• শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৩ ১৪৩১

  • || ০৮ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

আলোক ফাঁদ পেতে ক্ষতিকর পোকা দমন

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ৭ অক্টোবর ২০২৩  

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় ধান খেতে কীটনাশক ব্যবহার না করে আলোক ফাঁদ পেতে ক্ষতিকর পোকা নির্ণয় ও দমন করা হচ্ছে। ধান খেতের সুরক্ষায় দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে এ প্রযুক্তির ব্যবহার। 
আলোক ফাঁদ প্রকৃত অর্থে ফসলে পোকার উপস্থিতি যাচাই। কিন্তু এটা দিয়ে শুধু পোকার উপস্থিতি যাচাই না করে ক্ষেতের পাশে নিয়মিতভাবে পেতে রাখলে অনেক পোকা আলোতে আকৃষ্ট হয়ে মারা যায়। এটি পোকা নিয়ন্ত্রণে একটি যান্ত্রিক পদ্ধতি বিশেষ। আলোক ফাঁদ এ দেশে বহুকাল আগে থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

মাটিরাঙ্গা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সহায়তায় উপজেলার বিভিন্ন স্থানে কৃষকেরা আলোক ফাঁদ স্থাপন করেছে। এতে ধানখেতে ক্ষতিকর কী ধরনের পোকা রয়েছে তা শনাক্ত করার পাশাপাশি ফসলের জমিতে ক্ষতিকর পোকা মাকড়ের উপস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও তা দমন করতে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। এরই ধ্যে এই পদ্ধতি উপজেলার কৃষকদের মধ্যে বেশ ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে।

মাটিরাঙ্গার চড়পাড়ার আমনের খেতে গিয়ে দেখা যায়, ধানের জমির পাশে তিনটি খুঁটি দিয়ে একটি বৈদ্যুতিক বাতি ঝুলানো হয়েছে। বাতির নিচে একটি বড় পাত্রে ডিটারজেন্ট মিশ্রিত পানি রাখা হয়েছে। বাতি জ্বালানোর সঙ্গে সঙ্গে ফসলের জমির বিভিন্ন প্রজাতির পোকা এসে নিচে রাখা পাত্রের পানিতে পড়ে হাবডুবু খেয়ে মরছে। এভাবেই আলোক ফাঁদ ব্যবহার করে ফসলের জমিতে ক্ষতিকর পোকা এবং উপকারী পোকার উপস্থিতি নির্ণয় করা হয়। একই সাথে দীর্ঘ সময় ধরে ফাঁদটি স্থাপন করে রাখলে ক্ষতিকর পোকা দমন করা সম্ভব। 

এদিকে উজ্জ্বল আলোতে আকৃষ্ট হয়ে ধানের মাজরা পোকার মথ, বাদামি গাছফড়িং, শিষকাটা লেদা পোকা, ধানের পাতা মোড়ানো পোকা, সবুজ পাতাফড়িং, চুঙ্গি পোকা, গলমাছি, গান্ধিপোকা, সাদা ফড়িং, পাটের বিছাপোকা, উড়চুঙ্গা, কালো শোষক পোকা, ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকার মথ, শুঁয়া পোকাসহ বিভিন্ন ফসলের অনিষ্টকারী পোকা এসে আলোক ফাঁদে পড়ে মারা যায়। তাছাড়া যে সব অঞ্চলে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই সেসব স্থানে চার্জার ও সৌলারের বাতি দিয়ে কাজটি অনায়াসে করা হয়।

মাটিরাঙ্গা উপজেলা কৃষি উপ-সহকারী কর্মকর্তা দেবাশীষ চাকমা বলেন, পোকার উপস্থিতি নির্ণয় করতে ধান খেতে আলোক ফাঁদ ব্যবহার করা হয়। এতে কৃষকের কোন খরছ হয় না। এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষক সহযে তার জমিনের বিভিন্ন পোকার তথ্য সম্পর্কে অবগত হবার পাশাপাশি এটি দীর্ঘ সময়ে স্থাপন করে সহযে ক্ষতিকর পোকা দমন করা যায়। 

উপকারী ও ক্ষতিকর পোকার উপস্থিতি নির্ণয় এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণে আলোক ফাঁদ স্থাপন করা হয় জানিয়ে মাটিরাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সবুজ আলী বলেন, উপজেলার ২২টির প্রতিটি ব্লকে কমপক্ষে ৫টি আলোক ফাঁদ স্থাপনের লক্ষ্যে নিয়মিত নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। কৃষক এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে জমিতে ক্ষতিকর পোকা মাকড়ের উপস্থিতি  সহযে অবগত হয়ে এটি দীর্ঘ সময়ে স্থাপন করে এসব দমন করা যায়। এতে করে ফসলের কোনো প্রকার ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে না। বরং ফসল উৎপাদন খরচ কমে যাবে ও ফসল হবে অনেকটা বিষমুক্ত। 

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর