে ২৫ হাজার ৯১৪ কোটি টাকা এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগে ৬ হাজার ৮১৭ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ২৯ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বেড়েছে প্রায় ১২ শতাংশ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, এটা গতানুগতিক বাজেট। অন্য বছরের মতো এ বছরও কিছু টাকা বেড়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্য খাতে পরিবর্তন আনা বা সংস্কার করার জন্য যা প্রয়োজন, তা নেই এই বাজেটে।

টিকায় গুরুত্ব
অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ভাগ ভাগ করে দেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে করোনার টিকার আওতায় আনা হবে। প্রথম পর্যায়ে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষকে টিকা দেওয়া হবে। প্রতি মাসে ২৫ লাখ মানুষ টিকা পাবেন।

টিকার জন্য আর্থিক সহায়তা কোথা থেকে আসছে, কোথা থেকে আসতে পারে, তারও বর্ণনা আছে অর্থমন্ত্রীর বক্তৃতায়। তিনি বলেন, টিকা কেনার জন্য বিশ্বব্যাংকের ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং লজিস্টিক সহায়তার জন্য ১৪ দশমিক ৮৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যবহার করা হচ্ছে। টিকা কিনতে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক থেকে ৯৪০ মিলিয়ন ডলার পাওয়ার জন্য ঋণচুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এ ছাড়া ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক এবং এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক থেকে টিকা কেনার সহায়তা পাওয়া যেতে পারে। উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে টিকার ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা বাংলাদেশ পেতে যাচ্ছে।

আবারও থোক বরাদ্দ
করোনার ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় সরকার ২৩টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল। অর্থমন্ত্রী এসব প্রণোদনা প্যাকেজের জন্য কত বরাদ্দ ছিল, কতটি প্রতিষ্ঠানের কত মানুষ এসব প্যাকেজ থেকে উপকার পেয়েছে, তার হিসাব বাজেট বক্তৃতায় তুলে ধরেন।

তবে অনেকের আগ্রহ ছিল করোনা মোকাবিলার জরুরি চাহিদা মেটাতে থোক বরাদ্দের ১০ হাজার কোটি টাকার বিষয়ে। ওই টাকা খরচ হয়েছে কি না বা ওই টাকা থেকে কোন প্রতিষ্ঠানের কত মানুষ উপকার পেয়েছেন, তার কোনো হিসাব অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতা থেকে পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, ১০ হাজার কোটি টাকা মুলা ঝোলানোর মতো। থোক বরাদ্দের টাকা কোন উৎস থেকে আসবে, তা সুনির্দিষ্টভাবে কোথাও বলা নেই। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিজেদের বরাদ্দের অতিরিক্ত টাকার প্রয়োজন হলে তারা সরকারের কাছে করোনা মোকাবিলায় জরুরি চাহিদা মেটাতে টাকা চাইতে পারে। ইতিহাস বলে, বরাদ্দ দেওয়া টাকা তারা খরচ করতে পারে না, টাকা অব্যবহৃত থেকে যায়।
 

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর