• শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৩ ১৪৩১

  • || ০৮ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

তিন মিনিটের ঘূর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড পুরো গ্রাম

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ৭ অক্টোবর ২০২৩  

ফরিদপুরে ঘূর্ণিঝড়ে সালথা উপজেলার একটি গ্রামের অন্তত ১৮টি বসতঘর বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে এক বিধবা নারীর বসতঘরের ওপর বিশাল গাছ পড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অসংখ্য গাছপালা ভেঙে ও উপড়ে গেছে। অনেকস্থানে সড়কের উপড়ে গাছ পড়ে চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে অন্ধকার হয়ে যায় গোটা একটি গ্রাম। 
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার আগে উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের সােনাতুদী গ্রামে এ ঝড় হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা কাজী দেলােয়ার হােসেন জানান, টানা বৃষ্টির মধ্যে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার আগে সােনাতুদী গ্রামে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। প্রচণ্ড বেগে মাত্র তিন মিনিটের ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে গ্রামের লিটু মুন্সী, ফারুক মুন্সী, মুরাদ মুন্সী, দবির মুন্সী, কাইউম মুন্সী, কামাল ঠাকুর, জামাল ঠাকুর, জমিলা বেগম, নিরু বেগম, ছানা কাজী, আতি কাজী ও হাফেজ মাে. সগির মুন্সির অন্তত ১৮টি বসতঘর বিধস্ত হয়। এছাড়া গাছপালা ভেঙে ব্যাপক ক্ষতি হয়। ক্ষতিগ্রস্তরা প্রায় সবাই কৃষক।

ঝড়ের সময় ওই গ্রামের বিধবা লিপি বেগমের একমাত্র সম্বল সেমিপাকা একটি বসতঘরের ওপর বিশাল একটি গাছ পড়ে লন্ডভন্ড হয়ে যায়। এ সময় লিপি বেগম বাথরুমে আশ্রয় নেন প্রাণে বাঁচতে। অসংখ্য গাছপালা ভেঙে সড়কের ওপর চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। বিদ্যুতের তার ছিড়ে গ্রামে বিদ্যুৎ সঞ্চালন বন্ধ হয়ে গেছে।

বল্লভদী ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুর রহমান শাহিন ঘূর্ণিঝড়ে গ্রামবাসীর ক্ষয়ক্ষতির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে উপজেলা পরিষদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে একইদিন বৃহস্পতিবার বিকেল সোয়া তিনটার দিকে আলফাডাঙ্গা উপজেলার সদর ইউনিয়নের বিদ্যাধর, ব্রাহ্মণ-জাটিগ্রাম, বেজিডাঙ্গা ও টগরবন্দ ইউনিয়নের মালা, কৃষ্ণপুর-টগরবান, তিতুরকান্দি গ্রামে ঘুর্ণিঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

আলফাডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহিদুল হাসান জাহিদ বলেন, সারাদিনের প্রবল বর্ষণের পর বিকেলের দিকে মাত্র এক মিনিটেরও কম সময় এই ঘূর্ণিঝড় স্থায়ী হয়। এতে দুই ইউনিয়নের ৬ টি গ্রামের প্রায় শতাধিক কাঁচা-পাকা বাড়িঘর ও কয়েকশো গাছপালা উপড়ে যায়। বিস্তীর্ণ জমির ফসল বিনষ্ট হয়েছে। অনেকেই ঘরবাড়ি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান নেন। ঘটনাস্থলে পৌছে তাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে কাজ শুরু করেছি।  

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আলফাডাঙ্গা সাব জোনাল অফিসের এজিএম ফাহিম হাসান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের ফলে সেখানে কয়েকটি গ্রামে বিদ্যুৎ সঞ্চালন বন্ধ রয়েছে। বিদ্যুতের তিনটি খুটি ভেঙে গেছে। অনেকগুলো আঁকা বাকা হয়ে পড়েছে। আজকালের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া সম্ভব হবে।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ঘটনাস্থলে পৌছে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করতে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের সর্বাত্মক সাহায্য সহযোগিতা করা হবে। 

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর