• বুধবার ১৫ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৩১ ১৪৩১

  • || ০৬ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

আসছে বড় সাইজের ইলিশ

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩  

ভাদ্র মাস শেষের দিকে। ইলিশের ভর মৌসুম চলছে। অক্টোবর পর্যন্ত থাকবে এই মৌসুম। দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলো থেকে চাঁদপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে আসছে বড় বড় সাইজের ইলিশ। একই সঙ্গে আড়তগুলোতে বেড়েছে ক্রেতার সংখ্যা। তবে জন্মাষ্টমীর কারণে ইলিশের দাম একটু বেমি। কারণ বন্ধের দিন হওয়ার কারণে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে গাড়ি নিয়ে ইলিশ কিনতে এসেছেন শত শত মানুষ। বাজার তদাররিক না থাকায় ব্যবসায়ীরা তাদের ইচ্ছেমত ইলিশের দাম নির্ধারণ করছেন।
বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চাঁদপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের সামনে রেল স্টেশনের পাশে দেখা গেলো অনেক গাড়ি পার্কিং করে রাখা হয়েছে। নারী-পুরুষ অনেকেই শুধুমাত্র চাঁদপুরের ইলিশ নিজে দেখে পছন্দ করে কেনার জন্য এসেছেন।

ঢাকা থেকে গাড়ি নিয়ে ইলিশ কিনতে এসেছেন মো. সোহাগ। তিনি বলেন, ৬শ’ থেকে ৮শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ কিনেছি। দাম নিয়েছে প্রতি কেজি ৭৮০ টাকা। পেকিং খরচসহ ৮শ’ টাকা পড়েছে প্রতি কেজি। তবে আগের চাইতে দাম বেশি।

একই সঙ্গে ইলিশ কিনতে আসা আবদুল মান্নান বলেন, ঢাকায় থেকে শুনেছি চাঁদপুরে ইলিশের দাম কম। কিন্তু এখানে এসে দেখি ঢাকার চাইতে বেশি দাম। তারপরেও কিনেছি। খেয়ে বুঝতে পারব, চাঁদপুরের নাকি সাগরের ইলিশ।

লঞ্চে করে ঢাকা থেকে চাঁদপুর ইলিশ কিনতে এবং ঘুরতে এসেছেন বেশ কয়েকজন যুবক। এর মধ্যে শিহাব হায়দার রাকিব নামে একজন জানান, ইলিশ নিয়ে চাঁদপুর ব্র্যান্ডিং। ইলিশের কারণে চাঁদপুর দেশ ও বিদেশে পরিচিত। তাই ইলিশের আসল স্বাদ নেয়ার জন্য এসেছি। দাম ভালো হলে ইলিশ কেনা হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই মাছঘাটে প্রায় ৫০টিরও অধিক মৎস্য আড়ৎ আছে। এছাড়া ইলিশের ভরা মৌসুম হওয়ার কারণে খুচরা বিক্রেতা আছে আরো কমপক্ষে ৫০ জন। অনলাইনেও অনেকে ইলিশ বিক্রি করেন। তবে বেশ কয়েকজন খুচরা ইলিশ বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে দামের বেশ তারতম্য পাওয়া গেছে। একই ইলিশ প্রতি কেজি ২০০-৩০০ টাকা কম-বেশি দরে বিক্রি করছেন। জেলা সদরের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের বাজার তদারকি অভিযান থাকলেও মাছঘাটে কোনো অভিযান নেই। এখানকার ব্যবসায়ীরাই তাদের মাছের দাম নির্ধারণ করেন।

মাছঘাটের পাইকারী ও খুচরা ইলিশ বিক্রেতা দেলোয়ার হোসেন বলেন, গত এক সপ্তাহে ইলিশের দাম কিছুটা কমছিল। আজকে জন্মাষ্টমীর বন্ধ থাকার কারণে খুচরা ইলিশ ক্রেতার সংখ্যা অনেক বেশি। ইলিশও আজকে আমদানি কিছুটা কম হয়েছে। যার কারণে প্রতিমণ ইলিশ ৫-৭হাজার টাকা দাম বেড়েছে।

তিনি আরো বলেন, গতকাল এক কেজি ওজনের ইলিশ ছিল ১৩০০ থেকে ১৩৫০ টাকা। আজকে ১৪০০ থেকে সাড়ে ১৪শ’ টাকা বিক্রি হচ্ছে। দুই কেজি ওজনের ইলিশ প্রতিকেজি ১৭০০ থেকে ১৮০০ টাকা।

চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী শবে বরাত বলেন, আমাদের চাঁদপুরে সাগরের ইলিশ আসে না। হাতিয়া, রামগতি ও আলেকজেন্ডার থেকে ইলিশ আসে। সাইজ অনুসারে দাম কম বেশি হয়। প্রতিদিনই ইলিশের দাম উঠানামা করে। গত একসপ্তাহে গড়ে প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০ মণ ইলিশ আমদানি হচ্ছে।

অতিরিক্ত মূল্যে ইলিশ বিক্রি না করা, ইলিশের ক্রয় ভাউচার সংগ্রহ রাখা ইত্যাদি বিষয়ে সতর্ক করে দিয়ে গত শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে চাঁদপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নুর হোসেন। কিন্তু এরপর বাজার তদারকি কোনো অভিযান পরিচালনা করা হয়নি। এই বিষয়ে নুর হোসেন জানান, ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত তদারকি অভিযান হয়নি। তবে শিগগিরই করা হবে।

চাঁদপুর সদরের জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. তানজিমুল ইসলাম জানান, আগামী অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশের ভরা মৌসুম থাকবে। তবে তখন মা ইলিশ রক্ষার জন্য নিষেধাজ্ঞাও আসবে। আর ইলিশের দাম নিয়ন্ত্রণ করার কাজ আমাদের না।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর