দেশিয় মাছ সংরক্ষণে লাইভ জিন ব্যাংক
দৈনিক জামালপুর
প্রকাশিত: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১
হারিয়ে যাওয়া দেশি মাছ সংরক্ষণে প্রথমবারের মতো গড়ে তোলা হয়েছে লাইভ জিন ব্যাংক। দেশি ২৬০ প্রজাতির মাছ সংরক্ষণ ও উৎপাদন বাড়িয়ে বাণিজ্যিকভাবে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করাই এ উদ্যোগের লক্ষ্য। এরই মধ্যে ৮৫ দেশি প্রজাতির মাছ সংরক্ষণ করা হয়েছে লাইভ জিন ব্যাংকে। দেশে এখন বিলুপ্তপ্রায় ৬৪ প্রজাতির মাছ। এগুলো সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সারা দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে থাকা এসব মাছ সংরক্ষণ করে উৎপাদন বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বিএফআরআই) এ ব্যাংক গড়ে তোলা হয়। জানা যায়, লাইভ জিন ব্যাংকে দেশের বিলুপ্তপ্রায় ভাগনা, দেশি কই, নাপিত কই, গুলশা, খলশে, লাল খলশে, মাগুর, বোয়ালিপাবদা, সরপুঁটি, পুঁটি, শিং, মহাশোল, রুই, বুজুরি টেংরা, ভিটা টেংরা, বাটা, রিটা, মলা, পুইয়া গুতুম, পাহাড়ি গুতুম, ঠোঁটপুইয়া, শালবাইম, টাকি, ফলি, ঢেলা, চেলা, লম্বা চান্দা, রাঙাচান্দা, লাল চান্দা, পিয়ালি, বইরালি, দারকিনা, ইংলা, কেপ চেলা, রানি, কাকিলা, কাজলি, ভাচা, বাতাসি, আঙ্গুশ, কানপোনা, ঘাউরা, ভেদা, কাকিলা, বাসপাতাসহ মোট ৮৫ প্রজাতির মাছ সংরক্ষণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশি সব মাছ এ ব্যাংকে সংরক্ষণ করা হবে। এ লক্ষ্যে দেশব্যাপী মাছ সংরক্ষণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
বিএফআরআইয়ের গবেষকরা জানান, মাছের জার্মপ্লাজম সংরক্ষণের জন্য লাইভ জিন ব্যাংক একটি আধুনিক ধারণা। জিন ব্যাংক মূলত কোনো প্রাণী বা উদ্ভিদের জেনেটিক উপাদানের সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনা। কোনো প্রাণী বা উদ্ভিদ যখন হুমকির সম্মুখীন হয় তখন জিন ব্যাংকের প্রয়োজন পড়ে। প্রাকৃতিক উৎসে কোনো দেশি মাছ হারিয়ে গেলে সেসব মাছকে পুনরুদ্ধারের জন্য লাইভ জিন ব্যাংক থেকে ব্যবহার করা যাবে। সে ক্ষেত্রে লাইভ জিন ব্যাংক থেকে সংশ্লিষ্ট মাছকে হ্যাচারিতে কৃত্রিম উপায়ে পোনা উৎপাদনের মাধ্যমে প্রকৃতিতে ফিরিয়ে আনা হবে। মাত্রাতিরিক্ত মাছ আহরণ, পরিবেশগত বিপর্যয়, জলাশয় সংকোচন প্রভৃতি কারণে মৎস্যসম্পদ হুমকির সম্মুখীন হলে মাছের জিন ব্যাংক কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। দেশকে মাছে স্বয়ংসম্পূর্ণ রাখতে এবং সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণসম্পন্ন মাছের উৎপাদন বাড়াতে জিন ব্যাংক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে প্রত্যাশা মাছ গবেষকদের।
এ প্রসঙ্গে মৎস্য ও প্রাণী সম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘সরকার মৎস্য খাতের বিকাশে বিভিন্ন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বর্তমান সরকার আমলে দেশি মাছ সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারের জন্য বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটে গবেষণা কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। এ লক্ষ্যেই বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট দেশি মাছের লাইভ জিন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছে।’
মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ বলেন, ‘বিলুপ্তপ্রায় মাছ সংরক্ষণের জন্য বিএফআরআই গবেষণা করে ইতিমধ্যে ২৪ প্রজাতির মাছ পুনরুদ্ধার করেছে। এ ছাড়া দেশি মাছের প্রজনন ও চাষাবাদ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়েছে। বিলুপ্ত প্রজাতির মাছ সংরক্ষণের জন্য আমরা লাইভ জিন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছি। গবেষক, চাষি ও উদ্যোক্তা পর্যায়ে যেন সহজেই এ মাছগুলো পেতে পারেন সে জন্যই এ প্রচেষ্টা। আমাদের গবেষণার ফলে বিলুপ্তপ্রায় দেশি ছোট মাছের উৎপাদন বেড়েছে। বাজারে দেশি মাছের প্রাপ্যতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে এসব মাছ পাওয়া যাচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সব বিলুপ্ত প্রজাতির মাছকে খাবার টেবিলে ফিরিয়ে আনাই আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।’
মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়সূত্র জানান, ২০০৯ সালে পুকুরে চাষের মাধ্যমে দেশি ছোট মাছের মোট উৎপাদন ছিল ৬৭ হাজার ৩৪০ মেট্রিক টন। ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রায় ৩ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। গত ১২ বছরে দেশি ছোট মাছের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় শতকরা ২৫৮ ভাগ। দেশি ছোট মাছ সুরক্ষাসহ গবেষণায় গৌরবজনক ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ২০২০ সালে একুশে পদক অর্জন করে। এতে ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা গবেষণা কাজে আরও অনুপ্রাণিত হয়েছেন ও গবেষণার পরিধি সাম্প্রতিককালে আরও বিস্তৃত করা হয়েছে। মৎস্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা বলেন, প্রাচীনকাল থেকে দেশি প্রজাতির মাছ আমাদের সহজলভ্য পুষ্টির অন্যতম উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এর মধ্যে মলা, ঢেলা, পুঁটি, বাইম, টেংরা, খলশে, পাবদা, শিং, মাগুর, কেচকি, চান্দা অন্যতম। এসব মাছে প্রচুর ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, লোহা ও আয়োডিনের মতো প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থ রয়েছে। এসব উপাদান শরীরের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী এবং রক্তশূন্যতা, গলগ-, অন্ধত্ব প্রভৃতি রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। কিন্তু জনসংখ্যা বৃদ্ধি, জলাশয় সংকোচন, অতি আহরণ ইত্যাদি কারণে মাছের প্রজনন ও বিচরণ ক্ষেত্র বিনষ্ট হওয়ায় প্রাকৃতিক জলাশয়ে ছোট মাছের প্রাপ্যতা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে। জানা যায়, দেশের মৎস্য উৎপাদনে দেশি ছোট মাছের অবদান প্রায় শতকরা ৩৫ ভাগ। মাছের চাষাবাদ বৃদ্ধি পাওয়ায় বর্তমানে হ্যাচারিতে দেশি মাছের পোনা ব্যাপকভাবে উৎপাদিত হচ্ছে। বর্তমানে মাঠপর্যায়ে পাবদা, গুলশা, শিং, টেংরা, মাগুর ও কই মাছ ব্যাপকভাবে চাষ হচ্ছে। এখন বাটা মাছের চাষও বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশি মাছের চাষাবাদ বৃদ্ধি পাওয়ায় লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তারা জানান, বিলুপ্তপ্রায় ও দেশি মাছের ওপর গবেষণা পরিচালনা করে ইতিমধ্যে ২৩ প্রজাতির মাছের প্রজনন ও চাষাবাদ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়েছে। এর মধ্যে পাবদা, গুলশা, টেংরা, গুজি আইড়, চিতল, ফলি, মহাশোল, বইরালি, বালাচাটা, গুতুম, কুঁচিয়া, ভাগনা, খলশে, গজার ইত্যাদি মাছ রয়েছে। এসব প্রযুক্তি মাঠপর্যায়ে সম্প্রসারিত হওয়ায় বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির মাছের প্রাপ্যতা বৃদ্ধি পেয়েছে। মাছ এখন সাধারণ ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে এসেছে। তা ছাড়া নদ-নদী, হাওর ও বিলে দেশি মাছের পোনা অবমুক্তকরণ ও মৎস্য অধিদফতরের মাধ্যমে অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠা করে বিলুপ্তপ্রায় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিসহ মাছের জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আরও জানান, আগে শুধু ময়মনসিংহস্থ স্বাদুপানি গবেষণা কেন্দ্র থেকে বিলুপ্তপ্রায় মাছ সংরক্ষণ ও উন্নয়নে গবেষণা পরিচালনা করা হতো। বর্তমানে দেশি মাছ সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারের জন্য ময়মনসিংহ স্বাদুপানি কেন্দ্র ছাড়াও বগুড়ার সান্তাহার, নীলফামারীর সৈয়দপুর ও যশোর উপকেন্দ্রে বিলুপ্তপ্রায় মাছ সংরক্ষণে গবেষণা পরিচালনা করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের নতুন নতুন সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। বিলুপ্তপ্রায় দেশি মাছের প্রাকৃতিক উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার হাওর-বাঁওড়, বিল ও নদ-নদীতে অধিকসংখ্যক অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠা ও বিলুপ্তপ্রায় মাছের পোনা অবমুক্ত করছে। দেশি প্রজাতির মাছ সংরক্ষণে এ লাইভ জিন ব্যাংক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
- অনলাইন জুয়ার সাইট বন্ধের দাবি নতুনধারার
- নদীর ঘাটে অসুস্থতা নিয়ে কাতরাচ্ছিল স্কুল ছাত্রী
- লন্ডনে বিশ্বনাথ প্রবাসী এডুকেশন ট্রাস্টের প্যানেলের জনসভা
- বিডি চাইল্ড ট্যালেন্ট তৃষ্ণাত্ব মানুষের পাশে দাড়ালেন
- এনআইওতে চোখের চিকিৎসা নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
- খাদ্য নিরাপত্তায় ২০ লাখ টন গম কিনছে সরকার
- বস্তিবাসীর জন্য ৯ কুলিং জোন করবে ডিএনসিসি
- বে টার্মিনাল প্রকল্পে গতি
- ‘মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’
- সন্ত্রাসবাদে ঢাকার সাফল্যের প্রশংসা মার্কিন দপ্তরের
- খুলনায় লবণাক্ত জমিতে বছরজুড়েই ফলছে ফসল
- আরও পাঁচ হাসপাতালে পরমাণু চিকিৎসাসেবা
- র্যাপিড পাসে পরিশোধ হবে সব গণপরিবহনের ভাড়া
- যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে আমরা পাপমুক্ত হয়েছি
- রাজবাড়ী-ঢাকা রুটে ভাঙ্গা ও চন্দনা কমিউটার ট্রেনের উদ্বোধন
- রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার নিষ্পত্তিতে আশাবাদী বাংলাদেশ-গাম্বিয়া
- ট্যুরিজম বোর্ডের সঙ্গে কাজ করবে ডিএনসিসি
- উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপির স্ত্রী-সন্তানদের প্রার্থিতা মানা
- আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভা আজ
- ৪০ ফিলিস্তিনি নারীকে সুখবর দিল বাংলাদেশ
- সন্ত্রাস মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রশংসা নেসার প্রতিনিধিদলের
- থার্ড টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং পাচ্ছে কারা
- ১০ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে চোখ দেখালেন প্রধানমন্ত্রী
- যে কারণে মন্ত্রী-এমপিদের কঠোর হুঁশিয়ারি দিলেন প্রধানমন্ত্রী
- আমাদের কাছে সব প্রার্থী সমান: ইসি রাশেদা
- তামিমের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে সহজে জয় পেল টিম টাইগার্স
- বকশিবাজারে বাসের ধাক্কায় নিহত ১
- রাজধানীতে ভবন থেকে পড়ে যুবকের মৃত্যু
- উত্তরায় রিকশাচালকদের ছাতা-পানির বোতল দিলেন মেয়র আতিক
- পথচারীদের পানিশূন্যতা রোধে রক্তের সন্ধানের উদ্যোগ
- চাঁদপুরে প্রচন্ড গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন
- ফেনী সার্কিট হাউজে উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন
- আজ রমজানের শেষ জুমা, জুমাতুল বিদা
- ইসলামপুরে অসচ্ছল ৫০ হাজার ৬৮২ পরিবার পাবে ভিজিএফ চাল
- ডা. জাকির হোসেন: উচ্চ রক্তচাপ রোগের একজন নিরলস চিকিৎসা কর্মবীর
- অতিরিক্ত সচিব পদে ১২৭ জনকে পদোন্নতি
- কাঁচা আম ১৬ ধরনের রোগ থেকে বাঁচায়
- যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব বাঁচত
- কুরআনের আলো ছড়াতে হিফযুল কুরআন প্রতিযোগিতা ভূমিকা রাখবে
- জামালপুরে অসহায় কামালের পাশে যুবসমাজ
- টিভি শো’র দুই বিজয়ী জামালপুরের
- পরিবর্তন হলো ২৪৭ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম
- ন্যাশনাল রোমিং এর সুবিধায় রবি নেটওয়ার্কেও চলবে টেলিটক সিম
- নন্দীগ্রামে অধ্যক্ষের পর গভর্নিং বডির পদ হারালেন সবুজ
- ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম : শেখ হাসিনা
- পান্তা-ইলিশ যেভাবে এলো বাংলা নববর্ষে
- জামালপুরে র্যাবের হাতে টিকিট কালোবাজারি আটক
- বান্দরবানে পর্যটক ভ্রমণে দেয়া নির্দেশনা চারটি স্থগিত
- অপরিচিতদের সঙ্গেও চ্যাটিংয়ে সুযোগ দেবে হোয়াটসঅ্যাপ
- এপ্রিলেই প্রকাশ হচ্ছে ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের ফল!