• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর
সর্বশেষ:

৭৫ এর হত্যাকাণ্ডে জিয়ার সম্পৃক্ততা অস্বীকার করতে পারে না বিএনপি

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ১ সেপ্টেম্বর ২০২০  

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকারীরা স্বীকার করেছে যে এই বর্বরোচিত ঘটনায় জিয়া তাদের সম্পূর্ণ সমর্থন দিয়েছিলেন। তাই বিএনপি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জিয়াউর রহমানের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করতে পারে না।

প্রধানমন্ত্রী গতকাল সোমবার তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়াল আলোচনাসভায় এ কথা বলেন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই আলোচনাসভার আয়োজন করে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী কর্নেল ফারুক ও রশিদ বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছে, জিয়া ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের আগে ‘গো অ্যাহেড’ বলে তাদের সব ধরনের সহায়তা দিয়েছিলেন। তাই বিএনপি জাতির পিতার হত্যাকাণ্ডে জিয়ার সম্পৃক্ততাকে অস্বীকার করতে পারে না।” তিনি বলেন, বিএনপি এই ঘটনা থেকে তাদের দলীয় নেতাকে যতই আড়াল করার চেষ্টা করুক না কেন, সত্যকে কখনো দাবিয়ে রাখা যায় না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ছাড়া অন্য হত্যাকারীদের স্বীকারোক্তিমূলক বক্তব্যে এটা বেরিয়ে এসেছে যে জিয়াও তাদের সঙ্গে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জিয়াউর রহমান সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছেন উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর খন্দকার মোশতাক অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে জিয়াউর রহমানকে সেনাপ্রধান করে।’ একটি জাতিকে ধ্বংস করার জন্য যা প্রয়োজন, জিয়া তার সব কিছুই করে গেছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জিয়া মেধাবী ছাত্রদের হাতে অস্ত্র ও অর্থ তুলে দিয়ে ছাত্রসমাজকে ধ্বংস করেছেন। তিনি ছাত্রদের নিয়ে ‘হিলফুলফুজুলে’ প্রমোদ ভ্রমণে বের হন। বঙ্গবন্ধু এই জাহাজটিকে পবিত্র হজ পালনের জন্য কিনেছিলেন।” বিএনপির ছাত্রসংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের উদাহরণ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, স্বামীর পদাঙ্ক অনুসরণ করে খালেদা জিয়াও তাঁর নিজ স্বার্থে ছাত্রদের ব্যবহার করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমি ছাত্রদের হাতে কলম ও খাতা তুলে দিয়েছিলাম। কারণ আমি জানতাম যে একটি স্বাধীন দেশে ছাত্রদের সুনাগরিক হওয়া অত্যন্ত জরুরি।’ বাংলাদেশের বিগত সব আন্দোলনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গৌরবময় অধ্যায়ের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সংগঠনটি বিগত সব আন্দোলন-সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ওই সময়ে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী আমাদের মুখের ভাষা কেড়ে নিতে চেয়েছিল। ছাত্রলীগ ভাষা আন্দোলনে সম্পূর্ণ সমর্থন দিয়েছিল ও অংশ নিয়েছিল।’

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সাধারণ মানুষকে জয় বাংলা স্লোগানে উদ্বুদ্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি সাধারণ মানুষের কাছে ছয় দফা তুলে ধরার জন্য এবং আন্দোলনের পক্ষে জনমত গড়ে তুলতে ও প্রস্তাবিত স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা সম্পর্কে জনসাধারণের মতামত জানতে তাদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বঙ্গবন্ধুর আদর্শ মেনে চলার নির্দেশ দিয়ে বলেন, জাতির পিতা কখনোই নিজ স্বার্থের কথা চিন্তা করেননি। তিনি সব সময় দেশ ও দেশের জনগণের কল্যাণের কথা ভাবতেন।

তিনি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বঙ্গবন্ধু রচিত ‘আমার দেখা নয়া চীন’, ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোজনামচা’ পড়ার নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘যদি তোমরা ভালো নেতা হতে চাও, তবে তোমাদের অবশ্যই এই তিনটি বই পড়ে ভালো রাজনীতি সম্পর্কে জানতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগ নেতাদের বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে পাকিস্তানি গোয়েন্দা প্রতিবেদন পড়তে নির্দেশ দেন। এ থেকে তাঁরা বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত ইতিহাস ও তাঁর কাজ সম্পর্কে জানতে পারবেন।

তিনি মানুষের জন্য আত্মোৎসর্গকারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কভিড-১৯ রোগে যাঁরা মারা গেছেন, তাঁদের জানাজা ও দাফন করানোর কথা উল্লেখ করেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের প্রকাশনা ‘মাতৃভূমি’র মোড়ক উন্মোচন করেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ১৫ই আগস্ট হত্যাকাণ্ডে শহীদ বঙ্গবন্ধু ও অন্যদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সূত্র : বাসস।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর