• বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ১ ১৪৩১

  • || ০৭ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর
সর্বশেষ:

পাহাড়ে ধান চাষে ধারনা পাল্টাতে পারে ‘সমলয়’ পদ্ধতি

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ২১ ডিসেম্বর ২০২৩  

পাহাড়ে ধান চাষের ধারনা পাল্টে দেবে ‘সমলয়’ পদ্ধতিতে ধান চাষ। সমলয় পদ্ধতির ধান চাষে পাহাড়ে কৃষিকাজে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কৃষিকে আধুনিক ও লাভজনক করতে টেকসই যান্ত্রিকীকরণের উদ্যোগের অংশ হিসেবে ‘সমলয়’ পদ্ধতি। কৃষকরা মাঠে একসঙ্গে একই জাতের ধান, একই সময়ে যন্ত্রের মাধ্যমে রোপণ করতে পারবেন। ধান চাষে এ রকমের একটা কার্যকরী উপায় বের করেছেন কৃষি বিজ্ঞানীরা। পদ্ধতিটির নাম দিয়েছেন ‘সমলয়’। মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গার সীমান্তঘেঁষা তবলছড়ির সিংহপাড়ায় ট্রেতে বীজতলা তৈরি কর্মসূচির উদ্বোধন শেষে সুবিধাভোগী কৃষকদের সাথে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডেজী চক্রবর্তী। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় মাটিরাঙ্গা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হাসিনা বেগম, মাটিরাঙ্গা উপজেলা কৃষি অফিসার মো. সবুজ আলী, কৃষক মো. হায়দার আলী, মো. আমির হোসেন ও মো. জসিম উদ্দিন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। মাটিরাঙ্গা উপজেলা কৃষি অফিসার মো. সবুজ আলী বলেন, ৫০ একর জমিতে বোরো ধান চাষের জন্য ট্রে পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি, সার, বীজ, কীটনাশকসহ ফসল কাটা পর্যন্ত প্রয়োজনীয় সকল খরচ বহন করবে সরকার। একজন কৃষক শুধুমাত্র জমি দিয়ে সহযোগিতা করছে। এ পদ্ধতি অবলম্বনে কৃষকেরা লাভবান হবেন বলে জানান তিনি। এতে ধানের উৎপাদন খরচ কমানোসহ শ্রমিক সংকট নিরসন হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় কৃষকেরা। কৃষকরা এ বছর সমলয় চাষ পদ্ধতি শিখে আগামীতে নিজেরা এ পদ্ধতিতে ধান চাষ করবে এবং অন্য কৃষকদের উৎসাহিত করবে। প্রনোদনা কর্মসূচির আওতায় মাটিরাঙ্গার তবলছড়ির সিংহপাড়ায় ৪ হাজার ৫০০ ট্রে-তে বোরো ধানের বীজ বপন করা হয়েছে। সমলয় পদ্ধতিতে ৫০ একর জমিতে আলতাফ বিএল ৭০ হাইব্রিড জাতের বোরো ধান চাষ কবরে ৭৩ কৃষক। এ পদ্ধতিতে উৎপাদিত চারা পরবর্তী ২৫দিনের মধ্যে রাইস ট্রান্সপ্লান্টের মাধ্যমে মাঠে রোপণ করা হবে। চারা রোপণের পাঁচ মাসের মাথায় ধান কাটা হবে। সিংহপাড়ার কৃষক মো. হায়দার আলী বলেন, প্রথমবারের মতো সমলয় পদ্ধতিতে ধানের বীজতলা করেছি। রাসায়নিক সার ব্যবহার হচ্ছে না। কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতায় ট্রে-তে বীজ বপন ও চারা উৎপাদন হচ্ছে। তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী ধানের চারা রোপণের ব্যাপক প্রস্তুতি আছে আমাদের। কৃষক মো. আমির হোসেন বলেন, এ পদ্ধতি ব্যবহার করলে শ্রমিকের মজুরি কম লাগবে। এতে ধানের উৎপাদন খরচ কমে যাবে। এ বছর ফলন ভালো হলে ভবিষ্যতে এ পদ্ধতির চাষাবাদ বাড়বে। জানা যায়, রাইস ট্রান্সপ্লান্টার মেশিনে এক ঘণ্টায় এক একর জমিতে ধান রোপন করা যায়। ১০ থেকে ১২ জন শ্রমিক সারাদিনে এই পরিমাণ চারা রোপন করতে পারে। এ যন্ত্র কিনতে অর্ধেক থেকে ৭০ শতাংশ টাকা ভর্তুকি দেবে সরকার। আশা করা হচ্ছে ধান চাষ ও কাটার খরচ নেমে আসবে অর্ধেকে। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ বলেন, ট্রে পদ্ধতিতে চারা টেনে তুলতে হয় না, তাই চারার শিকড় ছিঁড়ে না। ফলে শিকড় দ্রুত মাটি থেকে খাদ্য গ্রহণ করে এবং গাছ দ্রুত বেড়ে ওঠে। ট্রে-তে চারা উৎপাদনে জমির অপচয় কম হয়। রাইস ট্রান্সপ্লান্টার দিয়ে চারা একই গভীরতায় সমানভাবে লাগানো যায়। কৃষক ফসল একত্রে মাঠ থেকে ঘরে তুলতে পারেন।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর