• মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৩১ ১৪৩১

  • || ০৫ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

উখিয়ার শ্রমবাজার রোহিঙ্গাদের দখলে

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩  

রোহিঙ্গাদের চাপে হুমকির মুখে পড়ছে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকা ও শ্রমবাজার। রোহিঙ্গারা ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে স্বল্পমূল্যে শ্রম দেওয়ায় কর্মহীন হয়ে পড়েছেন স্থানীয় অনেকে।
মঙ্গলবার উখিয়ার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রিকশা, অটোরিকশা, মাহিন্দ্র গাড়ির চালক ও খাবার হোটেল, আবাসিক হোটেল, কৃষিকাজ, গ্রামীণ অবকাঠামোগত উন্নয়নের কাজ, জেলেদের ফিশিং বোট, ব্যবসা বাণিজ্য দখলে নিয়েছে রোহিঙ্গারা।

আলী মিয়া নামে কুতুপালং এলাকার এক দিনমজুর বলেন, আগের মতো মানুষের বাসায় কাজ পাই না। সবাই রোহিঙ্গাদের দিয়ে কাজ সেরে নিচ্ছে। রোহিঙ্গাদের মজুরি অপেক্ষাকৃত কম হওয়ায় তাদের কাজে নেয়া হয় বেশি।

তিনি আরো বলেন, একদিকে রোহিঙ্গারা বিভিন্ন এনজিও থেকে ত্রাণসামগ্রী পায়। উপরি হিসেবে কাজ করেও টাকা আয় করছে। কিন্তু স্থানীয়রা না পায় কাজ, না পায় ত্রাণ। এ অবস্থা চলতে থাকলে রোহিঙ্গাদের কাছে আমরা জিম্মি হয়ে পড়বো।

জানা গেছে, বেশিরভাগ রোহিঙ্গা শিশু, কিশোর ও যুবকরা ক্যাম্পের বাইরে এসে চায়ের দোকানে, সমুদ্রে মাছ ধরা, কৃষিকাজে শ্রমিক হিসেবে ও ওয়ার্কশপে কাজ করছে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, পাহাড়ে, নদীতে, সাগরে, কর্মক্ষেত্রে শুধু রোহিঙ্গা আর রোহিঙ্গা। শ্রম বাজারসহ চারদিকে রোহিঙ্গাদের বিচরণ। অনেকেই অটোরিকশা চালাচ্ছে। তারা অর্ধেক ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করায় বেকার হচ্ছে স্থানীয়রা।

পালংখালী অধিকার বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক রবিউল হোসাইন বলেন, রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয়ভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের বিভিন্ন এনজিওতে চাকরি দেওয়ার ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন মহলের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও তারা তা উপেক্ষা করছে। এসব এনজিওতে কম বেতনে রোহিঙ্গাদের নিয়োগ ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে বহিরাগত লোকজনকে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।

উখিয়ার হাতিমোরা এলাকার মো. করিম বলেন, কম বেতন পেলেও রোহিঙ্গারা কাজ করতে চলে যায়। এ কারণে আমরা কাজ পাচ্ছি না।

পাতার বাড়ি এলাকার শিমুল বড়ুয়া বলেন, যেখানে একজন শ্রমিকের দিনে মজুরি ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা সেখানে রোহিঙ্গারা ৩০০ টাকায় কাজ করছে।

প্রতিদিন একাধিক নারী-পুরুষকে চেকপোস্টসহ উখিয়ার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আটক করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে রোহিঙ্গাদের অজুহাত হচ্ছে। তাদের হাতে টাকা দরকার, তাই কাজ করতে বের হচ্ছেন। সম্প্রতি পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন পৃথক অভিযান পরিচালনা করে ৬৩ জন রোহিঙ্গাকে গ্রেফতার করেছে।

উখিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, চোরাইপথে ক্যাম্প থেকে বের হয়ে বিভিন্ন অপরাধ করছে রোহিঙ্গারা। অপ্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় টমটম ও সিএনজি চালানোর মাধ্যমে দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছে। এসব অপ্রাপ্ত বয়স্ক চালকদেরও আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর